—ফাইল চিত্র।
খুনের মামলার তদন্তে চিরকালই সুনাম রয়েছে লালবাজারের। কিন্তু দশ বছর আগে গড়িয়াহাটে এক মহিলার খুনের ঘটনার তদন্তে সেই গোয়েন্দাদের কাজ নিয়েই প্রশ্ন তুললেন বিচারক। যথেষ্ট প্রমাণ না থাকায় ঊষা চোখানিকে (৫৪) খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত কিষণলাল যাদবকে বেকসুর খালাস করেছেন আলিপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক।
আদালত জানিয়েছে, খুনের সময়ে ঘটনাস্থলে কিষণ উপস্থিত ছিলেন কি না, তার প্রমাণ মেলেনি। যে কাঁচি দিয়ে তিনি খুন করেছিলেন বলে অভিযোগ, তাতেও কোনও রক্তের দাগ মেলেনি। কিষণের জামার তিনটি বোতাম ছেঁড়ার কথা তদন্তকারীরা জানালেও প্রমাণ হিসেবে মাত্র একটি বোতাম দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তের দুই আইনজীবী শুভময় সমাদ্দার এবং কোয়েল মোদক জানান, তদন্ত ও সাক্ষ্যপ্রমাণে বিভিন্ন ফাঁকের উল্লেখ করেছে ওই আদালত। পুলিশ এমন কোনও সাক্ষী বা প্রমাণ আদালতে পেশ করতে পারেনি, যা থেকে প্রমাণ হয় যে, কোনও লাভের জন্য ঊষাদেবীকে খুন করেছে কিষণ।
লালবাজারের কর্তাদের দাবি, এই মামলার রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন তাঁরা। এক গোয়েন্দাকর্তা বলেন, ‘‘এই সব প্রমাণের ভিত্তিতেই একাধিক বার কিষণের জামিনের আর্জি খারিজ করেছিল হাইকোর্ট।’’ তবে লালবাজারের অন্দরে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে এমন ভুল হল কী করে, তা নিয়ে। কিষণ নির্দোষ হলে ঊষাদেবীকে খুন কে করল, তা নিয়েও ধন্দ তৈরি হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, লালবাজার যেহেতু হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে, তাই এখনই এই ঘটনার নতুন করে তদন্তের সম্ভাবনা নেই। আলিপুর আদালতও এ নিয়ে কোনও নির্দেশ দেয়নি। লালবাজার সূত্রে খবর, এই তদন্তে নিজেদের কী কী গাফিলতি রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে। তার পরেই স্থির হবে পরবর্তী পদক্ষেপ।
২০০৮ সালে ম্যান্ডেভিলা গার্ডেনের একটি আবাসন থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বাসিন্দা ঊষা চোখানিকে। তাঁর দেহে প্রায় ২৬টি ধারাল বস্তুর আঘাত ছিল।