উঠে গিয়েছে পিচ। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
হাওড়া সেতুর বেশ কিছু অংশে পিচ উঠে লোহা বেরিয়ে পড়েছে। একটু বৃষ্টিতেই পিছলে যাচ্ছে গাড়ির চাকা। ঝুঁকি নিয়েই প্রতি দিন অসংখ্য গাড়ি চলাচল করে। মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে সমস্যাটা আরও বেশি। একটু অসাবধান হলেই দুঘর্টনার আশঙ্কা।
হাওড়া সেতুর উপরেই বেশ কিছু জায়গায় পিচ উঠে গিয়ে নীচের লোহার পাত বেরিয়ে পড়েছে। ওই লোহার পাতেরও কিছু জায়গা ভেঙে গিয়েছে। বৃষ্টির জল সেখান দিয়ে চুঁইয়ে ভিতরে ঢোকে। প্রতি দিন এর উপরে দিয়ে গাড়ি চলাচল করায় ক্রমশ বেহাল অবস্থা হচ্ছে ওই জায়গাগুলির।
এক মোটরসাইকেল চালক জানান, লোহার পাতগুলি মূলত কলকাতার দিকেই বেরিয়ে রয়েছে। সেতুর এই অংশ ঢালু। ফলে এই অংশে গাড়ির গতিও বেশি। বৃষ্টি হলেই ওই লোহার পাতগুলি পিছল হয়ে যায়। ঠিকমতো সামলাতে না পারলে যে কোনও সময়েই বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁর। ওই অংশটি পার হয়েই সেতুতে বাঁক রয়েছে। ফলে নিয়ন্ত্রণ হারালে বড়সড় অঘটন ঘটে যাবে।
হাওড়া স্টেশন-ধর্মতলা রুটের এক বাস চালক বলেন, “বাসের ক্ষেত্রে তেমন একটা সমস্যা হয় না। কিন্তু মোটরবাইক যাওয়ার সময়ে আমাদেরও এই বিষয়টি লক্ষ রাখতে হয়।” নিত্যযাত্রীরা জানান, হাওড়া সেতু ঐতিহ্যশালী ও ব্যস্ত সেতু। এ রকম সেতুর একটি অংশ এই অবস্থায় দিনের পরে দিন কী ভাবে পড়ে থাকে? কর্তৃপক্ষ কেন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না?
৭০৫ মিটার লম্বা এবং ৮৬ ফুট চওড়া হাওড়া সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছেন কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি হাওড়া পুলিশের আবেদনে সাড়া দিয়ে সেতুর দু’পাশ কাঁটা তার দিয়ে ঘেরা হয়েছে। বেআইনি ভাবে হাওড়া সেতুর রেলিংয়ে উঠে পড়া আটকাতেই এই ব্যবস্থা। সাধারণ মানুষের কাছে তা প্রশংসিত হয়েছিল। কিন্তু সেতুর এই অংশটির সংস্কার করতে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেননি বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, যে লোহার পাতগুলি বেরিয়ে রয়েছে সেগুলি হাওড়া সেতুর নয়। আগে সেতুর উপর দিয়ে ট্রাম চলত। এগুলি সেই ট্রাম লাইনের লোহার পাত। এর সঙ্গে সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্পর্ক নেই বলেই ওই সূত্রের দাবি।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই পাতগুলির উপরে পিচের প্রলেপ দেওয়া হয়। গরমে গলে যাওয়ায় এই অবস্থা বলে তাঁদের ধারণা। তবে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে।