মেট্রো থেকে নবান্ন, ভূমিকম্পে বেহাল নগর-জীবন।
নানা কারণে অনেক সময়েই প্ল্যাটফর্মে মেট্রো বন্ধের ঘোষণা শোনা যায়। কখনও যান্ত্রিক গোলযোগে, কখনও বা কেউ মেট্রোর লাইনে ‘ঝাঁপ’ দিলে। তবে আজকের ঘোষণার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না কোনও যাত্রী। হয়তো তখন কেউ কেউ সামান্য বুঝতে পেরেছিলেন। তবে নিশ্চিত হতে পারেননি। হঠাৎ স্টেশনে মাইক্রোফোনে ঘোষণা, ‘‘ভূমিকম্পের জন্য আপাতত বন্ধ থাকছে মেট্রো চলাচল।’’ যাত্রীদের মেট্রোর কামরা থেকে বেরিয়ে প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়াতে বলা হয়। আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করতেও বারণ করা হয় তাঁদের। সব মিলিয়ে ভূমিকম্পের জেরে এ দিন এক ঘণ্টা বন্ধ থাকে মেট্রো চলাচল।
ঘটনাটি শনিবার সকাল ১১টা ৪৮ মিনিটের। প্রত্যেক স্টেশনে তখন যাত্রীরা অপেক্ষমান। টিকিট ঘরগুলির সামনে লম্বা লাইন। তারই মধ্যে ওই ঘোষণায় বিস্মিত হন যাত্রীরা। সেই ঘোর কাটিয়ে অনেকে প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়ান। তবে সবাই অবশ্য নন। অনেকেই বসেছিলেন ট্রেনের ভিতরে। কেউ কেউ আবার পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছিলেন। এক সময়ে যাত্রীদের স্টেশন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথাও বলা হয়।
এ দিন কলকাতার আশপাশে বিভিন্ন এলাকায় পুর-নির্বাচন থাকলেও, ভূমিকম্পের সময়ে উত্তর ও দক্ষিণ সব দিকেই মেট্রোতে বেশ ভিড় ছিল। মহাত্মা গাঁধী রোড স্টেশনে যাওয়ার জন্য শ্যামবাজারে মেট্রোয় ঢুকেছিলেন দীনেশ মোদী নামে এক যাত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘আচমকাই কম্পন টের পেলাম। ভয় হল, ছাদটা ভেঙে পড়বে না তো!’’ একই অভি়জ্ঞতা কালীঘাট থেকে মেট্রোয় ওঠা রাজর্ষি চক্রবর্তীও। চাঁদনি চকে যাবেন বলে স্টেশনে ঢুকেই ভূমিকম্পের ঘোষণা শোনেন। তাঁর কথায়, ‘‘বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলার জন্য ফোনে টাওয়ারও ছিল না। তখন সত্যিই খুব অসহায় লাগছিল।’’
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র জানান, কন্ট্রোল রুম থেকে তাঁরা বিষয়টি জানার পরে সব স্টেশনে খবর দেন। চলন্ত সব ট্রেনকেই নিকটবর্তী স্টেশনে থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়। মেট্রো সূত্রে খবর, এ দিন দু’বার কম্পন টের পাওয়ার পরে মেট্রো পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। কর্তৃপক্ষের দাবি, ফের যাত্রী পরিষেবা শুরু করার আগে একটি ট্রায়াল ট্রেন (যাত্রী ছাড়া) চালানো হয়। কোথাও সমস্যা নেই বলে নিশ্চিত হওয়ার পরেই যাত্রী-ট্রেন আবার চালানো শুরু হয়। রবিবাবুর দাবি, ১২টা ৫০ মিনিটে মেট্রো পরিষেবা ফের স্বাভাবিক হয়।