কয়েক বছর আগেও মশাবাহিত রোগের প্রকোপে নাজেহাল হয়েছিল বিধাননগর ও পার্শ্ববর্তী এলাকা। এ বারও সেখানে মশাবাহিত বিভিন্ন রোগের লক্ষণ নিয়ে অনেকে অসুস্থ হয়েছেন। যদিও সরকারি ভাবে তার সত্যতা মেলেনি। কিন্তু রবিবার জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বিধাননগরের এক শিশুর মৃত্যুকে ঘিরে ফের সেই প্রকোপের ইঙ্গিত মিলেছে।
নড়েচড়ে বসেছে বিধাননগর পুর-প্রশাসন। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল ও রক্তপরীক্ষার সংস্থার কাছে তথ্য তলব করার চিন্তাভাবনাও শুরু হয়েছে। রবিবার সকাল সাড়ে ন’টায় বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ৯ বছরের শিশু বিবস্বান গুহঠাকুরতার মৃত্যু হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, সল্টলেকের বিডি ব্লকের বাসিন্দা সৌরভ গুহঠাকুরতার ছেলে বিবস্বানকে শনিবার সকালে ভর্তি করা হয়েছিল। অবস্থা সঙ্কটজনক থাকায় তাকে ভেন্টিলেশনে রাখতে হয়। এ দিন সকালে সে মারা যায়।
সূত্রের খবর, গত সোমবার শিশুটি জ্বরে আক্রান্ত হয়। জ্বর না কমায় চিকিৎসকের পরামর্শে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়ে থাকায় শনিবার সকালে বাইপাসের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল শিশুটিকে। বিবস্বানের পরিবারের তরফে জানানো হয়, ক’দিন আগে স্কুল থেকেই জ্বর নিয়ে ফিরেছিল সে। সল্টলেকের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত শিশুটি।
বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘দুঃখজনক ঘটনা। পরিবারকে সমবেদনা জানাচ্ছি। হাসপাতালকে অনুরোধ করব, মশাবাহিত রোগের লক্ষণ নিয়ে কোনও রোগী ভর্তি হলে কিংবা মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে দ্রুত সংশ্লিষ্ট পুর-প্রশাসনকে জানাতে।’’ তিনি জানান, বিধাননগরের ৪১টি ওয়ার্ডে তথ্য সংগ্রহ থেকে শুরু করে সচেতনতার প্রচার, মশার তেল স্প্রে করা, জঙ্গল সাফ করার কাজ চলছে।
কয়েক বছর আগেও মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়েছিল সল্টলেক ও আশেপাশে। ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল বেশি। কয়েক বছরের মধ্যে এ বার ফের মশাবাহিত রোগের সংক্রমণের খবর এসেছে পুর নিগমের কাছে। এমনটাই সূত্রের দাবি। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয়কুমার রায় বলেন, ‘‘পুর প্রশাসনের কাছে হাসপাতালের তরফে কোনও খবর আসেনি। কী কারণে শিশুটির মৃত্যু হল, খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’ তিনি জানান, বিডি ব্লকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পদক্ষেপ করবে পুর প্রশাসন। অস্থায়ী ভাবে মেডিক্যাল ক্যাম্প চালু করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে রাজ্যে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গেও আলোচনা করা হবে।
তিনদিনের জ্বরে ভুগে এ দিনই মৃত্যু হয়েছে ভারতী বিদ্যাভবনের প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রীর। পূর্বিতা হাজরা নামে ওই পড়ুয়া দমদমের আর এন গুহ রোডের বাসিন্দা। কয়েক দিন ধরে বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিল সে। দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) গোপা পান্ডে বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ কিছু জানাননি আমাদের। সবিস্তার তথ্য পেলেই যোগাযোগ করব।’’