—ফাইল চিত্র।
গভীর রাত। ফাঁকা রাস্তা। দক্ষিণ শহরতলির ওই রাস্তা দিয়ে বেপরোয়া ভাবে গন্তব্যের দিকে ছুটে চলেছে একের পর এক গাড়ি।
রাতের শহরে বিভিন্ন রাস্তায় বেপরোয়া গাড়ির ওই চিত্র নতুন কিছু নয়। এ বার ওই সব বেপরোয়া গাড়ির গতি শাসন করতে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় বাড়ানো হচ্ছে স্পিড ক্যামেরার সংখ্যা। শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায় বর্তমানে স্পিড ক্যামেরা রয়েছে। সেই সংখ্যাই এবার কয়েক গুণ বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে লালবাজার। ইতিমধ্যেই নতুন স্পিড ক্যামেরা বসানোর জন্য স্থান নির্বাচন করে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
লালবাজার সূত্রের খবর, রাস্তায় গাড়ির গতি নির্ধারিত সীমার মধ্যে রাখার জন্য কয়েক বছর আগে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় বসানো হয়েছিল স্পিড ক্যামেরা। বেপরোয়া গতিতে যাওয়া, ট্র্যাফিক নিয়ম ভাঙা গাড়ির ছবি সেই ক্যামেরায় উঠছে এবং পরে সেই গাড়ির নম্বর প্লেট চিহ্নিত করে মালিকের কাছে ছবি-সহ জরিমানার বিবরণ পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গোটা শহর জুড়ে বেপরোয়া গাড়ির গতি কম করার জন্য ওই স্পিড ক্যামেরা ছাড়াও বিভিন্ন রাস্তার সংযোগস্থলে রয়েছে সিসি ক্যামেরা, যা দেখে মূলত রাতের শহরে আইনভঙ্গকারী চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুলিশ। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে বেপরোয়া গাড়ি বা মোটরবাইকের গতি রুখে দেওয়ার জন্য স্পিড ক্যামেরা-সহ বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও শহরের রাস্তায় বেপরোয়া গতিতে রাশ টানা যায়নি বলেই অভিযোগ। মাস কয়েক আগে ই এম বাইপাসের বাঘা যতীন উড়ালপুলের ঠিক আগে একটি বেপরোয়া গতির গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে ধাক্কা মারে। মৃত্যু হয় চালকের। এর কিছু দিন পরেই চিংড়িহাটার কাছে একই ভাবে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল আরও একটি গাড়ি।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের দাবি, বেপরোয়া গতি রোখার জন্যই আরও স্পিড ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দিনে রাস্তায় ট্র্যাফিক পুলিশ থাকলেও রাতে তুলনায় অনেক কম জায়গায় ট্র্যাফিক পুলিশ থাকে। ফলে সেই সুযোগ নিয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন গাড়ির চালকেরা। পুলিশ জানাচ্ছে, বর্তমানে ২০টি জায়গায় ওই ক্যামেরা রয়েছে। তা বাড়িয়ে ৪০টি করা হচ্ছে। চলতি বছরের শেষে সেই সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। সেগুলি কোন রাস্তায় বসালে বেপরোয়া মোটরবাইক এবং গাড়ির গতি রুখে দেওয়া সহজ হবে, লালবাজারের তরফে তা জানতে চাওয়া হয়েছিল কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের ২৫টি ট্র্যাফিক গার্ডের কাছে। মূলত যে সব এলাকায় কোনও স্পিড ক্যামেরা নেই, সেখানেই ওই ক্যামেরা বসানোর ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও শহরের বিভিন্ন দুর্ঘটনাপ্রবণ রাস্তাগুলি বেছে নিয়ে সেখানে ওই ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে লালবাজারের তরফে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই ক্যামেরার সঙ্গেই গতি মাপার যন্ত্র রয়েছে। গাড়ি বা মোটরবাইকের নম্বর-সহ কত কিলোমিটার গতিতে তা চলছে, সেটি রেকর্ড হয়েছে যাচ্ছে পুলিশের নিজস্ব সার্ভারে। আইনভঙ্গের কিছু ক্ষণের মধ্যেই ওই সার্ভার থেকে গাড়ির চালক বা মালিকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে কলকাতা পুলিশের এসএমএস। তাতে ছবি-সহ থাকছে গাড়িটি কখন, কোথায়, ক গতিতে আইনভঙ্গ করেছে।
কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ চালু হওয়ার পরে শহরে রাস্তায় দুর্ঘটনা কমেছে। কিন্তু তা যাতে আরও নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তার জন্য কলকাতা পুলিশ সর্তক। তাই বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’’