Blind School

Education: করোনার আঁধার কাটবে কবে খুদে দৃষ্টিহীনদের

কবে ফের খুলবে ওদের স্কুল? সেই প্রতীক্ষায় অভিভাবক থেকে পড়ুয়া এবং শিক্ষকেরাও।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২২ ০৮:৩৪
Share:

নতুন বই ছুঁয়ে দেখছে উষ্ণীক। নিজস্ব চিত্র।

পড়া-খেলা-গান-অভিনয় শেখা, বিভিন্ন মডেল বানানো— সব করত ওরা স্কুলে থেকে। করোনার কারণে বন্ধ সেই স্কুল। তাই প্রায় দু’বছর ধরে সে সবও বন্ধ। অসহায় অবস্থায় দিন কাটছে বহু দৃষ্টিহীন খুদে পড়ুয়ার। শিক্ষকেরাও মানছেন, এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দৃষ্টিহীন শিশুদের শিক্ষার প্রথম ধাপ। কবে ফের খুলবে ওদের স্কুল? সেই প্রতীক্ষায় অভিভাবক থেকে পড়ুয়া এবং শিক্ষকেরাও।

Advertisement

অতিমারির কোপে বিপুল এই ক্ষতির কথা মানছেন নরেন্দ্রপুর ব্লাইন্ড বয়েজ় অ্যাকাডেমির অধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ ঘোষ। তিনি জানাচ্ছেন, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তাঁরা প্রথম বর্ষের ছাত্র ভর্তি নিতে পেরেছিলেন। ওই শেষ। স্কুল বন্ধ থাকায় পরের দু’বছর তাঁরা প্রথম শ্রেণির ছাত্র ভর্তিই নেননি। ফলে এখন স্কুলে পড়ুয়া রয়েছে তৃতীয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত।

আবাসিক এই স্কুলে পড়ুয়াদের হস্টেলে থাকাই দস্তুর। বিশ্বজিৎবাবু জানাচ্ছেন, ছ’বছর হলেই প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি নেওয়া হয়। জামাকাপড় পরতে পারা, শৌচাগার ব্যবহারের অভ্যাস তৈরি হওয়া দৃষ্টিহীন বাচ্চাকে তাঁরা ভর্তি নেন। খুদে পড়ুয়াদের সামলানোর জন্য থাকেন দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন কর্মীরাই। তাঁর কথায়, ‘‘লেখাপড়া এবং অন্যান্য কাজে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে খুদেদের চিন্তাশক্তি এবং ভাবনার জগৎকে বিকশিত করা হয়। সেই কাজটাই বাধা পাচ্ছে। বহু অভিভাবক ফোন করে জানতে চাইছেন, কবে স্কুল খুলবে? খুদে পড়ুয়াদেরও একই প্রশ্ন।’’

Advertisement

এমনই এক পড়ুয়া নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন ব্লাইন্ড বয়েজ় অ্যাকাডেমির তৃতীয় শ্রেণির উষ্ণীক সাঁফুই। পড়াশোনার পাশাপাশি শারীরচর্চা, সংস্কৃতির চর্চা হবে এমন আশা নিয়েই দক্ষিণ ২৪ পরগনার পৈলানের বাবুলাল এবং চুমকি সাঁফুই তাঁদের একমাত্র ছেলে উষ্ণীককে ২০২০ সালে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করেছিলেন। কিন্তু ভর্তির কিছু দিন পরেই শুরু হয় লকডাউন। আজ প্রায় দু’বছর অন্য খুদেদের মতোই উষ্ণীক স্কুল থেকে দূরে। টেলিফোনের মাধ্যমে স্কুল থেকে ক্লাস নেওয়া হয়। মুখে মুখে বাংলা, ইংরেজি, অঙ্ক শিখছে। নামতাও শেখা শুনেই। এ ভাবেই উষ্ণীকরা তৃতীয় শ্রেণিতে উঠেছে। মা চুমকি জানালেন, ব্রেল পদ্ধতি জানেন এমন কাউকে তাঁরা উষ্ণীকের জন্য খুঁজছেন। চুমকি বলেন, ‘‘বাড়িতে ব্রেল পদ্ধতি শেখা হচ্ছে না। খেলাধুলোও হচ্ছে না। খুব চাই স্কুল খুলুক।’’

চিকিৎসা বিভ্রাটে উষ্ণীক সাত মাস বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারায়। চোখের চিকিৎসায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে তাকে নিয়ে গিয়েও লাভ হয়নি।

...

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন