মোবাইল ছিনতাই চক্রের ৫ জন ধৃত

বুধবার কামারহাটি থেকে তিন যুবক ও দুই কিশোরকে গ্রেফতারের পরে মোবাইল ছিনতাইয়ের এমনই কায়দার কথা জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৮ ০০:৫৯
Share:

ভিড়ে ঠাসা এলাকায় দামী মোবাইল নিয়ে কথা বলতে বলতে হাঁটছেন এক ব্যক্তি। তাঁকে অনুসরণ করছে আরও পাঁচ জন। ওই ব্যক্তি পকেটে মোবাইলটি ঢোকাতেই তাঁর সামনে চলে গেল এক যুবক। দু’জন চলে গেল ওই ব্যক্তির পিছনে। আচমকাই এক ধাক্কায় ওই ব্যক্তি হুমড়ি খেয়ে পড়লেন সামনের যুবকের উপর। পিছনের যুবকেরা যখন তাঁকে উঠতে সাহায্য করছে তখনই পাশে চলে আসছে দুই কিশোর। কেউ কিছু বোঝার আগেই ওই ব্যক্তির পকেট থেকে মোবাইল তুলে নিয়ে ভিড়ে মিশে যাচ্ছে তারা।

Advertisement

বুধবার কামারহাটি থেকে তিন যুবক ও দুই কিশোরকে গ্রেফতারের পরে মোবাইল ছিনতাইয়ের এমনই কায়দার কথা জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের দাবি, এটি আন্তঃরাজ্য মোবাইল ছিনতাইয়ের দল। পুলিশ জানায়, ধৃতেরা হল লখনউয়ের কৌশল রাওয়ত, ঝাড়খন্ডের জেলার যুগেশ্বর নোনিয়া, রাহুল কুমার, হরিদর্শন কুমার এবং ধানবাদের বিকাশ কুমার। এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘জেরায় জানা গিয়েছে, দলের পান্ডা কৌশল। সে-ই ছেলেদের জোগাড় করেছিল। ছিনতাই করা
মোবাইল তারা বেচত লখনউয়ে।’’

পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে কামারহাটি আনন্দময়ীনগর এলাকায় যে বাড়িতে ওই পাঁচ জন থাকত, সেখানে হানা দেয় পুলিশ। বাড়ির মালিক পুলিশকে জানান, দু’মাস আগে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড দেখিয়ে ঘর ভাড়া নিয়েছে কৌশলেরা। তারা প্রত্যেকেই কলকাতার বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থায় কাজ করে বলে জানিয়েছিল। এর পরেই তদন্তকারীরা পাঁচ জনকে জেরা শুরু করেন। এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘সন্দেহ হওয়ায় একটি ব্যাগ খুলে কয়েকটি মোবাইল মেলে। এর পরে আরও চারটি ব্যাগ থেকে ৩১টি মোবাইল উদ্ধার হয়।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতেরা জেরায় জানিয়েছে, ভিড়ে ঠাসা মেট্রো স্টেশন, বাস স্টপ, রেলস্টেশন এবং ফেরি ঘাটই ছিল তাদের লক্ষ্য। প্রতিদিন সকালে পাঁচ জন মিলে যে কোনও একটা জায়গায় পৌঁছে যেত। কোনও ব্যক্তিকে ঘিরে ধরার কাজ করত যুগেশ্বর ও রাহুল। পিছনে থাকত কৌশল। শিকার হুমড়ি খেয়ে পড়লেই তাঁর দু’পাশে চলে আসত হরিদর্শন ও বিকাশ। ওই দু’জনই মোবাইল হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দিত। বেগতিক বুঝলে তাদের থেকে মোবাইল নিয়ে নিত কৌশল। জেরায় জানা গিয়েছে, দিনে ৩-৪টি মোবাইল ছিনতাই করত তারা। বেশ কিছু মোবাইল জমার পরে তারা সেগুলি লখনউ বেচে আসত।

তদন্তকারীরা জানান, মোবাইল বিক্রির পরে সেই টাকা সকলের মধ্যে ভাগ হত। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বেশির ভাগ মোবাইল বাগুইআটি, বারাসত, শোভাবাজার ও উত্তর কলকাতার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছিনতাই করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েক জন দোকান মালিককে চিহ্নিত করে মোবাইল ফেরৎ দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন