ভোরের আগুনে ছাই খালধারের ১৫টি দোকান

প্রথমে দোকানিরাই খাল থেকে জল নিয়ে আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। পরে দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন পৌঁছয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৩২
Share:

দাউদাউ: জ্বলছে দোকান। বুধবার ভোরে। কেষ্টপুর খালধারে। —নিজস্ব চিত্র।

মাত্র কিছু দিনের ব্যবধান। কেষ্টপুরে গৌরাঙ্গনগরের কাছে জগৎপুর বাজারে ভোরে আগুন লেগে পুড়ে গিয়েছিল বেশ কিছু দোকান। বুধবার ভোরে ফের পুড়ল কেষ্টপুর খালের ধারে থাকা ১৫টি দোকান। ঘটনাস্থল সেই গৌরাঙ্গনগর। দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন প্রায় এক ঘণ্টা লড়াই চালিয়ে আগুন আয়ত্তে আনে। ততক্ষণে অবশ্য কোনও দোকানেরই আর কিছু অবশিষ্ট নেই। তবে এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, বাগজোলা খালের পাশে সার দিয়ে সেলুন থেকে শুরু করে মনিহারি দোকান, ডাক্তারখানা, সাইকেল সারাইয়ের দোকান, খাওয়ার হোটেল, মোবাইল মেরামতির দোকান। সবগুলিই টিনের চাল দিয়ে ঘেরা। এ দিন ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ এক বাসিন্দার চোখে পড়ে, একটি দশকর্মার দোকান থেকে আগুনের শিখা বেরোচ্ছে। তিনি চিৎকার করে সকলকে সতর্ক করার আগেই পাশের দোকানগুলিতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে আগুন। এক বাসিন্দা প্রবীর দত্ত বলেন, ‘‘সকালের হাওয়ায় আগুন আরও দ্রুত ছড়ায়। কিছু ক্ষণ পরেই শুনি, দোকানের ভিতরে রাখা গ্যাস সিলিন্ডারগুলি বিকট শব্দে ফাটতে শুরু করেছে।’’ বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সিলিন্ডারগুলি ছিটকে বাগজোলা খালে পড়ছিল। বোমা ফাটার মতো শব্দ হচ্ছিল চারদিকে।

প্রথমে দোকানিরাই খাল থেকে জল নিয়ে আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। পরে দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন পৌঁছয়। তবে আগুনের তাপে কোনও দোকানদারই জিনিস বার করতে পারেননি। তপন সাহা

Advertisement

আজ কোথায় কোথায় ভোট, দেখে নিন

নামে এক দোকানি বলেন, ‘‘পাড়ায় ঘুগনি বিক্রি করতাম। ১০ বছর ধরে টাকা জমিয়ে কয়েক দিন আগেই ভাতের হোটেল খুলেছিলাম। আগুনে সব শেষ হয়ে গেল। স্ত্রী আর দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে পথে বসেছি।’’ তপনের পাশে বসে তখন অঝোরে কাঁদছেন স্ত্রী রূপালী। তপনের দোকানের পাশেই বৈদ্যুতিন সামগ্রীর দোকান ছিল বিপুল সাহার। টিভি, টেপ রেকর্ডার

মেরামতিও করতেন। বিপুল বলেন, ‘‘মঙ্গলবারই চাঁদনি মার্কেট থেকে ৭০ হাজার টাকার জিনিস কিনে এনেছিলাম। কিছুই বাঁচাতে পারলাম না।’’ এলাকাবাসী জানিয়েছেন, যে ১৫টি দোকান পুড়েছে, তার মধ্যে একটি দোকানের পিছনেই পরিবার নিয়ে থাকতেন মালিক। কোনও রকমে বেরোতে পারায় আগুন থেকে রক্ষা পেয়েছেন তাঁরা।

তবে বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভোরে এত বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও স্থানীয় কোনও নেতা-নেত্রী, বিধায়ক বা সাংসদকে এলাকায় দেখা যায়নি। ওই এলাকার কাছে ভোটের প্রচারে প্রার্থীরা বেরোলেও গৌরাঙ্গনগরে কেউ আসেননি। স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, নির্বাচনী আচরণবিধির কারণে কোনও প্রতিশ্রুতি দিতে পারবেন না বলেই নেতাদের দেখা পাওয়া যায়নি।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সকাল ১০টা নাগাদ অবশ্য ঘটনাস্থলে আসেন নিউ টাউন বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সভাপতি প্রবীর কর। ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে প্রবীরবাবু বলেন, ‘‘যাঁদের দোকান পুড়েছে, তাঁদের নামের তালিকা তৈরি করে আমার অফিসে ও বিডিও অফিসে জমা দিতে বলেছি। ভোট মিটলে ওঁদের জন্য কী করা যায়, খতিয়ে দেখব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement