স্কুলছুট রুখতে এ বার কলকাতা পুরসভার ডে-বোর্ডিং

লাটে উঠতে বসা কলকাতা পুরসভা পরিচালিত সেই স্কুলকে চাঙ্গা করতে নতুন দাওয়াই দিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। যদিও তার খরচ লক্ষাধিক। তবে তা জলে যাবে না বলেই বিশ্বাস করছেন কর্তৃপক্ষ

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৭
Share:

ফাইল চিত্র।

স্কুল ছিল নামেই। পড়ুয়া প্রায় ছিল না বললেই চলে। লাটে উঠতে বসা কলকাতা পুরসভা পরিচালিত সেই স্কুলকে চাঙ্গা করতে নতুন দাওয়াই দিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। যদিও তার খরচ লক্ষাধিক। তবে তা জলে যাবে না বলেই বিশ্বাস করছেন কর্তৃপক্ষ। তাঁদের ব্যাখ্যা, সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, ওই এলাকায় পড়ুয়ার অভাব হওয়ার কথা নয়। অতএব নতুন দাওয়াই বৃথা যাবে না।

Advertisement

কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, এক নম্বর ওয়ার্ডের কাশীপুর এলাকার সেই পুর প্রাথমিক স্কুলটি ৪/১ এ কাশীশ্বর চ্যাটার্জি লেনে দীর্ঘকাল ভাড়াবাড়িতে চলছিল। কিছু কাল আগে মালিকের কাছ থেকে ৩৫ লক্ষ টাকায় পুরসভা বাড়িটি কিনে নেয়। সেটিকে তিনতলা ভবন করার পরিকল্পনা রয়েছে পুরসভার। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, ১০০ জন পড়ুয়াকে নিয়ে ডে-বোর্ডিং স্কুল শুরু করা হবে সেখানে। পুরসভার শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, সকাল আটটা থেকে সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত ওই স্কুল খোলা থাকবে। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলো এবং আঁকার মতো সৃজনশীল কাজে ছোটদের উৎসাহ বাড়ানোর কাজ করা হবে সেখানে। থাকবে খাওয়ার ব্যবস্থাও। সকালের জলখাবার, দুপুরের খাবার, বিকেলের টিফিন, সবই দেওয়া হবে। এ সবের খরচ বহন করবে কলকাতা পুরসভা।

পুর শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানান, পুরনো বিল্ডিং নতুন করে গড়ার জন্য নকশা হচ্ছে। কলকাতা পুরসভার এক নম্বর বরোর ইঞ্জিনিয়ারেরা বাড়ির নকশা তৈরি করার পরে তা বিল্ডিং দফতরে যাবে। সেখান থেকে অনুমোদন মিললেই মেয়র পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি তোলা হবে। বরো চেয়ারম্যান তরুণ সাহা বলেন, ‘‘এক নম্বর বরোয় সর্বশিক্ষা মিশনের ছ’টি আবাসিক স্কুল রয়েছে। সেখানে মূলত পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। আগে ওই স্কুলগুলো আবাসিক ছিল না। স্কুলছুটের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ায় তা আবাসিকে পরিণত করা হয়েছে। এর ফলে পড়ুয়ার সংখ্যাও বেড়েছে।’’ পুরসভার শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এখন বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কারণে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পরে অনেকেই পড়াশোনা ছাড়ে না। এ বার তাই প্রাথমিকেও পড়ুয়া ধরে রাখতে ডে-বোর্ডিং চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। ওখান থেকে পাশ করা পড়ুয়ারা এলাকারই আবাসিক স্কুলে ভর্তির সুযোগ পাবে।

Advertisement

মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় জানান, বেশ কিছু কাল ধরে দেখা যাচ্ছিল, পুরসভা পরিচালিত বিভিন্ন স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ক্রমেই কমছে। কারণ জানতে পুরসভার শিক্ষা দফতরের তরফে সমীক্ষা করে দেখা যায়, ওই স্কুলে পড়ার জন্য এলাকায় পড়ুয়ার অভাব নেই। কিন্তু তাদেরকে ধরে রাখাটাই মূল সমস্যা। তিনি বলেন, ‘‘ওদের ধরে রাখতেই এই সিদ্ধান্ত। এই ব্যবস্থা চালু হলে প্রাথমিকে স্কুলছুট আটকানো যাবে বলেই বিশ্বাস করি। ইচ্ছে রয়েছে আগামী মার্চ থেকেই তা চালু করার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন