দুর্ঘটনার পরে সেই বাইক। —নিজস্ব চিত্র।
দুর্যোগের ৭২ ঘণ্টা পরেও আলোহীন দমদম রোড। শুক্রবার গভীর রাতে সেই রাস্তাতেই লরির ধাক্কায় গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি দুই বাইক আরোহী।
শুক্রবার গভীর রাতে দমদম রোড ধরে উল্টোডাঙার বাড়িতে ফিরছিলেন তন্ময় দাস এবং তাঁর বন্ধু চঞ্চল সামন্ত। তন্ময় মোটরবাইকটি চালাচ্ছিলেন। পিছনে বসেছিলেন চঞ্চল। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মধুগড়ের বাসিন্দা নারায়ণ ঠাকুর জানান, সাইকেল নিয়ে তন্ময়ের বাইকের একটু পিছনে ছিলেন তিনি। বাইকের গতি খুব বেশি ছিল না। নারায়ণের কথায়, ‘‘একটি অ্যাপ-ক্যাব বাইকের বাঁ দিক দিয়ে দ্রুত গতিতে বেরিয়ে যায়। তাতে রাস্তার মাঝ বরাবর চলে আসে তন্ময়ের বাইক। সেই সময়ে উল্টোদিক থেকে আসা একটি সিমেন্টের লরি বাইকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়।’’ লরির ধাক্কায় দু’জনেরই শরীরের ডান দিকের অংশে চোট লাগে। দু’জনেরই মাথায় হেলমেট ছিল। তন্ময়ের ডান পায়ের হাঁটুর মাংসপিণ্ড বেরিয়ে আসে। প্রায় আধ ঘণ্টা রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকার পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে তাঁদের আর জি করে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে পরে দু’জনকে বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়েছে।
শনিবার তন্ময়ের বাবা তপন দাস বলেন, ‘‘ছেলের ডান দিকের হাঁটুর চোট গুরুতর। সোমবার অস্ত্রোপচার হবে। এক মাস পরে আরও একটি অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা।’’ চঞ্চলের ডান পায়ে চোট লাগলেও এখনই অস্ত্রোপচারের কথা চিকিৎসক কিছু বলেননি বলে জানিয়েছেন কাকা প্রদীপ সামন্ত।
মঙ্গলবার ঝড়ের পর থেকে দমদম রোড, যশোর রোডের বেশ কিছু অংশে রাস্তার ধারের আলো জ্বলছে না। শুক্রবার রাত ১টা নাগাদ দুর্ঘটনার জন্য আলোহীন রাস্তার পাশাপাশি বেপরোয়া লরির গতিকে দায়ী করলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। নারায়ণের কথায়, ‘‘একে অন্ধকার, তার উপরে লরির আলোও জ্বলছিল না। অন্ধকারে আমিই তো কিছু দেখতে পাচ্ছিলাম না।’’ স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন সর্দার বলেন, ‘‘অন্ধকারের জন্যই দুর্ঘটনা ঘটেছে। আলো জ্বললে লরি দেখে বাইক আরোহী নিজেকে সামলে নিতে পারতেন।’’ ঘুঘুডাঙা ফাঁড়ি থেকে ঘটনাস্থলের দূরত্ব খুব বেশি নয়। স্থানীয় এক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘রাতে দমদম রোডে বেপরোয়া গাড়ির চলাচল দিন দিন বাড়ছে। পুলিশ প্রশাসনের নজর দেওয়া দরকার।’’
দক্ষিণ দমদমের পুর প্রধান বলেন, ‘‘ওই এলাকায় গাছ পড়ে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে বড় বিপর্যয় ঘটে। তাই রাস্তার আলো জ্বলছে না। কাজ চলছে, দ্রুত সমস্যা কেটে যাবে।’’