এসএসকেএম হাসপাতাল
এম আর বাঙুর হাসপাতালের সুপার তাপসকুমার ঘোষ সোমবার বিকেলে জানিয়েছিলেন, গল্ফ গার্ডেন্সে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা কিশোরীর জ্ঞান তখনও ফেরেনি। চার চিকিৎসককে নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড তার চিকিৎসা করছে। ‘‘বোর্ডই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, কী ধরনের পরীক্ষা প্রয়োজন। আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না,’’ বলেন সুপার।
কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই, রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ মেয়েটিকে এসএসকেএম হাসপাতালের আইটিইউ-এ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, কিশোরীর শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি না-হওয়ায় তাকে পিজি-তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মেয়েটির খোঁজ ছিল না বৃহস্পতিবার রাত থেকে। শুক্রবার ভোরে গল্ফ গার্ডেন্সে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় তাকে। রবিবার রাতে যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে তার পরিবার। স্কুলের পোশাকে ওই নাবালিকা বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। সারা দিন ও রাত নিখোঁজ থাকার পরে শুক্রবার সকালে যখন তার খোঁজ মেলে, তখন সে রক্তাক্ত এবং তার পরনে স্কুল-পোশাকের জায়গায় ছেঁড়াখোঁড়া অন্য পোশাক। পরিবারের অভিযোগপত্রে দাবি জানানো হয়েছে, কী ভাবে তাদের মেয়ের এই পরিণতি হল, তা নিয়ে যথাযথ তদন্ত হোক।
পুলিশ জানায়, রবিবার পরিবারের অভিযোগ পেয়ে তারা তদন্ত শুরু করেছে। ডিসি (এসএসডি) সন্তোষ নিম্বলকর আগেই জানিয়েছিলেন, ওই কিশোরীর গোপনাঙ্গে আঘাতের কোনও চিহ্ন নেই। রাস্তার মতো কোনও শক্ত জায়গায় পড়ে গিয়েই চোট পেয়েছে সে। প্রশ্ন ওঠে, বাইরের থেকে আঘাতের চিহ্ন নেই দেখে পুলিশ কী করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছল? এই ধরনের তদন্তে দেহরসের পরীক্ষা একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু দেহরস পরীক্ষার কোনও রিপোর্ট সোমবার পর্যন্ত আসেনি বলে জানান বাঙুর হাসপাতালের সুপার। তাই প্রশ্ন উঠছে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। অনেকেরই প্রশ্ন, দেহরস পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগে পুলিশ কী করে জানিয়ে দিল যে, মেয়েটির উপরে কোনও রকম শারীরিক নিগ্রহের প্রমাণ মেলেনি?
প্রশ্ন উঠছে, পুলিশ কি এ ক্ষেত্রে আদৌ নিয়ম মেনে এগোচ্ছে? সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, পরিবারের তরফে কোনও নাবালিকা নিখোঁজের অভিযোগ এলে সেটিকে এফআইআর হিসেবে গণ্য করতে হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে অপহরণের মামলা করে তদন্তে নামতে হবে পুলিশকে। শুধু তা-ই নয়, কোনও নাবালিকাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করা হলে পুলিশকে সঙ্গে সঙ্গে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা রুজু করে তদন্তে নামতে হবে। পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়ের না-করলেও চলে। এ ক্ষেত্রে কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ, রবিবার রাতে অভিযোগ দায়েরের আগে পর্যন্ত পুলিশ তদন্তে নামেনি। তদন্ত শুরু করতে এত দেরি কেন, বড় হয়ে উঠছে সেই প্রশ্নটিও।