এলাকা দখল ঘিরে গুলি কসবায়

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতে কাঁকুলিয়ার ৪এ, জগন্নাথ ঘোষ রোডের বাসিন্দাদের একাংশ পাশের পাড়া বৈকুণ্ঠ ঘোষ রোডে শীতলা পুজোয় ব্যস্ত ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৮ ০২:২৬
Share:

হামলার পরে রাস্তায় পড়ে রয়েছে ভাঙা বোতল। শুক্রবার, কসবায়। নিজস্ব চিত্র

এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে ফের গুলি চলার অভিযোগ উঠল। এ বারের ঘটনাস্থল কসবা থানার কাঁকুলিয়ার জগন্নাথ ঘোষ রোড। বৃহস্পতিবার রাতের ওই ঘটনায় জখম হয়েছেন অমরদীপ সিংহ ও প্রদীপ হালদার নামে স্থানীয় দুই বাসিন্দা। অভিযোগ, অমরদীপের পেটে গুলি লাগে। প্রদীপের মুখে রিভলভারের বাট দিয়ে আঘাত করা হয়। তাঁরা বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই ওই ঘটনা। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছেন, অভিযুক্তদের সঙ্গে তাঁদের দলের কোনও যোগ নেই।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতে কাঁকুলিয়ার ৪এ, জগন্নাথ ঘোষ রোডের বাসিন্দাদের একাংশ পাশের পাড়া বৈকুণ্ঠ ঘোষ রোডে শীতলা পুজোয় ব্যস্ত ছিলেন। অনেকে খাওয়াদাওয়া শেষ করে শুয়ে পড়েছিলেন। অভিযোগ, রাত সওয়া ১টা নাগাদ প্রায় ১৫-২০ জন যুবক মত্ত অবস্থায় এসে হামলা শুরু করে। বিভিন্ন বাড়ির দরজা-জানলায় তারা বাঁশ, মদের বোতল ও বাতিল টিউবলাইট ছুড়ে মারে। সঙ্গে চলে গালিগালাজ। দিলীপ হালদার, বাপি গায়েন-সহ কয়েক জনের বাড়িতে ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ।

ঘটনার সময়ে বাড়িতে ২১ দিনের সন্তানকে নিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন দিলীপের মেয়ে প্রিয়াঙ্কা বৈদ্য। তিনি জানিয়েছেন, আচমকা জানলায় আঘাত ও পরমুহূর্তে বোমা-গুলি ছুড়তে শুরু করে ওই যুবকেরা। অভিযোগের তির স্থানীয় গোপাল হালদার, নেপাল বৈরাগী, পলাশ সেনাপতি, জয়দেব কামার এবং রাহুল দাস ওরফে বাবুসোনার দিকে। আরও অভিযোগ, এরা সকলেই এলাকার দাগি দুষ্কৃতী সোনা পাপ্পুর সঙ্গী। দিলীপের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, এই ঘটনায় সোনা পাপ্পুর ঘনিষ্ঠ মিন্টাইও জড়িত।

Advertisement

আচমকা গুলি ও বোমাবাজির ঘটনায় ভয় পেয়ে ভাই প্রদীপ হালদারকে ফোন করে খবর দেন দিলীপ। প্রদীপ তখন অমরদীপের সঙ্গে শীতলা পুজোর অনুষ্ঠানে ছিলেন। তিনি আরও কয়েক জনকে নিয়ে চলে আসেন। সে সময়ে গোপাল ও তার সঙ্গীরা প্রদীপদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় বলে অভিযোগ। অমরদীপের পেট ঘেঁষে গুলি বেরিয়ে যায়। প্রদীপের মুখে রিভলভারের বাট দিয়ে আঘাত করা হয় বলেও অভিযোগ।

স্থানীয় ৯১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কালু মণ্ডল নিজেকে তৃণমূল নেতা বলে দাবি করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার খবর পেয়ে কসবা থানায় ফোন করেন তাঁরা। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। যদিও তার আগেই পালায় অভিযুক্তেরা। শুক্রবার কালু বলেন, ‘‘যারা হামলা চালিয়েছে, তারা তৃণমূলে ঢোকার চেষ্টা করে ৯১ নম্বর ওয়ার্ডের দখল নিতে চাইছে। কিন্তু সোনা পাপ্পুর লোকজনকে আমরা দলে নিতে চাই না। সেই আক্রোশেই ওরা এ কাজ করেছে।’’ কালুর আরও অভিযোগ, ‘‘গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি পলাশ জানা নামে এক তৃণমূল সমর্থককে তালবাগানে খুন করে সোনা পাপ্পুর লোকজন। ওই ঘটনায় সোনা পাপ্পু গ্রেফতারও হয়। সে এখন জামিনে রয়েছে।’’

পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ওই এলাকা দখল ঘিরে সংঘর্ষ বা গোলমাল নতুন নয়। তবে বৃহস্পতিবার রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আদৌ গুলি চলেছে কি না, তারও তদন্ত শুরু হয়েছে। ৯১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর অন্নপূর্ণা দাস বলেন, ‘‘আমি শুক্রবার সকালে বাসিন্দাদের থেকে ঘটনাটি জেনেছি। এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। ওঁরা একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ হামেশাই করে থাকেন। পুলিশ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন