ফাইল চিত্র।
ডেঙ্গি-বিরোধী লড়াইয়ে যে পুজো কমিটি যত ভাল কাজ করবে, তাদের জুটবে বিশেষ সম্মান। কলকাতা পুরসভা এ বছর থেকে চালু করছে এই প্রতিযোগিতা।
উৎকর্ষের নিরিখে সেরা পুজোকে শারদ সম্মান দেওয়ার প্রতিযোগিতা বছর বছর বেড়েই চলেছে। তারই মধ্যে এ বার ঢুকে পড়ল ‘স্বাস্থ্য-বান্ধব শারদ সম্মান’। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, ডেঙ্গিবাহী মশা নিধন কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে শহরের পুজো কমিটিগুলিও যাতে সচেতনতার প্রচারে নামে, তার জন্যই এই পরিকল্পনা। পুরসভা সূত্রের খবর, গত মার্চে প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের চিঠি দিয়ে অনুরোধ করা হয়েছিল, তাঁরা যেন নিজেদের ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গি-বিরোধী প্রচার চালান। কিন্তু সেই আবেদনে তেমন সাড়া মেলেনি। আর মাসখানেক পরেই পুজো। পুর অফিসারদের আশঙ্কা, শহরের সিংহভাগ কাউন্সিলরই তখন পুজো নিয়ে মেতে উঠবেন। ফলে শিকেয় উঠবে ডেঙ্গি প্রতিরোধ কর্মসূচি। তাই সুকৌশলে পুজোর সঙ্গে ডেঙ্গি প্রতিরোধের অভিযানকে যুক্ত করা হচ্ছে। যাতে কিছুটা হলেও পুজোর আগে থেকে কিছুটা অন্তত সজাগ থাকেন এলাকার পুর প্রতিনিধিরা।
কী পরিকল্পনা হয়েছে স্বাস্থ্য-বান্ধব শারদ সম্মান নিয়ে? পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের উপদেষ্টা তপন মুখোপাধ্যায় জানান, কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ড রয়েছে ১৬টি বরোর মধ্যে। দু’টি করে বরো নিয়ে হচ্ছে এক-একটি জোন। প্রতিটি জোনে তিনটি করে পুজো কমিটিকে সেরা পুজোর সম্মান দেওয়া হবে। কোনও পুজো সেরা হতে চাইলে কী করণীয়? শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠিই বা কী?
অতীনবাবু জানান, পুজো কমিটিগুলি আবেদন জানাতে পারবে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড অফিসে। পূরণ করা আবেদনপত্র জমা পড়ার পরে সেই ওয়ার্ডের ভেক্টর কন্ট্রোল অফিসার, মেডিক্যাল অফিসার এবং জঞ্জাল অপসারণ দফতরের আধিকারিকেরা বিচারক হিসেবে মণ্ডপে যাবেন। সেখানে জল বা জঞ্জাল জমে রয়েছে কি না দেখা হবে। মণ্ডপ চত্বর কতটা পরিষ্কার, বাঁশের খোপে জল জমেছে রয়েছে কি না, সে সবও খুঁটিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি, যে এলাকায় পুজো, সেখানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে অন্তত দু’দিন ধরে ডেঙ্গি প্রতিরোধে সচেতনতার প্রচার করতে হবে পুজো কমিটিগুলিকে। করতে হবে একটি শিবিরও।
পুর প্রশাসন ঠিক করেছে, ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। ৪ এবং ৫ অক্টোবর বাড়ি বাড়ি প্রচার এবং ৭ অক্টোবর ডেঙ্গি সচেতনতায় শিবির করতে হবে। প্রচারের কাজে সুবিধার জন্য লিফলেট বা ব্যানার— সবই দেবে পুরসভা। বাস্তবে তা করা হচ্ছে কি না, তার প্রমাণ হিসেবে পুরো কর্মসূচির ভিডিও রেকর্ডিং করে জমা দিতে হবে পুরসভায়। পুজো এগিয়ে এলে পুরসভার বিচারকেরা দেখতে যাবেন মণ্ডপ। সব কিছুর জন্য থাকবে ১০০ নম্বর। ১১ অক্টোবর পঞ্চমীর দিন পরিদর্শনের পরে ঘোষিত হবে ফলাফল। সেরা দশটি পুজো কমিটিকে ওই স্বাস্থ্য-বান্ধব শারদ সম্মান দেওয়া হবে।