বন্ধ কলকাতা জুটমিলের সামনে উদ্বিগ্ন শ্রমিকেরা। — নিজস্ব চিত্র।
আগের রাতেও শ্রমিকেরা জানতেন না, রুজিরোজগারে ঝাঁপ ফেলে দেওয়ার তোড়জোড় চলছে। সোমবার সকালে তাঁরা শুনলেন, ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ বা কাজ বন্ধের নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে ফুলবাগানের কলকাতা জুটমিলে। দিশাহারা হয়ে পড়লেন অনেকেই। তার পরেই দল বেঁধে শুরু হল বিক্ষোভ, অবরোধ।
চটকল-কর্তৃপক্ষ এ দিন সকালেই ফুলবাগানে কারখানার গেটে কাজ বন্ধের নোটিস ঝুলিয়ে দেন। তাতে জানানো হয়, উৎপাদন কম হচ্ছে বলেই কারখানা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। খবর পেয়ে সকাল থেকেই দলে দলে কারখানার গেটে ভিড় করতে থাকেন শ্রমিকেরা। কারখানার বন্ধ ফটক ধরে ঝাঁকাতে থাকেন অনেকে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা দুপুর ১২টা থেকে নারকেলডাঙা মেন রোড এবং সুভাষ সরোবর রোডের মোড়ে অবরোধ শুরু করেন। পুলিশ গিয়ে অবরোধ তুলে নেওয়ার আবেদন জানালেও লাভ হয়নি। বেলা ১টা নাগাদ ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় বিধায়ক সাধন পাণ্ডে। বিষয়টি নিয়ে তিনি শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে কথা বলবেন বলে শ্রমিকদের আশ্বাস দেন। তার পরে রাস্তা থেকে অবরোধ তুলে কারখানার সামনে অবস্থানে বসেন। শ্রমিকেরা কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত না-বদলানো পর্যন্ত তাঁরা উঠবেন না বলে জানিয়ে দেন।
ওই চটকলের ছ’টি কর্মী ইউনিয়ন আছে। তার একটির নেতা রানা জানা অভিযোগ করেন, লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে কারখানার জমি একটি প্রোমোটিং সংস্থার কাছে বেচে দেওয়ার জন্যই আচমকা এই সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিস ঝুলিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। অবিলম্বে কারখানা ফের না-খুললে কাজ হারাবেন প্রায় ১২০০ কর্মী। বিপাকে পড়বেন তাঁরা এবং তাঁদের পরিবার। রানাবাবুর দাবি, এখনও ওই কারখানার প্রায় ৪০০ জন কর্মী-শ্রমিকের বেতন ও গ্র্যাচুইটির টাকা বাকি রয়েছে। কারখানা না-খোলা পর্যন্ত তাঁরা কারখানার গেটে অবস্থান বিক্ষোভ চালাবেন বলেও জানান ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা। সকাল থেকে কর্মীদের বিক্ষোভ-অবরোধ-অবস্থান চললেও সারা দিনে মালিক পক্ষের কাউকে ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি। হঠাৎ কাজ বন্ধ করা হল কেন, কর্মী-শ্রমিকদের দাবি ও অভিযোগ ঠিক কি না, তার সদুত্তর মিলছে না। বারবার ফোন, এসএমএস করেও কারখানার মালিক বিমল পোদ্দারের সাড়া মেলেনি।