জট: পথের বাধা এই অনিয়ন্ত্রিত অটো। নিজস্ব চিত্র
মাত্র কয়েক মিটারের ব্যবধান, তাতেই বদলে গিয়েছে যান শাসনের ছবিটা। তাই গড়িয়া মেট্রো স্টেশন সংলগ্ন
টালি নালার উপরে সেতু পেরোলে একই রাস্তার উত্তর এবং দক্ষিণে দু’রকমের ছবি। অভিযোগ, যান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যা কিছু কড়াকড়ি, সবটাই উত্তরে কলকাতা পুলিশের অধীন। দক্ষিণ জেলা পুলিশের এলাকায় সবটাই ঢিলেঢালা।
কবি নজরুল মেট্রো স্টেশন সংলগ্ন টালি নালার সেতু থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের এলাকা শুরু। সেখান থেকে ৫০-৬০ মিটার দক্ষিণে এগোলে বাঁ দিকে গড়িয়া স্টেশন রোড এবং ডান দিকে বোড়াল মেন রোড মিশেছে গড়িয়া মেন রোডে। অভিযোগ, টালি নালা থেকেগড়িয়া স্টেশন রোড পর্যন্ত অংশে কার্যত ট্র্যাফিকের কোনও নিয়মই মানা হয় না।
সেতুর উপরেই পূর্ব দিক ঘেঁষে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে অটো। ফলে সেতু দিয়ে যাতায়াতের পথ অনেকটাই সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছে। এরই মধ্যে মেট্রো যাত্রীদের তুলতে রেষারেষির প্রতিযোগিতায় যত্রতত্র দাঁড়িয়ে পড়ে অটো। রাস্তা পারাপারে ট্র্যাফিক সিগন্যাল বা জেব্রা ক্রসিংয়ের বালাই নেই। এমনকি ট্র্যাফিক পুলিশ বা সিভিক ভলান্টিয়ারও বেশির ভাগ সময়ে নজরে পড়ে না বলে অভিযোগ। পথচারীদের একাংশ ইচ্ছে মতো রাস্তা পারাপার করেন। অথচ ওই রাস্তা
দিয়ে বারুইপুর, সোনারপুর, হরিনাভিগামী বাস ছাড়াও অসংখ্য গাড়ি যাতায়াত করে। কবি নজরুল মেট্রো স্টেশন সংলগ্ন ক্যানালসাইড রোডের মুখ আগলে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে অটো। সব মিলিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়।
রাস্তার পশ্চিম দিকের সমস্যা অন্য। ওই প্রান্তে বেশ কিছু দোকানপাট এবং একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। সেখানে অনবরত লোকের ভিড় লেগেই থাকে। অনেকেই রাস্তার উপরে গাড়ি, বাইক দাঁড় করিয়ে রাখেন। সন্ধ্যায় আবার ওই রাস্তায় আনাজের বাজার বসে। গড়িয়া স্টেশন রোড এবং বোড়াল মেন রোড থেকে যে সব যান গড়িয়া মেন রোডে ওঠে, তাদের জন্যও রাস্তায় চাপ বাড়ে। সব মিলিয়ে যান চলাচলে খুবই অসুবিধায় পড়তে হয়। বারুইপুর, সোনারপুর, বোড়াল, মহামায়াতলা থেকে আসা অটোর বড় অংশ মেট্রোর যাত্রীদের নামিয়ে টালি নালার সেতুর মুখেই অটো দাঁড় করায়। ফলে সেতুর মুখ আরও অবরুদ্ধ হয়ে যায়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পল্লব দাস জানান, দক্ষিণ থেকে উত্তরের দিকে যাওয়ার সময়ে টালি নালার সেতুতে ওঠার আগে অটো চালকদের একাংশের রুট ছোট করে অটো ঘুরিয়ে নেওয়ার প্রবণতা ছিল। এর ফলে যানজট বাড়ছিল। সম্প্রতি ওই অংশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “গড়িয়া স্টেশন রোড চওড়া হচ্ছে। যাতে ওই রাস্তায় গাড়ি ঢোকা-বেরোনোর অসুবিধা কমে।” সকলকে নিয়ে আলোচনা করে সমাধান খোঁজা হচ্ছে বলে
জানান পুরপ্রধান।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর জেলার পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ জানান, অটোর নিয়ম ভাঙা নিয়ে পুলিশ আগেও ব্যবস্থা নিয়েছে। ভবিষ্যতেও অভিযান চলবে। তবে গড়িয়া মেন রোডের যান নিয়ন্ত্রণের সমস্যা পুলিশের জানা। পুরসভা এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে আগামী জুনেই কিছু সিদ্ধান্ত নেবে।