ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের থেকে আশ্বাস পেয়ে শুক্রবার মাঝরাতে উঠে গিয়েছে ঘেরাও। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় শনিবার আরও এক বার জানিয়ে দিলেন— শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল গঠন নিয়ে সরকারি মনোভাবের কোনও পরিবর্তন হবে না।
সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের মডেল অনুসরণ করে চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই রাজ্যের সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক ছাত্র সংসদের বদলে অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল তৈরির কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। এই নিয়ে নির্দেশিকাও জারি হয়েছে। এর বিরুদ্ধেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে টানা প্রায় ৩৫ ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখেন পড়ুয়ারা।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতিকে স্মারকলিপি দিয়ে পড়ুয়ারা দাবি করেন, সরকারের এই সিদ্ধান্ত অগণতান্ত্রিক বলে ঘোষণা করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়কে। কর্তৃপক্ষ তা মানতে চাননি। এর পরেই শুরু হয় ঘেরাও। তবে ঘেরাও কর্মসূচির পাশাপাশি পড়ুয়ারা ক্লাসও করে গিয়েছেন যথারীতি।
আরও পড়ুন: নার্সের মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ সংগঠন
শুক্রবার গভীর রাতে কর্মসমিতির আশ্বাসে ঘেরাও তুলে নেন পড়ুয়ারা। কী সেই আশ্বাস? কর্মসমিতির প্রস্তাবে বলা হয়েছে— বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া, গবেষক সংগঠন, শিক্ষক সংগঠনগুলি মনে করে যাদবপুরের ৪টি ফ্যাকাল্টির যা গঠন, তার সঙ্গে নতুন ছাত্র কাউন্সিল গঠনের ধারণা খাপ খায় না বলে এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে কর্মসমিতি মনে করে, বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। কর্মসমিতি এ বিষয়ে সকলের সঙ্গেই আলোচনায় প্রস্তুত।
কিন্তু সরকার কি আলোচনায় রাজি? শিক্ষামন্ত্রী জানান, কর্মসমিতির প্রস্তাব নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে এ দিন কিছু জানাননি। ‘‘কিন্তু কোনও অবস্থাতেই রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের বদল হবে না’’— জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘এই সিদ্ধান্ত রাজ্যের সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যলয়ের জন্য নেওয়া হয়েছে। শুধু যাদবপুরের জন্য নয়।’’ শিক্ষামন্ত্রী মন্তব্য করেন, ‘‘হোক কলরব বা হোক ইউনিয়ন নয়। হোক পড়াশোনা।’’ আন্দোলনকে কটাক্ষ করে পার্থবাবু বলেন, ‘‘ছাত্র ভর্তির সময়েই এই ধরনের আন্দোলন হয়। মূলত নতুন ছাত্রদের দলে টানতে এ সব করা। যাদবপুরের ভাবমূর্তিই নষ্ট হচ্ছে এতে।’’
যাদবপুরের কলা বিভাগের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক দেবরাজ দেবনাথ জানান, ঘেরাও তুলে নেওয়ার মানে দাবি থেকে সরে আসা নয়। আন্দোলন চলবে। ছাত্র কাউন্সিল গঠনের নির্দেশ মানা হবে না। দেবরাজ বলেন, ‘‘ক্যাম্পাসের পরিবেশ যাতে সুস্থ থাকে, পড়াশোনার পরিবেশ যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে— সে জন্যই আমাদের আন্দোলন!’’
কর্তৃপক্ষ ঠিক করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় খুললে পড়ুয়াদের বক্তব্য উচ্চশিক্ষা দফতরকে জানিয়ে দেবেন।
ভ্রম সংশোধন
(শনিবার আনন্দবাজারের কিছু সংস্করণে এই সংবাদের শিরোনামে ‘বন্ধ পড়াশোনা’ বলা হয়েছিল, যা ঠিক নয়। এ জন্য আমরা দুঃখিত।)