হোমে নিগৃহীত ছাত্রের ভবিষ্যৎ ঘিরে অনিশ্চয়তা

গত বৃহস্পতিবার ৯৩ এবং ৯৭ নম্বর শরৎ বসু রোডের একটি আবাসিক হোমে সেখানকার কেয়ারটেকার ওই বালককে বেত দিয়ে মারেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৮ ০২:৩০
Share:

এ ভাবেই মারা হয়েছে ওই বালককে। নিজস্ব চিত্র

শরৎ বসু রোডের আবাসিক হোমে মার খাওয়া বছর এগারোর বালকের পড়াশোনা কী ভাবে চলবে, তা ঘিরে তৈরি হয়েছে সংশয়। কলকাতা শিশু কল্যাণ সমিতির নির্দেশে সে আপাতত এণ্টালির ক্রিস্টোফার রোডের বস্তিতে কাকার কাছে ফিরে গিয়েছে। এত দিন হোম কর্তৃপক্ষই তার পড়াশোনার যাবতীয় দায়িত্ব বহন করতেন। কিন্তু এখন ভবানীপুরে সাউথ সাবার্বান স্কুলের ওই পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র কী ভাবে স্কুলে যাওয়া-আসা করবে, তা জানেন না তার কাকা-কাকিমা।

Advertisement

গত বৃহস্পতিবার ৯৩ এবং ৯৭ নম্বর শরৎ বসু রোডের একটি আবাসিক হোমে সেখানকার কেয়ারটেকার ওই বালককে বেত দিয়ে মারেন। এণ্টালির বাসিন্দা হলেও বাবার মৃত্যু এবং মায়ের দ্বিতীয় বিয়ের পরে ওই বালক এই হোমে থেকেই পড়াশোনা করত। কিন্তু হোমের কেয়ারটেকারের হাতে মার খাওয়ার পরে কাকার বাড়িতে ফিরে যেতে হয়েছে তাকে। ফলে পড়াশোনা ও ভবিষ্যৎ নিয়েই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। যদিও কিশোরের কাকা গণেশ এবং কাকিমা রানি চক্রবর্তী সোমবার জানিয়েছেন, বাচ্চারা একসঙ্গে থাকলে মারপিট করে অনেক সময়ে। হয়ত ভাইপোও মারপিট করেছিল। কিন্তু ও এমনিতে শান্ত-স্বভাবের ছেলে। রানি বলেন, ‘‘আমরা ওকে আপাতত নিজেদের কাছেই রাখতে চাই। পরে আর ওই হোমে পাঠাব কি না, এখনও ঠিক করতে পারিনি।’’ তাঁর আরও দাবি, ওই বালক তাঁদের জানিয়েছে, এর আগে তাকে মারধর করা না হলেও অন্য বাচ্চাদের কিন্তু মারধর করা হত!

কিন্তু হোমে কি এ ভাবেই বাচ্চাদের শাসন করা হয়?

Advertisement

শরৎ বসু রোডের ওই হোমের সহ-সভাপতি স্বপ্না সেন এবং কোষাধ্যক্ষ শুভেন্দ্র মৌলিক জানান, তাঁদের হোম বহু পুরনো। এখানে বাচ্চাদের শাসন করতে মাঝেমধ্যে বকাঝকা করা হলেও কোনও দিন কারও গায়ে হাত দেওয়া হয় না। তাঁরা বাচ্চাদের মারধর করাকে সমর্থন করেন না। আর তাই এ ধরনের অভিযোগের পরেই তাঁরা কেয়ারটেকার আশিস সরকারকে বরখাস্ত করেছেন।

হোম কর্তৃপক্ষের আরও দাবি, আশিসবাবু আট-নয় মাস আগে কেয়ারটেকার হিসাবে যোগদান করেছিলেন। কিন্তু কয়েক মাসে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও মারধরের অভিযোগ ওঠেনি। বৃহস্পতিবারের ঘটনার বিষয়ে আবাসিক বা হোম সুপার কেউই কর্তৃপক্ষকেও জানায়নি বলেই দাবি শুভেন্দ্রর। কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘‘কলকাতা চাইল্ড লাইনের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আশিসকে গ্রেফতার করতে এলে বিষয়টি জানতে পারি। তার আগে স্কুলের শিক্ষকও আমাদের কিছু জানাননি!’’

যদিও হোমের সুপার দীপক বিশ্বাসকে সে মারধরের কথা জানিয়েছিল বলে সোমবার জানায় ওই বালক। আপাতত গরমের ছুটি পড়ায় ১০ দিনের জন্য হোমের আবাসিকেরা বাড়ি গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন