মর্মান্তিক: মৃত শিশুর দেহ বের করে আনছে পুলিশ। সামনে বিক্ষুব্ধ পরিজনেরা। রবিবার, এসএসকেএম হাসপাতাল চত্বরে। নিজস্ব চিত্র
চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে শিশুমৃত্যুকে কেন্দ্র করে রবিবার সকালে উত্তেজনা ছড়াল এসএসকেএম হাসপাতালে। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে চিৎকার শুরু করেন রোগীর পরিজনেরা। অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের মারধরও করে। পরিস্থিতি সামলাতে হাসপাতাল চত্বরে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। মৃত শিশুর পরিবারের তরফে ভবানীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রের খবর, বেহালার চণ্ডীতলার বাসিন্দা সন্তু মল্লিকের ন’মাসের মেয়ে শুভাঙ্খির কপালে ছোট ফোড়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার থেকে জ্বরও শুরু হয়। শুভাঙ্খির মাসি টুম্পা দে জানান, জ্বর না কমায় শুক্রবার শিশুটিকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনিই তাকে এসএসকেএমে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। টুম্পা বলেন, ‘‘শনিবার সন্ধ্যায় শুভাঙ্খিকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানকার ডাক্তারেরা ওষুধ দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। রাতে বাড়াবাড়ি হওয়ায় রবিবার ফের ওকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। কিন্তু শিশু বিভাগে ভর্তি করানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ও মারা যায়।’’ শুভাঙ্খির পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘‘শনিবার রাতেই শিশুটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখে ভর্তির ব্যবস্থা করলে হয়তো এমন ঘটনা এড়ানো যেত।’’
এ দিন শুভাঙ্খি মারা যাওয়ার পরে তার পরিবারের লোকজন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে চিৎকার শুরু করেন। অভিযোগ, শিশুটির আত্মীয়দের পুলিশ মারধরও করে। টুম্পার অভিযোগ, ‘‘সকালে আমার কোলেই মেয়েটা ছিল। ডাক্তারবাবুরা স্যালাইন দেওয়ার জন্য চ্যানেল করতে গিয়ে বাচ্চাটির হাতে একের পর এক সূচ ফোটাচ্ছিলেন। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ও মারা যায়। যে ডাক্তারবাবুরা শুভাঙ্খিকে দেখছিলেন, তাঁদের নাম জিজ্ঞাসা করতেই উল্টে পুলিশ তেড়ে এসে আমাকে মারধর করে।’’ শুভাঙ্খির মা ঝুম্পার অভিযোগ, ‘‘ডাক্তারবাবুদের গাফিলতিতেই অকালে মেয়েকে হারালাম। এর বিচার চাই। দোষী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক হাসপাতাল।’’
ডিসি (দক্ষিণ) মিরাজ খালিদ বলেন, ‘‘মৃত শিশুর পরিবারের তরফে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে।’’ যদিও শিশুটির আত্মীয়দের মারধরের অভিযোগ প্রসঙ্গে ডিসি মন্তব্য করতে চাননি। এসএসকেএমের অধিকর্তা অজয় রায় বলেন, ‘‘শিশুটি কী ভাবে মারা গেল, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চিকিৎসকের গাফিলতি প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’