শোভন পথে বিবাদ মেটাতে আসরে অরূপ

তৃণমূলের অন্দরের কোন্দলে টালিগঞ্জ রোডের দখল হওয়া দলীয় কার্যালয়টি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তৃণমূল বিধায়ক এবং বিধানসভায় দলের মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। নির্দেশ অনুযায়ী, সোমবার বিকেল পাঁচটায় ২৪ ঘণ্টা পূর্ণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সেই নির্দেশকে কার্যত অগ্রাহ্য করে শোভনদেব অনুগামী তথা অফিসঘরের মালিক কৌশিক মিত্রের হাতে চাবি পৌঁছল না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৩৯
Share:

তৃণমূলের অন্দরের কোন্দলে টালিগঞ্জ রোডের দখল হওয়া দলীয় কার্যালয়টি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তৃণমূল বিধায়ক এবং বিধানসভায় দলের মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং।

Advertisement

নির্দেশ অনুযায়ী, সোমবার বিকেল পাঁচটায় ২৪ ঘণ্টা পূর্ণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সেই নির্দেশকে কার্যত অগ্রাহ্য করে শোভনদেব অনুগামী তথা অফিসঘরের মালিক কৌশিক মিত্রের হাতে চাবি পৌঁছল না।

চাবি না পেয়ে কৌশিকবাবুর স্ত্রী মৌসুমী মিত্র, ‘দখলদার’ তৃণমূল নেতা স্বরূপ বিশ্বাসের দাদা, রাজ্য যুবকল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে ফোন করেন। পরে মৌসুমীদেবী জানান, অরূপবাবু বলেছেন, চাবি তাঁর কাছেই আছে। শোভনদেব উত্তরবঙ্গ থেকে ফিরলে তাঁর হাতেই চাবি দিয়ে দেবেন। শোভনদেবও জানান, আজ, মঙ্গলবার তিনি কলকাতায় ফিরলেই তাঁর হাতে চাবি দেবেন বলে অরূপ বিশ্বাস ফোনে জানিয়েছেন।

Advertisement

শনিবার পুরভোট মেটার পর থেকেই স্বরূপ বিশ্বাস গোষ্ঠীর সঙ্গে শোভনদেব অনুগামীদের গোলমাল বাধে। এর জেরে ররিবার স্বরূপ গোষ্ঠীর লোকজন টালিগঞ্জ রোডের ঝালার মাঠ সংলগ্ন অফিসঘরটির তালা ভেঙে ভাঙচুর চালায় এবং তার দখল নেয়। গোলমালের খবর পান দলনেত্রী মমতা। তিনিই অরূপবাবুকে চাবি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন।

চাবি ফেরত না পাওয়ার পিছনেও সঙ্কীর্ণ রাজনীতি রয়েছে বলেই অভিযোগ শোভনবাবুর অনুগামীদের। তাঁদের অভিযোগ, অফিসঘরের তালা ভেঙে দখল নিয়েছিলেন স্বরূপ বিশ্বাসের লোকজন। তাঁরাই অফিসঘরের মালিকের হাতে চাবি দিলে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে সম্মান জানানো হত। কৌশিকবাবু বাড়ি না থাকায়, তাঁর স্ত্রীর হাতে চাবি দেওয়ার কথা। শোভনদেববাবু বিস্তারিত ভাবে কিছু না বললেও তাঁর অনুগামীদের অভিযোগ, স্বরূপ বিশ্বাস এবং তাঁর স্ত্রী, এলাকার কাউন্সিলর জুঁই চান, এখানে তাঁদের নেতৃত্বে দলের কাজ করতে হবে।

যদিও তাঁর এবং তাঁর স্ত্রী জুঁই বিশ্বাসের উপরে ওঠা অভিযোগ নিয়ে সোমবারও সরাসরি কিছু বলেননি স্বরূপ বিশ্বাস। বরং পাল্টা জানতে চান, ‘‘কে অভিযোগ করেছেন, নাম বলুন।’’ তাঁর বক্তব্য, বিজেপি না সিপিএমের লোকজন কারা চক্রান্ত করার জন্য এই কথা বলছেন, তা না জেনে তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না। যা বলার সুব্রত বক্সী বলবেন।

শোভনদেববাবু এ দিন ভোটের প্রচারে শিলিগুড়িতে গিয়েছেন। স্বরূপদের এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে শোভনদেববাবু বলেন, ‘‘আমি তো আগেই বলেছি, আমার নেত্রী বিষয়টি দেখছেন। এই ব্যাপারে আমি কিছু বলব না। তবে আমি সরাসরি বলছি, আমার মাথার উপরে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশ মেনে পার্থ (চট্টোপাধ্যায়) ও বক্সী (সুব্রত) যা করতে বলবেন, তা করব।বাকি কাউকে মানা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’’

তবে স্বরূপ অনুগামীদের অভিযোগ শোভনদেববাবুর লোকজনের অনেকেই তলে তলে এলাকায় বিজেপি-র হয়ে কাজ করছিল। তাদের কাজ বন্ধ করতেই দলের কর্মীরা একজোট হয়ে প্রতিবাদে নেমেছেন। শোভনদেব-অনুগামীরা অবশ্য এই অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন