পরিকাঠামো আছে, ফাঁকা হাসপাতাল

রোগীর ভিড় উপচে পড়ে, তখন রাজারহাট বিধাননগর পুরনিগম পরিচালিত বিদ্যাসাগর মাতৃসদনের ছবিটা থাকে উল্টো। এমনই অভিযোগ জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা

Advertisement

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:০৯
Share:

রোগী নেই, তাই ফাঁকা হাসপাতাল। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

ডেঙ্গি ও জ্বরের জেরে যখন শহরের হাসপাতালগুলোতে রোগীর ভিড় উপচে পড়ে, তখন রাজারহাট বিধাননগর পুরনিগম পরিচালিত বিদ্যাসাগর মাতৃসদনের ছবিটা থাকে উল্টো। এমনই অভিযোগ জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, পরিকাঠামো উন্নতির পরেও মূলত মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে না পারায় ধুঁকছে হাসপাতালটি।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, এক সময়ে রোগীর ভিড় লেগে থাকত এখানে। দু’দশক আগে তৎকালীন মন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য উদ্বোধন করেছিলেন হাসপাতাল। রাজারহাট, মধ্যমগ্রাম, কৈখালি, নারায়ণপুর এলাকার মানুষের কাছের হাসপাতাল এটি। অভিযোগ, তৈরির কয়েক বছরের মধ্যেই পরিকাঠামোর অভাবে ধুঁকতে শুরু করে হাসপাতাল।

স্থানীয়েরা জানান, ২০১৫ সালে হাসপাতালের পরিষেবা একে বারে তলানিতে ঠেকে। রোগী আসা কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ২০১৭ সাল থেকে হাসপাতাল সাজানো শুরু করে বিধাননগর পুরনিগম। এখনও হাসপাতাল চত্বর, ভবন, সব কিছুতে যত্নের ছাপ স্পষ্ট। বেশ কয়েক জন সেজে ওঠার পরে নতুন চিকিৎসকও যোগ দেন, চালু হয় নতুন বিভাগ।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে খবর, পুরুষ ও মহিলাদের জন্য ১২টি শয্যা এবং আইসিইউ ও এসডিইউতে আটটি করে শয্যা রয়েছে এখানে। স্ত্রীরোগ বিভাগে রয়েছে ২৬টি শয্যা। সম্প্রতি হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, স্ত্রীরোগ বিভাগ, আইসিইউ এবং এসডিইউতে নামমাত্র রোগী ভর্তি আছেন। বহির্বিভাগেও রোগী নেই। এক কর্মী জানান, কিছু দিন আগেই কয়েক জন রোগীর ছুটি হয়ে গিয়েছে। হাসপাতালের সুপার উৎপল ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘পরিকাঠামো ও পরিষেবা যথেষ্ট ভাল। চিকিৎসকও পর্যাপ্ত। রোগীর সংখ্যা একেক সময়ে এক এক রকম থাকে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রয়োজন না পড়লে কেন রোগী ভর্তি থাকবেন? বলুন তো?

স্থানীয়দের অভিযোগ, ‘‘চিকিৎসকের সংখ্যা এখানে খাতায়-কলমে। বেশির ভাগ সময়েই চিকিৎসকের দেখা মেলে না। তা ছাড়া সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষাও এখানে হয় না।’’ এক রোগীর আত্মীয় বলেন, ‘‘কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রসব বিনামূল্যে হয়। ওষুধেরও কোনও খরচ নেই। অথচ এখানে ওষুধের খরচ নিজেদের বইতে হয়। তাই অন্তঃসত্ত্বারা দূরে হলেও শহরের মেডিক্যাল কলেজগুলোতে যাওয়াই বেছে নেন।’’

বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় বলেন, ‘‘হাসপাতালটি একটা সময়ে ধুঁকছিল। এখন তো পরিকাঠামো আধুনিক করা হয়েছে। প্রশাসন আর কী করবে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন