পুলিশের জালে বাপি মোল্লা এবং সাবিনা বিবি।
গোয়েন্দাদের জালে ধরা পড়ল পূর্ব কলকাতার কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী সাবিনা বিবি এবং তার শাগরেদ বাপি মোল্লা। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা ধৃতদের ডেরা থেকে উদ্ধার করেছেন হেরোইন (ব্রাউন সুগার)-এর ৪ হাজার ৩০০টি পুরিয়া। গোয়েন্দাদের দাবি, সব মিলিয়ে পাওয়া গিয়েছে প্রায় ৪ লাখ টাকার মাদক যার ওজন ৪৬০ গ্রাম। বৃহস্পতিবার বেশি রাতে ওই দু’জনকে পাকড়াও করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, সাবিনাকে জেরা করতে গিয়ে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন এন্টালি এলাকার একটি নামী কনভেন্ট স্কুল থেকে শুরু করে বাইপাসের ধারের একটি অভিজাত বেসরকারি কলেজের ছাত্রছাত্রীদের নিয়মিত মাদক সরবরাহ করত সাবিনা ও তার সঙ্গীরা।
তবে, সাবিনার ধরা পড়া ফের উস্কে দিয়েছে পাঁচ বছর আগের স্মৃতি। এসএসকেএম হাসপাতালে এক ডাক্তারি পড়ুয়ার রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছিল কলেজের হস্টেলেই। তাঁর রুমমেটকেও পাওয়া গিয়েছিল সংজ্ঞাহীন অবস্থায়। তদন্তে জানা গিয়েছিল, অত্যধিক মাত্রায় মাদক নিয়েই প্রাণ গিয়েছিল ওই ডাক্তারি পড়ুয়ার। সেই সময় প্রকাশ্যে এসেছিল শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদক কারবারীদের অবাধ গতিবিধি।
এসএসকেএমের ওই ঘটনার পরে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ শহর জুড়ে মাদককারবারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। সেই সময় লক্ষ্মী সরদার, মেহরান বিবির মতো অনেক মাদক কারবারীদের সঙ্গে সাবিনার নামও উঠে এসেছিল। কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, দায়িত্ব নেওয়ার পরেই নয়া পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা গোয়েন্দাদের নির্দেশ দেন, স্কুল-কলেজে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু করতে হবে। সেই নির্দেশ পেয়েই শহরে বিশেষ অভিযান শুরু করে পুলিশ। কয়েক দিন আগেই তালতলা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল এক গাঁজা কারবারীকে।গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, সাবিনা ছাড়াও আরও এ রকম কয়েক জনের খোঁজ মিলেছে। ওই মাদক কারবারীদের ধরার চেষ্টা চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন: মারধর করে ‘ঝুলিয়ে দেওয়ায়’ ভেন্টিলেশনে বধূ, ধৃত স্বামী
গোয়েন্দাদের দাবি, ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঘুঁটিয়ারি শরিফ এলাকা থেকে মাদক নিয়ে আসা হত প্রগতি ময়দান এলাকায়। ওখানেই সাবিনার ডেরা। সেখানে ব্রাউন সুগারের সঙ্গে ধূপের ছাই মিশিয়ে ভরা হত পুরিয়াতে। সেই পুরিয়া শিয়ালদহ, এন্টালি, ইএম বাইপাসের ধারে কয়েকটি জায়গায় সরবরাহ করা ছাড়াওকয়েকটি কলেজে সাবিনার বাঁধা ক্রেতা ছিল বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী। একশো থেকে দেড়শো টাকায় বিক্রি হত এক একটি পুরিয়া। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকেও সতর্ক করবে পুলিশ। সেই সঙ্গে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হবে ওই সমস্ত মাদকসেবী পড়ুয়াদের। তাঁদের চিহ্নিত করে মাদক ছাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসার বন্দোবস্তও করা হবে।
আরও পড়ুন: সময়ে হাজিরা নয় কেন, পরিদর্শনে ক্ষুব্ধ সিপি