অসচেতন: এ ভাবেই জমে রয়েছে প্লাস্টিকের বর্জ্য। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
নিষিদ্ধ হয়েছে আগেই। তথ্য বলছে, ২০১৬ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ, বন ও আবহাওয়া মন্ত্রকের জারি করা নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা রয়েছে, প্লাস্টিকের ব্যাগ কী নিয়মে তৈরি করা হবে। তার পরেও ৪০ মাইক্রনের নীচের এত প্লাস্টিক ব্যাগ আসছে কোথা থেকে?
প্রশ্নটা আরও এক বার মনে আসবে, দক্ষিণ কলাকাতর গল্ফ গ্রিনের বিক্রমগ়ড় এলাকায় ঢুকলে। রাস্তার দু’ধারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে জমে রয়েছে প্লাস্টিকের ব্যাগ। অভিযোগ, এই এলাকারই একটি বড় ঝিল ভরে গিয়েছিল প্লাস্টিকের ব্যাগে। দীর্ঘদিনের দাবি মেনে ঝিলটি সংস্কার করা হয়েছিল। ঝিলে সৌরবিদ্যুৎ তৈরির প্রকল্পও হাতে নিয়েছে পুরসভা। অথচ তারই আশপাশে দিনের পর দিন ফেলা হচ্ছে আবর্জনা ভর্তি প্লাস্টিকের ব্যাগ। বাসিন্দাদের একাংশের মতে, সেই প্লাস্টিক হাওয়ায় উড়ে ঝিলে গিয়ে পড়ছে। ফলে এত খরচ করে সংস্কারের পরেও প্রায়ই নোংরা হচ্ছে সেই ঝিল।
স্থানীয় কাউন্সিলরের অভিযোগ, বাঁশি বাজিয়ে এলাকায় আবর্জনা তুলতে পুরসভার গাড়ি এলেও কিছু মানুষ সেখানে ফেলেন না। যত্রতত্র ফেলে যান। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভাও তো সেখান থেকে আবর্জনা তুলে নেয় না। ফলে রাস্তার দু’ধারে অলিখিত ডাস্টবিন তৈরি হয়েছে।
২০১৬ সালে পরিবেশ মন্ত্রকের প্রকাশিত এক রিপোর্ট বলছে, গোটা দেশে দৈনিক ১৫ হাজার টন প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়। যার মাত্র ন’হাজার টন পুনর্ব্যবহার যোগ্য। বাকি ছ’হাজার টন যত্রতত্র জমে থাকে। এখনও এ শহরের যত্রতত্র পড়ে থাকা প্লাস্টিকের বেশির ভাগই ৪০ মাইক্রনের কম ঘনত্বযুক্ত। যদিও ‘প্লাস্টিক ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ২০১৬’-এ তা পরিবর্তন করে বলা হয় ৫০ মাইক্রনের কম ঘনত্ব যুক্ত প্লাস্টিক ব্যবহার করা যাবে না।
নিয়ম রয়েছে খাতায়-কলমেই। না মানাটাই যেন নিয়ম। বিষয়টি যে চিন্তার, তা মানছেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র। তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ এ সব নিয়ে সচেতন নন। প্লাস্টিকের যত্রতত্র ফেলে দেওয়ায় দূষণের মাত্রা আরও বাড়বে।’’ পরিবেশবিদদের মতে, ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। যার দৃষ্টান্ত বাঙুর অ্যাভিনিউ। সম্প্রতি নিউ ব্যারাকপুর পুরসভাও বেঁধে দিয়েছে নিয়ম।
পারেনি কলকাতা পুরসভা।