ভারত-জার্মান শিল্প উৎসব
হেমন্তে শীতের আমেজ! সেই আমেজের রেশ ধরেই রাজারহাটের আর্টস একর-এ হয়ে গেল দশ দিনের একটি মিলনোৎসব, ‘ইন্দো-জার্মান আর্ট ফেস্টিভ্যাল’। এই উৎসবে ৫ থেকে ১২ নভেম্বর আর্টস একর স্টুডিয়োতে শিল্প রচনায় মগ্ন হলেন ভারত এবং জার্মানির শিল্পীরা। সঙ্গে ছিল পারস্পরিক আদানপ্রদান। সুদূর জার্মানি থেকে ওঁরা নিয়ে এসেছিলেন কিছু কাজ, সঙ্গে এখানকার শিবিরের কাজ নিয়েই আয়োজিত হল একটি শিল্প প্রদর্শনী। ছিল দুই দেশের শিল্পের গতিপ্রকৃতি নিয়ে ‘ইস্ট মিটস ওয়েস্ট’ শীর্ষক একটি আলোচনাসভা। জার্মানির শিল্পী কারিন সাফ বললেন ‘ফর্মালিজম ইন অ্যাবস্ট্রাক্ট পেন্টিং’ বিষয়ে। ৮ নভেম্বর বিকেলের অনুষ্ঠানে ছিলেন দেশের প্রবীণ ভাস্কর হিম্মত শাহ, শিল্পী প্রভাকর কোলতে, গণেশ হালুই, শুভাপ্রসন্ন, চিত্রপরিচালক গৌতম ঘোষ এবং অনুপম রায়। এ দিনের অনুষ্ঠানে দেখানো হল হিম্মত শাহের জীবন ও কর্ম নিয়ে তৈরি একটি তথ্যচিত্র। এটি আদতে কোনও শিল্পীর জীবন নিয়ে এ দেশের প্রথম ত্রিমাত্রিক তথ্যচিত্র, কিন্তু এখানে সে ব্যবস্থা নেই বলে দ্বিমাত্রিকেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। আর ছিল গৌতম ঘোষের তথ্যচিত্র ‘মিটিং আ মাইলস্টোন: উস্তাদ বিসমিল্লা খান’। পরে আলোচনা হয় সিনেমা ও শিল্প প্রসঙ্গে। আজকের শিল্পকলা বিষয়ে ছিল এস ভি রামনের একটি আলোচনা। ইমামি আর্টের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ১১ নভেম্বর সকালে জমে উঠেছিল শিল্প প্রদর্শনী, সঙ্গে ‘আর্ট হাট ২০১৭’ (১৪ নভেম্বর পর্যন্ত) উদ্বোধন করেন ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়, ছিলেন জার্মান কনসাল জেনারেল মিশায়েল ফাইনার। বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঙ্গেই জমজমাট শিল্পের হাট। সঙ্গে রায়বেঁশে নাচের ছবি।
দেশনেতা
১৯০৫-এর ১৬ অক্টোবর। বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে উত্তাল কলকাতা। প্রতিবাদী পঞ্চাশ হাজার মানুষের জমায়েত থেকে দাবি উঠল ফেডারেশন হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করতে হবে আনন্দমোহন বসুকে। তিনি তখন রোগশয্যায়। তবুও জাতীয় আন্দোলনের পথিকৃৎ আনন্দমোহনকে সেই সভায় নিয়ে আসা হল চেয়ারে বসিয়ে। বক্তৃতা শেষ করতে পারলেন না বলে অভিভাষণ পড়ে শোনালেন সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। বছর না ঘুরতেই দেহান্ত হল তাঁর, ভগিনী নিবেদিতা তাঁকে আখ্যা দিলেন ‘নেশন মেকার’। বহু শাস্ত্রজ্ঞ আনন্দমোহন (১৮৪৭-১৯০৬) বিশ্বাস করতেন জাতিগঠনে প্রয়োজন শিক্ষার সম্প্রসারণ, তাই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সিটি কলেজ— কলকাতায় ও ময়মনসিংহে। সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজ প্রতিষ্ঠা হলে প্রথম সভাপতি তিনিই হন। তাঁর উজ্জ্বল কীর্তি ‘ভারতসভা’ প্রতিষ্ঠা। ২৬ নভেম্বর বিকেল সাড়ে পাঁচটায় যোগেশ মাইম অ্যাকাডেমি মঞ্চে (কালীঘাট) তাঁর ১৭০ বছর উদ্যাপন করছে ‘অহর্নিশ’ এবং ‘আনন্দমোহন বসু মেমোরিয়াল সোসাইটি’। ‘স্মরণীয় আনন্দমোহন’ বিষয়ে বলবেন গৌতম নিয়োগী ও ‘দেশনায়ক আনন্দমোহন’ বিষয়ে বলবেন অর্ণব নাগ। থাকবে ‘পরম্পরা’ এবং সংগীত অনুষ্ঠানও। উপস্থিত থাকবেন অলোক রায়।
সুরধ্বনি
শিশুশিল্পী হিসেবে তাঁকে তামাম ভারতবাসী মনে রাখেন। ছোটদের জন্য তাঁর গাওয়া ‘বুলবুল পাখি’, ‘ও মাগো মা অন্য কিছু গল্প বলো’ বা ‘ব্যাঙেদের গান শেখা’ ইত্যাদি গান এক একটি মাইলস্টোন! পাশাপাশি তাঁর ‘এমনও সঘন’ বা হিন্দি ছবি ‘খোয়া খোয়া চাঁদ’-এর ‘ইয়ে নিগাহে’র মতো গান শোনেন যখন শ্রোতারা, তখনও বিভোর হন। সলিল চৌধুরীর কন্যা অন্তরা চৌধুরী তাঁর মা সবিতা চৌধুরীর সঙ্গে বেশ কিছু জনপ্রিয় ডুয়েটও গেয়েছেন এ বার এই শিল্পীই সলিল চৌধুরীর ৯২তম জন্মদিবস উপলক্ষে মায়ের অনুপ্রেরণায় বালিগঞ্জ গার্ডেন্স-এ ১৯ নভেম্বর সংগীত শিক্ষাকেন্দ্র ‘সুরধ্বনি’র সূচনা করলেন। সত্তরের দশকের শেষ ভাগে তাঁর গাওয়া জনপ্রিয় বাংলা আধুনিক ‘ছোটদের গান’ দিয়েই প্রতিষ্ঠানের পথচলা শুরু হবে।
নিজস্ব পরিসর
বাউল-ফকির-দরবেশের পথ যুগল সাধনার। সাধনসঙ্গিনী সাধককে তাঁর লক্ষ্যে পৌঁছে দেওয়ার আধার। তবে এই সাধনায় নারীর অবস্থান কি শুধুই সাধনার মাধ্যম! তিনি নিজে কি এই চর্যার অংশীদার নন! বলা হয়, এই সাধনপথে ‘নারীর জন্য কোনও নির্দেশ দেওয়া নেই।’ চরণদাসী, সেবাদাসী, সাধনসঙ্গিনী বা আরও নানা ভাবে এঁদের পরিচয় দেওয়া হয়। কিন্তু এই বাউলানি ফকিরানিদেরও নিজস্ব চর্চা-চর্যা, মনন-চিন্তন ও পরিসর আছে। এই মা-গোঁসাইদের গান নিয়েই ২২ নভেম্বর বিকেল ৫টায় রবীন্দ্রসদনে আয়োজিত হয়েছে হৃৎকমলে রাখবো শীর্ষক অনুষ্ঠান। থাকবেন মাকি কাজুমি, উমারাণী দাস, রীণা দাস, সন্ধ্যারাণী দাস, চাঁদ বিবি, সুফিয়া বিবি, দুর্গা খেপি এবং সহজিয়া লোকগানের দল। সঙ্গে অনুষ্ঠানের ধরতাইয়ে থাকবেন কবি অরুণ চক্রবর্তী, লীনা চাকি, শুভেন্দু মাইতি, তপনজ্যোতি দাস, হিরণ মিত্র।
সুপ্রাচীন
জোব চার্নকের পা রাখা, কলকাতার জন্মদিন— এ সব নিয়ে আজকাল আর তেমন বিতর্ক ওঠে না। কিন্তু তিনশো পেরনো কলকাতা মহানগরের গড়ে ওঠা, মানুষের বসতি স্থাপনার সময়ের নিরিখে প্রাচীনতর অতীতের হিসাব দেয় না। প্রাচীন নামের যে সূত্র পাওয়া যায় মানচিত্রে, তা কিসের ইঙ্গিতবাহী? বৃহত্তর চৌহদ্দিতে দমদম উৎখননে যে সব প্রমাণ পাওয়া যায় তা প্রত্নক্ষেত্র চন্দ্রকেতুগড় বা তাম্রলিপ্তের সঙ্গে সংযোগ ঘটায়। নানা তথ্যসূত্রে, জনপদের সঙ্গে জনগোষ্ঠীর সম্পর্কে এই অঞ্চল সুপ্রাচীন। এ সবের সন্ধানে রাজ্য সরকারের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ বিভাগের ‘কবিগান অকাদেমি’র আয়োজনে সারাদিন ব্যাপী আলোচনাচক্র অনুষ্ঠিত হল সম্প্রতি কালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অম্বেডকর ভবনে। অকাদেমির চেয়ারম্যান তথা রাজ্য তফশিলি জাতি ও আদিবাসী উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের মূল বক্তব্যের সূত্র ধরে মানচিত্র-প্রণেতা, পুরাতত্ত্ববিদ, ইতিহাসবিদ, ভাষাবিদ, ক্ষেত্রগবেষকের চোখে কলকাতার অতীতের নানা নতুন তথ্য উঠে এল।
উজ্জীবন
হ্যাঁ, রক্তের বিবিধ মারণব্যাধি, এমনকী রক্তের ক্যানসারকেও যে রুখে দেওয়া যায়, দিব্যি নির্বাহ করা যায় স্বাভাবিক জীবন, তা চাক্ষুষ দেখে আসা যাবে ক্যানসার সার্ভাইভরদের বার্ষিক মিলনোৎসব উজ্জীবন ২০১৭-য় উপস্থিত হয়ে। রোটারি সদনে ২৬ নভেম্বর পিকনিক গার্ডেন লীলা সেবা সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে থাকবেন নানা বয়সের একশোরও বেশি কর্কটজয়ী। ওঁরা গান গাইবেন, আবৃত্তি করবেন এবং শোনাবেন এই রোগের সঙ্গে তাঁদের লড়াইয়ের ব্যতিক্রমী কাহিনি। ঘটনাচক্রে ওঁদের প্রত্যেকেরই চিকিৎসক বিশিষ্ট রক্তবিশেষজ্ঞ সৌম্য ভট্টাচার্য। তিনি রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী আবার গৌড়গোধূলি-র বেস্টসেলার ঔপন্যাসিকও বটে। ক্যানসার রোগীদের প্রতি উৎসর্গীকৃত তাঁর গাওয়া ৮টি রবীন্দ্রগানের অ্যালবাম ‘শ্রাবণের ধারার মতো’ মুক্তি পাবে সেদিনই। বাংলার নবজাগরণের প্রেক্ষাপটে তিনি লিখেছেন ঐতিহাসিক উপন্যাস নতুন আলো (আনন্দ পাবলিশার্স)। তারও আনুষ্ঠানিক প্রকাশ হবে ওই একই মঞ্চে।
রক্তকল্যাণ
একটা অস্থির সময়ের ভিতর দিয়ে যাচ্ছিলেন সীমা মুখোপাধ্যায়। একাধারে অভিনেত্রী এবং রঙরূপ নাট্যগোষ্ঠীর কর্ণধার তিনি, বলছিলেন ‘রাজনৈতিক আর ধর্মীয় মৌলবাদ যে সন্ত্রাস তৈরি করেছে তার সঙ্গে যুঝে উঠতে পারছিলাম না, আবার মন থেকে পারছিলাম না মেনে নিতেও।’ ঠিক এই প্রেক্ষিতেই যখন তাঁদের নতুন নাটক নির্বাচনের কথা উঠল, তখনই পরিকল্পনা ‘রক্তকল্যাণ’-এর। শঙ্খ ঘোষ অনূদিত এ-নাটকটির মূল রচয়িতা গিরিশ কারনাড, তাঁর কন্নড় নাটকটির নাম ‘তালেদণ্ড’। সীমার নির্দেশনায় রঙরূপ-এর ‘রক্তকল্যাণ’-এর (সঙ্গে মহড়ার ছবি) প্রথম অভিনয় অ্যাকাডেমিতে ২৬ নভেম্বর সন্ধে সাড়ে ৬টায়, সংলাপ কলকাতা নাট্যোৎসবে।
অনীক
পাঁচ বছর আগে, ২০১৩-র জানুয়ারি মাসে প্রয়াত হন ‘অনীক’ পত্রিকার আজীবন সম্পাদক দীপঙ্কর চক্রবর্তী। অনীক মানে সৈনিক। দীপঙ্কর চক্রবর্তীর পরিচালনায় অনীক বুদ্ধিক্ষেত্রের সৈনিক হিসেবে যেমন পণ্ডিতমহলে মান্যতা আদায় করে, তেমনই বামপন্থী কর্মীদের কাছেও একই রকম গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করে। নকশালবাড়ি আন্দোলন পর্বে অনীক হয়ে উঠেছিল প্রায় সমগ্র তৃতীয় ধারার তাত্ত্বিক মুখপত্র। জরুরি অবস্থার দিনগুলিতে দীপঙ্কর চক্রবর্তী বিনা বিচারে বন্দি হিসেবে ১৯ মাস কারাবাস করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর অনীকের প্রকাশ অব্যাহত। ৫৪ বছরে পা দিল পত্রিকাটি। তাঁর স্মরণে প্রতি বছর একটি করে বক্তৃতার আয়োজন করে অনীক। এ বারের, অর্থাৎ তৃতীয় বর্ষের বক্তা বাংলাদেশের বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বদরুদ্দিন উমর। বিষয়: অক্টোবর বিপ্লব ও সোভিয়েট সমাজতন্ত্র নির্মাণের সমস্যা। ২০ নভেম্বর বিকেল ৪টেয় রামমোহন লাইব্রেরি হল।
প্রদ্যুম্ন
‘এত-যে ঘনিষ্ঠতা, তার মধ্যেও বন্ধুটিকে বড়ো রহস্যময় লাগে সব সময়ে। একটা কোনো আচ্ছাদন আছে কোথাও, কোনো আত্মসংবৃতি।... কিন্তু আশ্চর্য, আমাদের সকলেরই খোঁজ জানত সে... কীভাবে যে, আজও তা আমার বোধের অগম্য।’ প্রদ্যুম্ন ভট্টাচার্যকে নিয়ে লিখেছেন শঙ্খ ঘোষ তাঁর ‘কলেজের দিনগুলি’তে। এমন গহন স্মৃতি, কিংবা মানুষটিকে নিয়ে ব্যক্তিগত-নৈর্ব্যক্তিক নানান অনুষঙ্গে লিখেছেন বিশিষ্টজনেরা। শামিল-এর প্রকাশনা: প্রদ্যুম্ন। তাঁর নিজের রচনাদি, চিঠিপত্র, সাক্ষাৎকারও ঠাঁই পেয়েছে বইটিতে। নদীবিশেষজ্ঞ কপিল ভট্টাচার্যের পুত্র প্রদ্যুম্ন (১৯৩২-২০১৬) হিন্দু স্কুল, প্রেসিডেন্সি কলেজ হয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম এ করেছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান, বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্যে। সাহিত্য রাজনীতি নৃতত্ত্ব, সমাজবিদ্যা, চিত্র, সিনেমা, স্থাপত্য, ভাস্কর্য নিয়ে তাঁর নিরবচ্ছিন্ন মগ্ন সারস্বত সাধনার মূলে ছিল তাঁর শিকড় সন্ধান। ২০ নভেম্বর তাঁর জন্মদিন পালিত হবে সন্ধে ৬টা থেকে সাড়ে ৭টা, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবেকানন্দ হলে। বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করবেন শঙ্খ ঘোষ। আয়োজনে শামিল। সঙ্গে বইটির প্রচ্ছদ।
সময়
হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, কিশোরকুমার থেকে অন্তরা চৌধুরীর গান দিয়ে সাজানো ভরতনাট্যম শিল্পী প্রকৃতি বসুর উদ্যোগে ‘সময়’ শীর্ষক নৃত্যানুষ্ঠান। ২৩ নভেম্বর, সন্ধে ৬টায় আইসিসিআর প্রেক্ষাগৃহে। ‘তখন তোমার একুশ বছর বোধ হয়...’ এমনই সব কালজয়ী গানের নানা তথ্য মিলবে এই অনুষ্ঠানে। সত্তরের দশক থেকে শুরু করে বহু জনপ্রিয় গানকে ভিত্তি করেই নাচের কোরিয়োগ্রাফি করা হয়েছে। থাকবেন অঞ্জনা বন্দ্যোপাধ্যায়, অলকানন্দা রায়, প্রবাল মল্লিক, সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়, গৌতম দে, দেবাশিষ কুমার প্রমুখ। সংগীতে চন্দ্রাবলি রুদ্র দত্ত, দীপাবলি দত্ত এবং গার্গী ঘোষ। ভাষ্যপাঠে দেবাশিস বসু।
আস্থা
প্রস্তুতিপর্ব চলছে, আর ছবি তৈরির এই প্রস্তুতিপর্বটাকেই নিজের কাছে পরম প্রাপ্তি বলে মনে করছেন অনুমিতা দাশগুপ্ত। তাঁর এই ছবির মুখ্য ভূমিকায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, তাঁর সঙ্গে এ নিয়ে ভাবনার বিনিময়ও শুরু করেছেন অনুমিতা, জানালেন ‘সৌমিত্রদার কাছে প্রতি মুহূর্তে শিখি। আমাদের যে ইনস্টিটিউট সেখানেও উনি যখন ক্লাস নেন, তখন ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আমিও শিখি। আমার প্রথম ছবি ‘জুমেলি’তে উনি অভিনয় করেছিলেন, ওঁকে নিয়ে কাজ করাও এক শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা। আমার নতুন ছবিতে জ্ঞানচর্চা আর মুক্তমনের এক মানুষ তিনি— সেলিম খান, একদা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনশাস্ত্রের অধ্যাপক, ধর্মীয় অনুশাসন থেকে সরে এসে স্বেচ্ছানির্বাসনে দিন কাটান। আশি-পেরনো অত্যন্ত সুপুরুষ এই মানুষটির জীবনে হঠাৎ রহস্যময় ভাবে ফিরে আসে তাঁর ধূসর অতীত।’ অনুমিতা হাতেকলমে ছবির কাজ শিখেছেন চিত্রবাণী থেকে, তথ্যচিত্র ছাড়াও বেশ কিছু বিজ্ঞাপনের ছবি করেছেন, স্বশিক্ষিত পরিচালক। ভবানীপুরে একটি ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটেরও কর্ণধার তিনি। কিন্তু কখনওই ছবিকে নিছক বাণিজ্য-বিপণনের তল্পিবাহক ভাবতে পারেন না। তাই তাঁর নতুন ছবির আসন্ন শুটিংয়ের মুখে বলেই ফেললেন ‘সাধারণ মানুষের কাছে অবশ্যই আমার ছবিকে পৌঁছে দিতে চাই তবে তা শিল্পের শর্তে।’ প্রেমেন্দ্র মজুমদার রচিত এ ছবির কাহিনিতে অসহিষ্ণু সময়ের মুখচ্ছবি। ‘অনুমিতার আগের ছবিতে কাজ করে আমার ভাল লেগেছিল, এ ছবিতেও ভাল লাগবে আশা করি।’ সৌমিত্রর স্বরে আস্থা ফুটে ওঠে।