কারখানা থেকে একাধিক লেদ মেশিন এবং পিস্তলের কাঠামো উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দারা। —নিজস্ব চিত্র।
সামনে শাড়ির দোকান। পিছনে অস্ত্র কারখানা। কাঁকিনাড়ায় ধৃত অস্ত্র কারবারিদের জেরা করে আগরপাড়ার উষুমপুরে আরও একটি বেআইনি অস্ত্র কারখানার হদিশ পেল কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)।
উষুমপুরের একটি দোতলা বাড়ির এক দিকে ছিল শাড়ির দোকান, অন্য দিকে লেদ কারখানা। তারই আড়ালে চলছিল নাইন মিলিমিটার এবং সেভেন মিলিমিটার পিস্তলের কাঠামো তৈরির কাজ। বুধবার দুপুরে সেই কারখানায় হানা দেয় এসটিএফ আধিকারিকরা। কারখানা থেকে একাধিক লেদ মেশিন এবং পিস্তলের কাঠামো উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দারা।
এসটিএফ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, কাঁকিনাড়া থেকে ধৃতদের জেরা করে সোমবার রাতে রবীন্দ্র সরণি থেকে গ্রেফতার করা হয় ওই চক্রেরই আরও দুই সদস্য ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জের বাসিন্দা মহম্মদ আসফাক আহমেদ এবং মুঙ্গেরের মহম্মদ আসলামকে। তাদের কাছ থেকেই আগরপাড়ার ডেরার হদিশ মেলে।
আরও পড়ুন: এটিএমে কী করছে এত ক্ষণ? ভিতরে ঢুকতেই জানা গেল…
এসটিএফ সূত্রের খবর, আগরপাড়ার ওই কারখানায় পিস্তলের ইস্পাতের কাঠামো তৈরি করা হত। —নিজস্ব চিত্র।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, প্রায় ছ’মাস আগে দোতলা ওই বাড়িটির একতলা ভাড়া দিয়েছিলেন বাড়ির মালিক কালাচাঁদ পাল। এসটিএফের গোয়েন্দাদের তিনি জানিয়েছেন, পাপ্পু খান নামে কামারহাটির এক ব্যক্তি তাঁর কাছ থেকে নীচের তলা ভাড়া নিয়েছিলেন লেদ কারখানা করার জন্য।
সেই মতো কয়েকটি লেদ মেশিনও বসায় পাপ্পু। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তিন-চার জন কর্মী কাজ করতেন এই কারখানায়। তবে লেদ কারখানায় কী করা হত, অর্থাৎ কী ধরনের জিনিস তৈরি হত, তা জানতেন না স্থানীয়েরা। তবে প্রায়শই বাইরের লোকজন আসতেন।
এসটিএফ সূত্রের খবর, আগরপাড়ার ওই কারখানায় পিস্তলের ইস্পাতের কাঠামো তৈরি করা হত। সেই কাঠামো তার পর পাঠানো হত কাঁকিনাড়াতে। সেখানে এই কাঠামোর সঙ্গে বাকি অংশ জোড়া হত। তার পর সোজা চলে যেত মালদহের কালিয়াচক এলাকায় বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার একটি গ্রামে। সেখানেও একটি কারখানা তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে এই সমস্ত পিস্তল ব্যবহার উপযোগী করে বাংলাদেশের কারবারিদের হাতে তুলে দেওয়া হত।
দেখুন ভিডিয়ো
আরও পড়ুন: মা কি বেঁচে, হাসপাতালের দ্বারস্থ মেয়ে
কাঁকিনাড়াতে গোয়েন্দারা হানা দেওয়ার পর থেকেই আগরপাড়ার লেদ কারখানা হঠাৎই বন্ধ হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। কামারহাটির বাসিন্দা পাপ্পু খান, যে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল, তারও কোনও হদিশ নেই। গোয়েন্দাদের সন্দেহ আরও এ রকম কারখানা ছড়িয়ে আছে। সেগুলিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।