শাসন নস্যাৎ, তোলাবাজি জিন্দাবাদ

‘বলে দিন, পুষ্পালিদি ছাড়া কাউকে এক পয়সা দেব না’

— দিদি নমস্কার। আমি পরোটা দোকানের লক্ষ্মণ বলছি। পুষ্পালিদেবী: হ্যাঁ। — আমি তো একটা সমস্যা নিয়ে, ওরা আজকে আমাকে, এর আগেও জানিয়েছিল। বলছে যে আমাকে ২০ হাজার রক্তদান শিবির কেন্দ্রে দিতে হবে। আমি বললাম, কোথা থেকে পাব।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৬ ০৭:৪৯
Share:

পুষ্পালি সিংহ

দিদি নমস্কার। আমি পরোটা দোকানের লক্ষ্মণ বলছি।

Advertisement

পুষ্পালিদেবী: হ্যাঁ।

আমি তো একটা সমস্যা নিয়ে, ওরা আজকে আমাকে, এর আগেও জানিয়েছিল। বলছে যে আমাকে ২০ হাজার রক্তদান শিবির কেন্দ্রে দিতে হবে। আমি বললাম, কোথা থেকে পাব। এই তো আমি একটা টাকা দিই। তার পরও যদি প্রেশার দাও তোমরা, তা হলে কী করে হবে? বলছে, না দিতে হবে, ওদেরকে বলো। আমি ওদেরকে জানিয়েছি, যারা নেয়। এ বার বলছে, তোমরা আলোচনা করে মিটিয়ে নাও। বলছে, না আমরা মেটাব না, তুমি এইটা দেবে। আমি বললাম, আমি পারব না। এ বার আমাকে বলছে, তা হলে না দেবে তো বন্ধ করে দাও। দেখি তোমার কে আছে খোলায়।

Advertisement

আপনি কিছু বলতে পারেননি?

দিদি, বলেছি তো আমি কোথা থেকে দেব? দোকান থেকে একটা দিচ্ছি।

না, কোথা থেকে দেব নয়। আপনি বললেন না কেন, আমি তোমাকে চিনি না, তোমাকে দেব কেন?

বলতে পারিনি। আবার কালার চলে আসবে তো দিদি।

না, এ রকম হলে হবে না। শুনুন আপনার লড়াই আপনাকে লড়তে হবে। বলতে হবে ভাই, তোমার ক্ষমতা থাকলে দোকানটা বন্ধ করে দেখিয়ে দাও। এই কথাটা বলা উচিত ছিল তো।

ঠিক আছে।

আপনি বলুন না, আমি পুষ্পালিদি ছাড়া আর কাউকে একটা পয়সাও দেব না। পুষ্পালিদি আমায় বলেনি দিতে।

আমি সেটা বলিনি। কেন আপনার নামটা উত্থাপন করব, ওই জন্য আমি কিছু বলিনি দিদি।

ঠিক আছে। ওরা একটা চিঠি করছে। চিঠির তলায় সই করে দিন। থানায় জানিয়ে রাখা ভাল।

আচ্ছা দিদি।

(বলে ফোনটা কাউন্সিলরের পাঠানো লোকের হাতে দেন লক্ষ্মণ। ফোনটা তাঁরই।)

ফোন ধরে সেই ব্যক্তি বলেন, ‘‘হ্যাঁ দিদি।’’

পুষ্পালিদেবী: ওকে দে তো এক বার।

(ফের লক্ষ্মণের হাতে ফোন দেওয়া হয়)

বলেন দিদি?

গত মাসে আপনি দেননি ওটা?

না দিদি দিয়েছি। প্রতি মাস, যে দিন থেকে চালু হয়েছে, আমার সব রানিং আছে দিদি।

গত মাসে দেননি তো?

দিয়েছি দিদি।

আপনি গত মাসে দিয়েছেন?

হ্যাঁ, পুরো পে করেছি।

কত দিয়েছেন?

ওটা দিয়েছিলাম... সাত হাজার আটশো টাকা দিয়েছিলাম। চার দিন বন্ধ ছিল।

আনন্দবাজারের হাতে আসা সেই অডিও ক্লিপ

গত মাসে, মানে জুন মাসে।

হ্যাঁ দিদি, জুন মাসে।

ছোটকাকে আপনি বলুন, ওইটা কিন্তু আমি জানি না। আপনি দিয়েছেন। ও আমায় কিন্তু বলেওনি। আমার কাছে পৌঁছয়নি। আপনি বলুন ওকে।

আচ্ছা, আচ্ছা। তা হলে রাখছি ফোনটা।

না না। ওকে দিন না ফোনটা।

(ফের ফোন ধরলেন কাউন্সিলরের দূত)

হ্যালো!

তুই টাকাটা কী করলি নিয়ে? ৭৮০০ টাকা।

এই তো, নিয়ে এসেছি তো।

কোথায় নিয়ে এসেছিস? এই তো ও বলল গত মাসে দিয়েছে।

না না নিয়ে এসেছি। আমার কাছে আছে।

তোর কাছে রয়েছে কেন? মাতব্বর হয়ে গেছিস না? তুই দেখা করিস না, আলোচনা করিস না। কিছু করিস না। তোর কী মনে হচ্ছে, সেক্রেটারি থেকে সরিয়ে দিই? তা হলে ভাল হবে!!

জিনিসটা হলো, আমার ঘরে কাজ হচ্ছে। আমি ঘরের মধ্যে রয়েছি।

আবার মিথ্যা কথা বলছিস, আমার মাথা গরম করাচ্ছিস।

(আরও কিছু প্রসঙ্গ নিয়ে কথাবার্তার পরে)

লক্ষ্মণ জুলাই মাসের টাকা দিয়েছে?

না, এটা পাব।

তুই জুনের টাকা নিয়ে এখনই আয়।

(আনন্দবাজারের হাতে আসা অডিও ক্লিপের একাংশের অবিকৃত অনুলিপি। সত্যতা যাচাই সম্ভব হয়নি।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন