তাঁকে বেআইনি ভাবে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি মাদার হাউসে যেতে চান। তাঁর নামে প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ পাভলভ হাসপাতালের দরজার ইঞ্চি খানেক ফাঁকা দিয়ে এ ভাবেই সাংবাদিকদের একের পর এক প্রশ্নের উত্তর দিলেন রবিনসন স্ট্রিটের কঙ্কাল কাণ্ডে শিরোনামে উঠে আসা পার্থ দে। পাশাপাশি তাঁর দাবি তিনি সুস্থ। এ দিন ফের তিনি দাবি করেন উপবাসেই মারা গিয়েছেন তাঁর দিদি দেবযানী। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “কিছুটা নয়, পুরো ব্যাপারটা জেনেই তবেই কোনও সিদ্ধান্তে আসা উচিত।” পার্থ দে-কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এ দিন সকালেই শেক্সপীয়র সরণির ওসি-সহ চার জনের একটি দল পাভলভ হাসপাতালে পৌঁছয়।
তবে পাভলভে গিয়েও পার্থ দে-কে জি়জ্ঞাসাবাদ করতে পারল না পুলিশ। এ দিন দুপুর সওয়া ১২টা নাগাদ পাভলভ মানসিক হাসপাতালে যায় পুলিশ। কিন্তু, মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যেরা উপস্থিত না থাকায় পুলিশ তাঁকে জেরা করতে পারেনি। বুধবার পার্থকে জেরা করা হতে পারে।
এ দিন পাভলভ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও একদফা বৈঠক করেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। বৈঠকে পাভলভ হাসপাতালের সুপার ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। পার্থকে জেরার সময় ক’জন মনোবিদ বা পুলিশকর্মী উপস্থিত থাকবেন সে নিয়েও চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করেন তাঁরা। কী ভাবে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে সে বিষয়েও চিকিৎসকদের কাছে মতামত চায় পুলিশ।
মাদার হাউসের প্রতিনিধি ছাড়া তিনি পুলিশের সামনে মুখ খুলবেন না বলে বরাবরই দাবি ছিল পার্থর। সে কথা মাথায় রেখে জেরার সময় যাতে মাদার হাউসের প্রতিনিধিরা থাকেন, সেই চেষ্টাও শুরু করেছে পুলিশ। এ দিন পার্থর সঙ্গে কথা বলেন এসএসকেএমের ইনস্টিটিউট অব সাইকিয়াট্রি-র বিভাগীয় প্রধান প্রদীপ সাহা।
এ দিন পার্থ দে-র গাড়ির মেকানিক-সহ দু’জন নিরাপত্তারক্ষীকে থানায় ডেকে জেরা করে পুলিশ। মেকানিক বাবলু দাস জানিয়েছেন, গাড়ি সারানোর জন্য কয়েক মাস অন্তর রবিনসন স্ট্রিটের বাড়িতে যেতেন তিনি। শেষ বার গত ৫ জুন ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। তবে কোনও বারই বা়ড়ির অন্দরে যেতে পারতেন না বাবলুবাবু। নিরাপত্তারক্ষীদের দিয়ে গাড়ির চাবি পাঠাতেন পার্থ। গাড়ি সারিয়ে রক্ষীর হাতেই চাবি ফেরত দিতেন বাবলুবাবু।
গত কয়েক দিন ধরেই রবিনসন স্ট্রিটের বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছিলেন উৎসাহীরা। সংবাদমাধ্যমে সে খবর ফলাও করে প্রকাশিত হচ্ছিল। এতে তথ্যপ্রমাণ নষ্টের আশঙ্কা রয়েছে। এ বার ওই বাড়িতে দর্শণার্থীদের ঢোকা বন্ধ করল পুলিশ। এ ছাড়া পুলিশ সূত্রে খবর, দক্ষিণেশ্বরে যে মন্দিরের সদস্য ছিলেন দেবযানী সেখানেও যাবেন তদন্তকারীরা।