বেআইনি মদের নিয়মিত জোগানে আছে বড় চক্র

মূলত খালি হাতে যান। জামাকাপড়, ইলেকট্রনিক্স দ্রব্য নিয়ে ফেরেন। বিমানবন্দরে এঁদের ‘ক্যারিয়ার’ বলা হয়।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৮ ০৩:১৫
Share:

কলকাতা থেকে নিয়মিত ব্যাঙ্কক, সিঙ্গাপুর, হংকং, ঢাকা যাতায়াত করেন এঁরা।

Advertisement

মূলত খালি হাতে যান। জামাকাপড়, ইলেকট্রনিক্স দ্রব্য নিয়ে ফেরেন। বিমানবন্দরে এঁদের ‘ক্যারিয়ার’ বলা হয়। প্রধানত, ব্যাঙ্কক, সিঙ্গাপুরের উড়ান এঁরাই ভরিয়ে রাখেন। মাসে দু’-তিন বারও যাতায়াত করেন কেউ কেউ।

কেউ থাকেন কলকাতার খিদিরপুরে, কেউ বিমানবন্দরের কাছে। কেউ বা বিরাটিতে। আবার বিহার ও উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের অনেক যুবকও এই কাজে যুক্ত। নিয়ম অনুযায়ী, বিদেশ থেকে আসার সময়ে যে কোনও প্রাপ্তবয়স্ক যাত্রী বিমানবন্দরের ডিউটি ফ্রি শপ থেকে সর্বোচ্চ ২ লিটার বিদেশি মদ কিনতে পারেন। বাজার থেকে যার দাম অনেকটাই কম।

Advertisement

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এই ‘ক্যারিয়ার’ যুবকেরাও ফেরার সময়ে দু’লিটার করে বিদেশি মদ নিয়ে আসেন। এক এক দফায় দশ-কুড়ি জন যুবক এক সঙ্গে যাতায়াত করেন। যার অর্থ, এক দল কেরিয়ার ফেরার সময়ে ২০ থেকে ৪০ বোতল বিদেশি মদ নিয়ে আসছেন। তাও মাসে কমপক্ষে দু’বার।

রাজ্য আবগারি দফতরের অফিসারদের সন্দেহ, বিদেশ থেকে আসা এই সস্তার মদই বেআইনি ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে শহরের হোটেলে। এক দল ব্যবসায়ী কেরিয়ারদের দিয়ে ওই মদ আনান। কেরিয়ারেরা কিছু টাকার বিনিময়ে ওই মদ তুলে দেন সেই ব্যবসায়ীদের হাতে। ওই ব্যবসায়ীরাই তা ছড়িয়ে দেন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে।

আবগারি অফিসারেরা জানিয়েছেন, এত দিন ছোটখাটো পার্টিতে, কখনও হুকা বারে বেআইনি ভাবে সরবরাহ করা হত এই বেআইনি ভাবে আনা বিদেশি মদ। সম্প্রতি তা পাওয়া গিয়েছে শহরের একটি নামকরা হোটেলেও। এর আগে সোমবার রাতে রাজ্যের আবগারি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিদেশি মদ বিক্রির অভিযোগে ওই হোটেলের এক ম্যানেজারকে গ্রেফতার করে আবগারি দফতর। মঙ্গলবার ওই হোটেলের আরও দুই ম্যানেজার গ্রেফতার হন। তাঁরা তিন জনেই অবশ্য জামিন পেয়ে গিয়েছেন।

আবগারি অফিসারদের কথায়, এই ডিউটি ফ্রি বা শুল্ক ছাড়ের মদ কিনে এনে কেউ ব্যক্তিগত ভাবে বন্ধু-আত্মীয়দের নিয়ে বাড়িতে বসে খেলে অসুবিধা নেই। কিন্তু কোনও অনুষ্ঠান বাড়ি ভাড়া করেও এই মদ খাওয়া বেআইনি। এ দিকে, অভিযুক্ত এই নামী হোটেলে তো রীতিমতো বিক্রি করা হচ্ছিল ওই মদ।

ওই হোটেলের যে চারটি বার রয়েছে, সেগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ রয়েছে নাইটক্লাবটিও। এই নাইটক্লাবেই শনিবার রাতে হানা দিয়ে ওই ডিউটি ফ্রি শপের ৮৩ বোতল মদ বাজেয়াপ্ত করেন আবগারি অফিসারেরা। দফতরের কর্তাদের ধারণা, শুধু নাইটক্লাবে নয়, হোটেলের অন্য বারেও ওই মদ সরবরাহ হত। সে কারণেই বারগুলিও আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন