Police

সাত বছরের খুদে ‘গোয়েন্দা’র কেরামতিতে জালে দাগী চোর

নিয়াজের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বাঁশদ্রোণী থানার পুলিশ। কিন্তু, ঘটনাস্থলে তদন্ত করেও খুব কার্যকরী সূত্র পেতে ব্যর্থ হন তদন্তকারীরা, যা দিয়ে চোরের নাগাল পাওয়া যেতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৮ ২১:২৮
Share:

উদ্ধার হওয়া গয়না। নিজস্ব চিত্র।

সাত বছরের একরত্তি ছেলে। ক্লাস টু-তে ক’দিন আগেই উঠেছে। আর তার জন্যই রাত ভোর হওয়ার আগেই বমাল ধরা পড়ল দাগী চোর।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাত ন’টা নাগাদ কামডহরি পূর্বপাড়ার বাসিন্দা নিয়াজ হোসেন হাজির হন বাঁশদ্রোণী থানাতে। রাজারহাটের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থার প্রোজেক্ট ম্যানেজার নিয়াজ সপরিবারে গত ২১ মে বীরভূমের সিউড়িতে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন। ফিরে দেখেন, তিন তলায় তার ফ্ল্যাটের কোলাপসিবল গেটের তালা ভাঙা। ঘরের ভিতর ঢুকে দেখেন গোটা ঘর লন্ডভন্ড। আলমারির তালাও ভাঙা। লকার থেকে উধাও প্রায় তিন লাখ টাকার গয়না।

নিয়াজের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বাঁশদ্রোণী থানার পুলিশ। কিন্তু, ঘটনাস্থলে তদন্ত করেও খুব কার্যকরী সূত্র পেতে ব্যর্থ হন তদন্তকারীরা, যা দিয়ে চোরের নাগাল পাওয়া যেতে পারে।

Advertisement

অফিসাররা যখন নিয়াজের বাড়ি থেকে থানায় ফেরার তোড়জোড় করছেন, তখনই উল্টো দিকের বাড়ি থেকে উঁকি মারছিল একটি খুদের উৎসুক মুখ। এক তদন্তকারী বলেন, “ওর মুখ দেখেই মনে হচ্ছিল কিছু বলতে চাইছে।” তার পর সেই সাত বছরের বালকের অভিভাবকের অনুমতি নিয়ে তদন্তকারীরা আলাদা করে কথা বলেন। আর সেখান থেকেই জানা যায়, ওই ২১ মে, যে দিন নিয়াজ সিউড়ি গিয়েছিলেন, সেই দিনই বিকেলে খেলার শেষে মাঠ থেকে ফেরার সময় এক জনকে নিয়াজের বাড়ির পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢুকতে দেখে ওই ছেলে। আর তখনই তার সন্দেহ হয়েছিল। পাশের বাড়িতে চুরির খবর জানার পর থেকেই পুলিশ কাকুদের সে যা দেখেছে তা বলার ইচ্ছে ছিল। তাই পুলিশ দেখেই উৎসুক মুখে উঁকিঝুকি।

আরও পড়ুন: ফের সেই মেট্রো, এ বার দুই মহিলার চুলোচুলি গড়াল থানা পর্যন্ত

এরই মধ্যে দূরে রাস্তার মোড়ে বসানো একটা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার উপর নজর পড়ে তদন্তকারীদের। একরত্তির দেওয়া তথ্যর উপর ভিত্তি করেই, পাঁচিল টপকানোর আগে-পরের সময় ধরে শুরু হয় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা। আর সেটা দেখতে গিয়েই আবছা দেখা যায়, সন্ধ্যার অন্ধকারে এক জন নিয়াজের বাড়ির সদর দরজা খুলে সন্তর্পণে বেরোচ্ছে। ওই আবছা ছবি দেখেও দুঁদে গোয়েন্দাদের বুঝতে অসুবিধা হয়নি, ওই ছায়ামূর্তি দাগী চোর সুভাষগ্রামের সুরজিৎ অধিকারী বা ল্যাঙড়া গৌতমের। আসামী চিহ্নিত হতেই শুরু হয়ে যায় তল্লাশি। এপ্রিল মাসের শেষেই জেল থেকে ছাড়া পাওয়া গৌতমের বারুইপুর, সুভাষগ্রাম, আক্রা-সন্তোষপুর—সব ক’টা ডেরাতেই শুরু হয় তল্লাশি। শেষ পর্যন্ত রাত ভোর হওয়ার আগেই তদন্তকারীরা আক্রাতে গৌতমের হদিশ পায় তার শাশুড়ির বাপের বাড়িতে। সাতসকালেই চুরির সব মাল-সহ ধরা পড়ে গৌতম। পুলিশ কাকুরাও স্বীকার করছেন ওই খুদে গোয়েন্দার কেরামতিতেই এক রাতের ধরা পড়েছে চোর।

আরও পড়ুন: শৌচাগারে কিশোরীর ছবি তুলে ধৃত ‘কাকু’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন