বেআইনি জেনেও ৮০বি কসবা বোসপুকুর রোডের জমি মিউটেশনের আবেদন কেন গ্রহণ করা হল, কর-মূল্যায়ন দফতরের চিফ ম্যানেজারের কাছে তা জানতে চাইল পুরসভার বিশেষ তদন্ত কমিটি। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে তাঁকে জবাব দিতে বলা হয়েছে। কমিটি সূত্রের খবর, ওই অফিসার তাঁদের জানিয়েছেন তিনি ওই ঘটনায় যুক্ত নন। যদিও পুরসভার পদস্থ আধিকারিকদের মতে, ওই পরিমাণ জমির মিউটেশন ও পৃথকীকরণের কাজ তাঁর অজ্ঞাতে হওয়া সম্ভব নয়।
৮০বি কসবা-বোসপুকুর রোডের প্রায় তিন বিঘা জমি বেআইনি ভাবে মিউটেশন করেছে ওই দফতর। ইতিমধ্যেই তা নিয়ে সরগরম পুর-মহল। এমনকী, পুরসভার রেকর্ডে জলাশয় বলে চিহ্নিত ওই জমির চরিত্র বদলও করা হয়েছে আইনের তোয়াক্কা না করে। সে সব তথ্য ফাঁস হতেই সম্প্রতি পুর-প্রশাসন তিন মেয়র পারিষদকে নিয়ে তদন্ত কমিটি গড়ে। মঙ্গলবার ওই জমির ফাইলপত্র নিয়ে তদন্তের কাজ শুরু করেন কমিটির সদস্যেরা। ডেকে পাঠানো হয় চিফ ম্যানেজার ভাস্কর ঘোষকে।
এ দিকে, মিউটেশন দেওয়ায় স্রেফ পদ্ধতিগত ভুল হয়েছিল বলে জানিয়েছিল পুর প্রশাসন। যাঁরা মিউটেশন পেয়েছেন তাঁদের বলে দেওয়া হয় পদ্ধতিতে ভুল থাকায় তা বাতিল হয়েছে। তাঁরা ফের মিউটেশনের আবেদন করতে পারবেন। এ দিন কমিটি জানায়, ওই মিউটেশনের আবেদন নেওয়াই ঠিক হয়নি। অর্থাৎ পুর-প্রশাসনের সঙ্গে কমিটি যে একমত নয় তাও পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।
কমিটি সূত্রের খবর, জমিটি যে জলাশয়ের সঙ্গে যুক্ত নতুন দলিলেও সে উল্লেখ রয়েছে। তা সত্ত্বেও মিউটেশের আগে তা দেখা হল না কেন সেটাও জানতে চাওয়া হয়েছে ওই অফিসারের কাছে। কমিটি অবশ্য তাঁকে দু’দিন সময় দিয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
পুরসভার এক পদস্থ অফিসার জানান, মিউটেশন পাইয়ে দেওয়ার কাজকর্ম প্রকাশ হতেই গড়িয়াহাটের অফিসে আচমকা অভিযান করেন পুর-কমিশনার খলিল আহমেদ। সঙ্গে ছিলেন ওই চিফ ম্যানেজার। সময়ে হাজির না হওয়ার জন্য পুর-কমিশনার ওই অফিসের পদস্থ কর্তাদের শো-কজ করেন। ওই ঘটনার পিছনে কর-মূল্যায়ন দফতরের চিফ ম্যানেজারের কোনও ভূমিকা আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি।
ইতিমধ্যেই কর-মূল্যায়ন দফতরে তিন জন চিফ ম্যানেজার রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এত দিন এক জনই সব ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। সোমবার মেয়র পারিষদের বৈঠকে বর্তমান চিফ ম্যানেজারকে ‘হাই ভ্যালু’র দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাব হয়। তবে তদন্ত কমিটি চলাকালীন এখনই তা করা যাবে কি না এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ঠিক হয়, এ ব্যাপারে পুর-প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করবেন মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার। তারপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।