পুরনো কিছুকে প্রাণপণে আঁকড়ে ধরতে পারে কল্লোলিনী কলকাতা।
উত্তর কলকাতার সিমলা ব্যায়াম সমিতি তারই অন্যতম প্রমাণ। ৮৯ বছরে পা দেওয়া ওই পুজোয় এখনও অম্লান ফেলে আসা দিনের রীতিই। অনেকটা একই ছবি কামডহরি নারকেলবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির পুজোতেও। শারদোৎসবে সেখানে বাউল গান, কবিতা, নাচের আসরেই আনন্দ ছড়ায়।
সুর, তানের জগতে সকলকে নিয়ে যাবে টালা বারোয়ারি। ভারতীয় মার্গসঙ্গীতের সঙ্গে ভিন্দেশের সুরের মুর্ছনায় ভাসবে মণ্ডপ। ‘ঢাকের তালে’ পুজো মাতাতে তৈরি বাঘা যতীন পল্লির উদয়ন সঙ্ঘও। ‘ঘুরবে মাথা, লাগবে তাক্’ এই থিমের ভরসায় ধ্রুপদী নাচের আঙ্গিকে দুর্গতিনাশিনীর গল্প আঁকবে আলিপুর সর্বজনীন। সাহেবপাড়ার সোনারপুর রিক্রিয়েশন ক্লাবের পুজোতেও ভরতনাট্যম, ওড়িশি, মণিপুরি, কথাকলির রূপ মণ্ডপে মণ্ডপে।
সুরের উৎস-সন্ধানে ‘শিব চালিসা’য় মজবে ‘ঠাকুরপুকুর ক্লাব’। ‘ওম্’ মন্ত্রে মহাদেব, বিশ্বব্রহ্মাণ্ড দর্শনের স্বপ্ন-পূরণ করবেন সকলে। জোড়াসাঁকো ৭-এর পল্লির মণ্ডপে পৌরাণিকতা, আধ্যাত্মিকতা, আধুনিকতার মেলবন্ধন।
ভিড় টানতে তৈরি কুমোরটুলি সর্বজনীন। দুর্গাপুজোর সকাল-সন্ধ্যায় দর্শনার্থীদের মধ্যে তাঁরা খুঁজবেন লুকনো প্রতিভা। পদ্মশ্রী-জয়ী শিল্পীকে দিয়ে মণ্ডপ সাজিয়ে থিম-যুদ্ধ জিততে নামছে বকুলবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব।
পিছিয়ে নেই করবাগান সর্বজনীনও। আলোর জাদু, কাপড়ের নকশায় নজর টানবে সেই মণ্ডপ। থাকবে লক্ষ্মীর আট রূপের বর্ণনা। যুবমৈত্রীর পুজোয় রামের ‘অকাল বোধন’। সাহাপুর মিতালি সঙ্ঘ ছোটদের নিয়ে যাবে ছুটির দেশে। মণ্ডপ সাজবে লাট্টু, লেট্টি, ঘুর্ণি, গুলির রংবাহারে। সাবেকিয়ানাকে এ ভাবেই আঁকড়ে ধরে এগোবেন তিলোত্তমা কলকাতার পুজোকর্তারা।