চেন্নাইয়ে ফেরত গেল মেট্রোর পাঁচ নম্বর রেক

গত মার্চের প্রথম সপ্তাহে চেন্নাই থেকে ওই রেকটি কলকাতা এসে পৌঁছেছিল। এর পরেই রেকটিকে নোয়াপাড়া কারশেডে যাত্রী পরিবহণের উপযুক্ত করে তোলার কাজে হাত লাগান মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ওই রেকেও আগেরগুলির মতো একই সমস্যা চোখে পড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৯ ০২:২১
Share:

কলকাতা মেট্রোর নতুন রেক।—ছবি সংগৃহীত।

ত্রুটিপূর্ণ নতুন রেক নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে এক প্রকার জোর করেই চেন্নাইয়ে রেক ফেরত পাঠালেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরির (আইসিএফ) তৈরি পাঁচ নম্বর রেকটিকে পূর্ব রেলের ইঞ্জিনের সাহায্যে নোয়াপাড়া কারশেড থেকে চিৎপুর ইয়ার্ডে এনে রাখা হয়েছিল। সেখান থেকে সম্প্রতি চেন্নাইয়ের উদ্দেশে রেকটি রওনা হয়েছে।

Advertisement

গত মার্চের প্রথম সপ্তাহে চেন্নাই থেকে ওই রেকটি কলকাতা এসে পৌঁছেছিল। এর পরেই রেকটিকে নোয়াপাড়া কারশেডে যাত্রী পরিবহণের উপযুক্ত করে তোলার কাজে হাত লাগান মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ওই রেকেও আগেরগুলির মতো একই সমস্যা চোখে পড়ে। ত্রুটি সারিয়ে রেকটিকে কী ভাবে যাত্রী পরিবহণের উপযোগী করে তোলা যাবে, তা নিয়ে মেট্রো কর্তাদের সঙ্গে আইসিএফ কর্তৃপক্ষের টানাপড়েন শুরু হয়। আইসিএফ-এর তৈরি রেক নিয়ে রেলবোর্ডের চেয়ারম্যান বিনোদকুমার যাদবের কাছেও অভিযোগ জানান মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

ইতিমধ্যে এপ্রিলে আইসিএফ থেকে আসা প্রথম এবং দ্বিতীয় রেকটিতে যাত্রী পরিবহণ শুরু করা হয়। কিছু দিনের মধ্যে তৃতীয় রেকটিকেও যাত্রী পরিবহণের কাজে লাগানো হয়। ছাদ থেকে জল পড়া ছাড়াও কামরার দরজা এবং ব্রেক নিয়ে অভিযোগ উঠছিল। তা সত্ত্বেও গরমের কথা ভেবে দুপুরে মেট্রো কর্তৃপক্ষ নতুন রেকগুলি চালাচ্ছিলেন। আইসিএফ-এর তৈরি তিনটি নতুন রেক মোটামুটি চলায় পাঁচ নম্বর রেক ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক ভাবে দ্বিধায় ছিলেন। এ দিকে, আইসিএফ কর্তৃপক্ষও কলকাতায় লোক পাঠিয়ে রেকের ত্রুটি সারানোর প্রস্তাব দেন। মেট্রো কর্তৃপক্ষ তাতে সায় না দিলেও জুনের প্রথম সপ্তাহে রেক ফেরত পাঠানোর বিষয়টি সাময়িক ভাবে স্থগিত হয়।

Advertisement

গত ১০ জুন শোভাবাজার স্টেশনে আইসিএফ-এর তিন নম্বর রেকের কারণে মেট্রোয় বড়সড় বিপত্তি ঘটে। শোভাবাজার থেকে দমদম পর্যন্ত বিস্তীর্ণ মেট্রোপথের থার্ড রেল থেকে বিদ্যুৎ চলে যায়। সন্ধ্যা থেকে রাতের মধ্যে প্রায় চার ঘণ্টা মেট্রো চলাচল ব্যাহত হয় সে দিন। ওই ঘটনার পরে বিরক্ত কর্তৃপক্ষ রেকের ত্রুটি নিয়ে আইসিএফ কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সপ্তাহখানেকের চেষ্টায়, চেন্নাইয়ের কারখানার প্রযুক্তিবিদদের সাহায্য নিয়ে সেটিকে আপাতত সারানো হয়েছে। চলতি সপ্তাহে ওই রেক যাত্রী পরিবহণ শুরু করেছে। বারবার চেন্নাইয়ের সংস্থার তৈরি রেক নিয়ে সমস্যা হওয়ায় ক্ষুব্ধ মেট্রো কর্তারা। এ প্রসঙ্গে এক কর্তা বলেন, ‘‘এত রকমের সমস্যা ধরে ধরে আমাদের কারশেডে মেরামতি করা সম্ভব নয়। আইসিএফ কর্তৃপক্ষকে অনেক বার সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। ওঁদের টালবাহানায় আমরা ক্লান্ত। এ বারে রেক ফেরত পাঠানো ছাড়া উপায় ছিল না।’’

মেট্রো সূত্রের খবর, পূর্ব রেলের ইঞ্জিন এবং মেট্রোর কোচের কাপলিংয়ের মাপ আলাদা। সে জন্য দু’টি আলাদা ‘কনভার্টার’ কোচ ব্যবহার করেছেন তাঁরা। ওই কোচের এক দিকে রেলের, অন্য দিকে মেট্রোর কাপলিং বসানো। ওই ‘কনভার্টার’ কোচ পাঁচ নম্বর রেকটিকে চেন্নাইয়ে পৌঁছে ফেরত না আসা পর্যন্ত চার নম্বর রেকটিকে ফেরানো যাবে না। আপাতত তাই চার নম্বর রেক কারশেডে থাকবে। পাশাপাশি, দিন কয়েক আগে চেন্নাই থেকে এসে পৌঁছনো ছ’নম্বর রেকটির ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন