Crime

থোড়াই কেয়ার পুলিশ, ক্যামেরা! কালীঘাটে গোয়েন্দারই পকেটমার

শীত পড়তেই শহর জুড়ে কলকাতা শহরের দক্ষ পকেটমারদের মরসুম শুরু হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৯ ১৩:৫৬
Share:

ব্যাগ চুরি গেল খোদ গোয়েন্দারই। অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।

ক’দিন আগেই চলন্ত বাসে ছ’লাখ টাকা খুইয়েছিলেন সঞ্জয় কুমার সিংহ নামে এক ব্যবসায়ী। ১২ ডিসেম্বর টি বোর্ডের সামনে থেকে উঠেছিলেন ২০৫ রুটের একটি বেসরকারি বাসে। ময়দানে নেমে দেখেন তাঁর হাতের ব্যাগে নিপুণ হাতে কেউ ব্লেড চালিয়ে দিয়েছে। আর লোপাট হয়ে গিয়েছে ব্যাগের টাকা।

Advertisement

শীত পড়তেই শহর জুড়ে কলকাতা শহরের দক্ষ পকেটমারদের মরসুম শুরু হয়ে গিয়েছে। তারা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে খোদ পুলিশকেও রেয়াত করে না। বছরের প্রথম দিনেই পকেটমারদের হাতে নিজের পার্স খোয়ালেন কলকাতা পুলিশেরই এক অফিসার।

রঞ্জন চক্রবর্তী নামে কলকাতা পুলিশের গোয়্ন্দা বিভাগের ওই সাব ইন্সপেক্টর পয়লা জানুয়ারি ছিলেন কালীঘাট মন্দির চত্বরে। সূত্রের খবর, মন্দিরের ভিতরেও ঢুকেছিলেন তিনি। হঠাৎই সাড়ে বারোটা নাগাদ তিনি খেয়াল করেন তার ট্রাউজার্সের পেছনের পকেট থেকে গায়েব তাঁর পার্স। আশপাশে খোঁজাখুঁজি করে যখন পেলেন না তখন মন্দির চত্বরের লোকজনই তাঁকে বলেন যে নিশ্চয়ই পকেটমারের কীর্তি। খুঁজে লাভ নেই। ওই দিনই তিনি কালীঘাট থানাতে অভিযোগ জানিয়েছেন। কালীঘাট মন্দিরচত্বরে নিরাপত্তার জন্য বসানো আছে অনেকগুলো সিসি ক্যামেরা। কিন্তু মন্দির চত্বরে থাকা ব্যবসায়ীদের অভিজ্ঞতা, ও সবকে আদৌ পরোয়া করে না এই পকেটমারেরা। সিসি ক্যামেরা ফাঁকি দিয়েই নিপুণ হাতে কাজ সারছে তারা। মন্দিরের বাইরে ফুলের ডালার এক ব্যবসায়ী বলেন,“ প্রতিদিনই কম করে তিন-চার জন শিকার হয় পকেটমারদের। মন্দিরে আসা ভক্তদের বড় অংশই ভিন রাজ্যের বাসিন্দা। তাই অনেকেই পুলিশে অভিযোগ জানানোর ঝামেলায় যেতে চাননা।”

Advertisement

আরও পড়ুন: প্রয়াত সাহিত্যিক দিব্যেন্দু পালিত

আরও পড়ুন: শবরীমালা ইস্যুতে ১২ ঘণ্টার বন্‌ধে উত্তাল কেরল, ইন্ধন দিচ্ছে বিজেপি, তোপ মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের​

শুধু কালীঘাট মন্দির চত্বর নয়। চিড়িয়াখানা, ভিক্টোরিয়া থেকে শুরু করে মেট্রোর গেট সর্বত্রই এই ‘শিল্পী’ পকেটমারদের অবাধ আনাগোনা। দিন কয়েক আগেই ভিক্টোরিয়ার উত্তর গেটের সামনে টিকিট কাটতে গিয়ে পকেটমারের দৌলতে মোবাইল খোয়ান ব্রিটিশ পর্যটক গেইল ফাক। তিনিও হেস্টিংস থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। কালীঘাটের মত ভিক্টোরিয়াতেও আছে সিসি ক্যামেরা। কিন্তু তাতে কি।

রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতেই শোভাবাজার স্ট্রিটে বছরের প্রথম দিনেই মোবাইল চুরি গিয়েছে নাগেশ্বর রাম নামে এক যুবকের।

কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “ পুজো বা বর্ষশেষের সময় এবং বছরের শুরুতে চিড়িয়াখানা, কালীঘাট বা ভিক্টোরিয়ার মত জায়গায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এই পকেটমারি রুখতে গোয়েন্দা বিভাগের বিশেষ শাখা ওয়াচ সেকশন রয়েছে। তাঁরাই সাদা পোশাকে নজরদারি চালান যাতে পকেটমাররা কারওর পকেট কাটতে না পারে।” গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্তার দাবি, ১ জানুয়ারি সর্বত্রই ওয়াচ সেকশনের দুঁদে গোয়েন্দারা উপস্থিত ছিলেন। তা হলে? গোয়েন্দাদের নজর এড়িয়েই পকেট কাটার রমরমা চলছে শহরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন