কলকাতা পুরসভার ক্ষতিপূরণ নিতে উপস্থিত কৃষকেরা। — নিজস্ব চিত্র।
কলকাতায় তৈরি হবে নতুন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র। পূর্ব কলকাতায় ধাপা সংলগ্ন জমিতেই হবে প্রকল্প। সেই জমি পুরসভার হাতে থাকলেও সেখানে যাঁরা চাষাবাদ করতেন, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফার চেক বিলি শুরু করল কলকাতা পুরসভা। কাঠা প্রতি ২৫ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের।
পূর্ব কলকাতায় ধাপা সংলগ্ন ৫৪১ বিঘা জমিতে তৈরি হচ্ছে নতুন প্রকল্প। জমিটি পুরসভার হলেও তাতে চাষাবাদ করতেন অনেকেই। তাঁদেরই ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে পুরসভা। পুজোর আগে প্রথম পর্বের চেক বিলি শুরু হয়েছিল। মোট ৮৮৩ জন কৃষককে তিন দফায় ক্ষতিপূরণের চেক দেওয়া হচ্ছে। এর আগে ২৫০ জন কৃষক চেক পেয়েছেন। পুরসভার হিসাব অনুযায়ী, ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ৫৫ কোটি টাকা প্রয়োজন হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ক্ষতিপূরণ বাবদ চেক নেওয়ার পরে বৃদ্ধা চারুবালা মণ্ডল বলেন, ‘‘টাকা পেয়েছি। এক লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা।’’
পূর্ব কলকাতায় ৫৪১ বিঘা জমিতে তৈরি হবে বিকল্প ধাপা। মূল উদ্দেশ্য, বর্তমান ডাম্পিং সাইটের উপর থেকে চাপ কমানো এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তোলা। নতুন যে বিকল্প ধাপা তৈরি হচ্ছে, সেখানে ৩৬০ বিঘা জমিতে অত্যাধুনিক বিভিন্ন প্রসেসিং প্ল্যান তৈরি হবে। জাতীয় গ্রিন ট্রাইবুনালের নির্দেশ অনুসারে তা হবে পরিবেশ-বান্ধব।
পুরসভার কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ বর্তমানে প্রতি দিন প্রায় ১,৫০০ টন বর্জ্য থেকে সার, সিএনজি ও প্লাস্টিকজাত দ্রব্য উৎপাদন করতে সক্ষম। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই সক্ষমতা বাড়িয়ে ২,৫০০ টনে উন্নীত করা হবে। সেই লক্ষ্যে নতুন রিসাইক্লিং ইউনিট স্থাপনের জন্যই ৭৩ হেক্টর জমি অত্যাবশ্যক বলে জানিয়েছেন এক পুরকর্তা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কলকাতায় এই প্রকল্প বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ প্রয়োজন। ধাপা ডাম্পিং সাইট ১৯৮৭ সালে চালু হয়েছিল এবং বর্তমানে এটি প্রতিদিন প্রায় ৫,০০০ টন বর্জ্য গ্রহণ করছে — যা এর ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ। পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ড থেকে প্রায় ৪,৫০০ টন, পাশাপাশি সল্টলেক, নিউ টাউন ও পানিহাটি থেকে ৫০০ টন বর্জ্য সেখানে ফেলা হয়। শীঘ্রই হাওড়া থেকেও আরও ৩০০ টন বর্জ্য পাঠানো হবে। পরিবেশবিদদের সতর্কবার্তা, সময়মতো ধাপা সম্প্রসারণ ও রক্ষণাবেক্ষণ না হলে বড়সড় বিপর্যয় ঘটতে পারে।