আয়ারল্যান্ডের পরে বাংলাদেশ।
আইরিশ মহিলার পরে এ বার বাংলাদেশের এক কিশোরী ভিডিয়ো-কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতে সাক্ষ্য দেবে। পুলিশ সূত্রে খবর, বাংলাদেশ থেকে এ শহরে পাচার করা হয়েছিল ওই মেয়েটিকে। বাংলাদেশের বাসিন্দা ওই কিশোরী বর্তমানে সে দেশেই রয়েছে। কাল, সোমবার বিচারভবনের কলকাতা নগর দায়রা আদালতের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা আদালতে ওই সাক্ষ্যগ্রহণ হওয়ার কথা। এর জন্য সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত বলেই জানা গিয়েছে। ওই মামলায় গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে কলকাতা গোয়েন্দা বিভাগের অফিসারেরা ব়়ড়তলা থানা এলাকার সোনাগাছি থেকে ১৬ বয়সী ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেন। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় পাচার চক্রের পাণ্ডা রত্না বিবি ওরফে কোহিনুর বিবিকে। গোয়েন্দাদের দাবি, বাংলাদেশ থেকে ওই নাবালিকাকে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে কলকাতায় নিয়ে এসে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে বাংলাদেশে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত কোহিনুর। ঘটনার বেশ কিছু দিন পরে অভিযুক্তকে কলকাতা থেকেই গ্রেফতার করা হয়। পরে ওই মামলায় জামিনে ছাড়া পায় সে।
লালবাজার জানিয়েছে, কিশোরীকে পাচার করার ঘটনায় নির্ধারিত সময়ে আদালতে চার্জশিট পেশ করেন তদন্তকারীরা। কলকাতা নগর দায়রা আদালতের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা আদালতে কুমকুম সিংহের এজলাসে চার্জ গঠন করা হয় ওই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তকে শনাক্তকরণের পরে, নিয়মমতো বাংলাদেশে নিজের পরিবারের সদস্যদের কাছে ফিরে যায় কিশোরী। তদন্তকারীরা জানান, বর্তমানে ওই মামলার শুনানি শেষের দিকে। প্রায় আট জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। বাকি রয়েছে তদন্তকারী অফিসার এবং পাচার হওয়া কিশোরীর সাক্ষ্যগ্রহণ। সরকারি কৌঁসুলি জয়ন্ত চক্রবর্তী জানান, ওই কিশোরী বাংলাদেশে থাকায় তার সাক্ষ্যগ্রহণ যাতে ভিডিয়ো-কনফারেন্সের মাধ্যমে করা যায়, সে জন্য বিচারকের কাছে আবেদন করা হলে তিনি তা মঞ্জুর করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মূল অভিযুক্ত কোহিনুর বিবি মামলা চলাকালীন জামিন পেয়ে যায়। কিন্তু কয়েক বছর আগে ফের এক তরুণীকে পাচারের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই থেকে জেল হেফাজতে রয়েছে সে। লালবাজার সূত্রের দাবি, কোহিনুরের বিরুদ্ধে ওই একই আদালতে আরও দু’টি মামলার বিচার চলছে।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, কালীঘাটে এক যৌন নির্যাতনের মামলায় ভিডিয়ো-কনফারেন্সের মাধ্যমে আয়ারল্যান্ড থেকে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন অভিযোগকারী এক আইরিশ মহিলা। যার ভিত্তিতে বিচার শেষে বিচারক অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে সাত বছরের সাজা ঘোষণা করেছিলেন।