শতবর্ষে বসু বিজ্ঞান মন্দির
আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৮-১৯৩৭) মাইক্রোওয়েভের সাহায্যে বেতার-বার্তা পাঠানোর কাজে পথিকৃৎ। এ ছাড়া সেমিকন্ডাক্টর-ভিত্তিক গ্রাহকযন্ত্র তৈরিতেও তিনিই ছিলেন প্রথম। সে সময়ে তাঁর এই আবিষ্কারের গুরুত্ব ততটা বোঝা যায়নি। কিন্তু এখন এই দুই প্রযুক্তি ছাড়া আধুনিক জীবন কল্পনাই করা যায় না। অচিরেই মোবাইল ফোনের ৫-জি প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত হতে চলেছে তাঁর উদ্ভাবিত মাইক্রোওয়েভ। আবার জগদীশচন্দ্রের আর এক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ ‘ইন্টারডিসিপ্লিনারি’ গবেষণার সূচনা করা, যেখানে পদার্থবিজ্ঞান, জীবনবিজ্ঞান বা রসায়ন মিলে গিয়েছে। পদার্থবিদ্যার কৌশল কাজে লাগিয়ে তিনি তৈরি করেন এমন সব যন্ত্র, যার সাহায্যে উদ্ভিদের অন্দরে চলতে থাকা বিভিন্ন জৈবিক প্রক্রিয়ার খবর জানা সম্ভব হয়। ১৯১৭ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বসু বিজ্ঞান মন্দির— যে প্রতিষ্ঠান কেবল একটি গবেষণাকেন্দ্র নয়, বিজ্ঞানসাধনার মন্দির-স্বরূপ। এর গোড়াপত্তনের সঙ্গে নিবিড় ভাবে জড়িত ছিলেন ভগিনী নিবেদিতা ও রবীন্দ্রনাথ। শতবর্ষ অতিক্রম করে বসু বিজ্ঞান মন্দির পা দিতে চলেছে ১০১ বছরে। বিভিন্ন সময় এই প্রতিষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন দেবেন্দ্রমোহন বসু, শম্ভুনাথ দে, গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্যের মতো দিকপাল বিজ্ঞানী, যাঁরা তাঁদের মৌলিক অবদানের জন্য বিশ্বের স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। বর্তমানে সাতটি ক্যাম্পাসে ছড়ানো বসু বিজ্ঞান মন্দির। শতবর্ষ উপলক্ষে আছে বিপুল কর্মসূচি। প্রথম পর্ব চলবে ১০১তম প্রতিষ্ঠা দিবস ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। সেই দিনই সূত্রধর প্রকাশ করবে শ্যামল চক্রবর্তীর লেখা শতবর্ষে বসু বিজ্ঞান মন্দির। প্রকাশিত হল তরুণ রানা-র প্রোজেক্ট বোস ইনস্টিটিউট।
বাদল বাউল
বড় মাপের প্রথম কবিতা উৎসবটি শেষ হয়েছে সদ্য, তাতে কবি-নির্বাচন নিয়ে তুমুল অশান্তি, এ সব থেকে নিজেকে যখন সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন শঙ্খ ঘোষ, ঠিক তখনই তাঁর প্রকাশিতব্য কবিতার বইটির নাম নিতে এসেছেন বাদল বসু। শঙ্খবাবু লিখেছেন, ‘‘নামটা ছিল ‘ছন্দের ভিতরে এত অন্ধকার’। দেখেই, মুহূর্তমধ্যে তাঁর সহাস্য তির্যক ভঙ্গিমায় বলে উঠলেন: ‘একটা কবিতা-উৎসব করেই টের পেয়ে গেলেন?’ চূড়ান্ত এক চমক লাগল আমার, আর তার পরেই দুজনের মিলিত অট্টহাসি।’’ শঙ্খবাবুর লেখাটি দিয়েই শুরু হয়েছে বাদল বাউল (বঙ্গবাণী) বইটি। সম্পাদনা বাদলবাবুর কন্যা তমালী বসু দত্ত-র, মুখবন্ধ-এ তিনি জানিয়েছেন, তাঁর বাবা মানুষ হিসাবে কেমন ছিলেন, ‘স্পষ্টবক্তা লোকটার মনটা কেমন ছিল’, তা সকলকে জানানোর অভিপ্রায় থেকেই এ বই। শঙ্খবাবুর পরের লেখাটিই নবনীতা দেব সেনের, এ ভাবেই সবিতেন্দ্রনাথ রায় সুবীর মিত্র হর্ষ দত্ত সুবোধ সরকার চিন্ময় গুহ সঙ্গীতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখের রচনা সজীব করে তুলেছে বইটিকে।
গয়নার বাক্স
বৃদ্ধা পিসিমা মারা যাওয়ার ঠিক আগে গয়নার বাক্স দিয়ে গেলেন ছোট বউ সোমলতার হাতে, থুড়ি, আগে... না পরে...? সোমলতা ভাল করে বুঝতে পারে না। তবে এটা বুঝতে পারে, এক জন মানুষের, বিশেষ করে এক জন মহিলার সম্মানের সঙ্গে, ভাল করে বেঁচে থাকতে চাই শক্তপোক্ত একটা আইডেনটিটি, পাওয়ার। পিসিমা তাই বেছে নিয়েছিলেন গয়নার বাক্স। এই বাক্সের জোরেই তিনি এত দিন এই সংসারের মাথা হয়ে এই সংসারকে ধরে রেখেছিলেন, আর আজ পঁচিশ বছর ধরে সোমলতাও মিত্রচৌধুরী পরিবারের মাথা হয়ে, এই সংসারকে ধরে রেখেছে। ১৯৯৩ সালে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় লেখেন ‘গয়নার বাক্স’ উপন্যাস। ১৯৯৬-এ এটি অবলম্বনেই পার্থপ্রতিম দেব লিখলেন ‘গয়নার বাক্স’ নাটক। একুশ বছর পর সেটি বাঘাযতীন আলাপ নাট্যগোষ্ঠী প্রথম মঞ্চস্থ করছে ৪ ডিসেম্বর, সন্ধে সাড়ে ৬টায়, ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটে। মুখ্য চরিত্রে সোহিনী সেনগুপ্ত (ছবিতে রূপা দেবের সঙ্গে)। তিন প্রজন্মের মহিলাদের একাকীত্ব, বিষণ্ণতাকে কমেডির আঙ্গিকে, রূপকের ব্যঞ্জনায় রেখে তৈরি হয়েছে এই নাটকটি। নির্দেশনায় পার্থপ্রতিম দেব।
পুস্তক-পার্বণ
বাঙ্গুরে আবার পুস্তক-পার্বণ। পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সহযোগিতায় বাঙ্গুর বই ও উৎসব কমিটির আয়োজনে বাঙ্গুর পাম্পিং স্টেশনের মাঠে ৩০ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর বইমেলা। এ বারের থিম বাংলা সাহিত্য ও সেলুলয়েড, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, ব্রাত্য বসু প্রমুখ। পঞ্চাশটিরও বেশি স্টল থাকছে মেলায়, বিশিষ্ট প্রকাশকদের সঙ্গে থাকছে লিটল ম্যাগাজিনও। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জনপ্রিয় শিল্পীরা শ্রদ্ধা জানাবেন সলিল চৌধুরী ও হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে।
আবার প্রফুল্ল
১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ এপ্রিল স্টার থিয়েটারে গিরিশ ঘোষের জনপ্রিয়তম সামাজিক নাটক ‘প্রফুল্ল’ অভিনীত হয়েছিল। এই ‘প্রফুল্ল’ নাটকটি শম্ভু মিত্র ১৯৭১ সালে বাংলা নাট্যমঞ্চ প্রতিষ্ঠা সমিতির ব্যানারে পরিচালনা করেছিলেন। আকাশবাণী কলকাতার নাটক বিভাগের শ্রীধর ভট্টাচার্য ও অজিতকুমার মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এক ঘণ্টা সতেরো মিনিটের বেতার নাট্যরূপ আকাশবাণীর স্টুডিয়োয় রেকর্ডিং করা হয়। সে নাটকে অভিনয় করেছিলেন অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, কুমার রায়, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, কেয়া চক্রবর্তী, গীতা দত্ত, শম্ভু মিত্র, তৃপ্তি মিত্র প্রমুখ। এই বেতার নাট্য আকাশবাণী কলকাতা থেকে প্রথম প্রচারিত হয় ১৯৭১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। নাটকটি সম্প্রতি আকাশবাণী সংগ্রহশালা ও নাটক বিভাগের উদ্যোগে পুনরুদ্ধার ও ডিজিটাইজ করা সম্ভব হয়েছে। ৩০ নভেম্বর রাত সাড়ে ন’টায় আকাশবাণী কলকাতার গীতাঞ্জলি প্রচার তরঙ্গে (৪৫৬.৬ মিটার) এটি শোনা যাবে।
স্মরণ
‘সেরিবান’-এর কর্ণধার গৌতম মিত্র (১৯৫৬-২০১৭) বাংলা প্রকাশনা জগতের একটি ব্যতিক্রমী নাম। প্রায় দুই দশক ধরে পশ্চিমবঙ্গের প্রথম শ্রেণির লেখক-গবেষক-বিদ্বজ্জনদের বই এই সংস্থায় প্রকাশিত হয়েছে। অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তিনি প্রকাশিত বইয়ের (বাংলা ও ইংরেজি) মানের সঙ্গে কখনও আপস করেননি। ভবিষ্যতে আরও অনেক ভাল বইয়ের পরিকল্পনা ছিল তাঁর। কিন্তু মাত্র ৬১ বছর বয়সে অকালেই চলে গেলেন ২৭ অক্টোবর। ২৯ নভেম্বর তাঁর স্মরণে তাঁর বন্ধু ও অনুরাগীরা মিলিত হবেন কলেজ স্ট্রিটে ‘বই-চিত্র’ সভাগৃহে (কফি হাউস, দ্বিতল, বিকেল ৪.৩০)।
প্রতিবাদ
সম্মিলিত কণ্ঠস্বর থেকেই উঠে আসবে প্রতিবাদ। এই লক্ষ্যেই সুইস শিল্পী ফ্রানজিসকা গ্রেবের ২১৬টি দোপাট্টা দিয়ে নির্মাণ করলেন একটি ইনস্টলেশন আর্ট, গতকাল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে। বিশ্ব জুড়ে ক্রমেই বেড়ে চলেছে নারী ও শিশুদের ওপর নির্যাতন। প্রতি বছর এই ধরনের নির্যাতন বিরোধী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে এই শহরের সংস্থা স্বয়ম। এ বারেও ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এদের অনুষ্ঠান পালিত হবে। গতকাল তারই সূচনাপর্বে ‘ভয়েসেস অব কারেজ অ্যান্ড সরো— উইমেন ইন দ্য ডার্ক স্পিক আউট’ শীর্ষকে হল এই অনুষ্ঠান। দক্ষিণ এশীয় মহিলাদের শান্তি, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং সুবিচারের লক্ষ্যে ৩০ নভেম্বর ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে আয়োজিত হয়েছে থিয়েটার, গান এবং কবিতা কোলাজ সন্ধ্যা। থাকবেন কমলা ভাসিন, অপর্ণা সেন, অঞ্জুম কাটিয়াল, রমণজিৎ কউর এবং ক্রিয়েটিভ আর্ট। মেটিয়াবুরুজে পণপ্রথা বিরোধী অনুষ্ঠান, এক দৌড় সমতা কে অউর শীর্ষক সম্মিলিত দৌড়, ডায়মন্ডহারবারে সচেতনতামূলক দেওয়ালচিত্র অঙ্কন এবং ফিল্ম প্রদর্শন— ইত্যাদিও রয়েছে অনুষ্ঠানের বিভিন্ন দিনে।
ঋতু
সল্ট লেক সিটি প্রয়াসমের স্টুডিয়ো ‘আহ্লাদী’ ডান্স-থেরাপি নিয়ে কাজ করে চলেছে। আজকের শিশুকিশোর বা তরুণ প্রজন্মের ভেতরের আশা-ভরসা বা ক্ষোভ-বিক্ষোভকে ঠিক ভাবে চিনে নিতেই এই ডান্স-থেরাপির প্রয়োগ বলে জানা গেল। এই পদ্ধতি প্রয়োগে সুফলও মিলেছে। ইতিমধ্যেই, আমেরিকার অ্যাডবি সংস্থা থেকে মিলেছে সহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক স্তরের কয়েকটি পুরস্কার। অ্যাডবি প্রোজেক্ট ১৩২৪, ইন্ডিয়ান অয়েল এবং ন্যাশনাল ইনশিয়োরেন্স কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে এবং প্রয়াসমের পক্ষে ৩০ নভেম্বর আইসিসিআর-এ বিকেল সাড়ে ৪টের সময় আয়োজিত হয়েছে ঋতু শীর্ষকে একটি অনুষ্ঠান। ইন্দো-আমেরিকান প্রকল্পের এই অনুষ্ঠানটি, আয় বৃষ্টি ঝেঁপে, রুঠা বসন্ত্, উইন্টার কল এবং সূর্যসখা— এই চার ভাগে বিভক্ত। (সঙ্গে তারই ছবি) সঙ্গে থাকছে তরুণ প্রজন্মের মেয়েদের আলোকচিত্র নিয়ে একটি প্রদর্শনী এনগেজিং উইথ এমপাওয়ারমেন্ট।
পুনর্মিলন
দমদমে যশোহর রোডের ধারে ১৩৫ বছর বয়সি স্কুলটির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল সবুজের মধ্যে। বাংলা মাধ্যমের স্কুলে বাবা-মায়েরা মেয়েদের পাঠাতেন এই ভেবে যে শৃঙ্খলাটা তো শিখবে! যাঁকে ঘিরে মূলত ছড়িয়ে পড়েছিল স্কুলের সুনাম, তিনি কেরল থেকে আসা নিবেদিতপ্রাণ আশালতা মামেন। ছাত্রীমহলে এক সময় কাড়াকাড়ি চলত যে বইটি নিয়ে, সেই ‘উত্তরফাল্গুনী’ উপন্যাসের নায়িকা-কন্যা পড়ত এই স্কুলে আর যাঁর স্নেহধন্য ছিল সে, তিনিই মিস মামেন। আস্থা, ভালবাসা, আনন্দ-স্মৃতি ভাগ করে নিতে বছরের শেষে পুনর্মিলনের আয়োজন করেছে ক্রাইস্ট চার্চ গার্লস হাইস্কুল অ্যালামনি অ্যাসোসিয়েশন। ১৫ ডিসেম্বর, স্কুলের প্রেক্ষাগৃহে সকাল ১০টা থেকে।
অভিজ্ঞতা
সুচিত্রা মিত্রর সঙ্গে যখন প্রথম এসরাজ বাজিয়েছেন, তখন তিনি ক্লাস সেভেন। তার পর বাজিয়েছেন একটানা ছাব্বিশ বছর। সত্য চৌধুরীর সঙ্গে সংগত করার জন্যে কলকাতা দূরদর্শনে প্রথম পা রাখেন ১৯৭৬ সালে। দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে সংগত করছেন প্রায় চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, অশোকতরু বন্দ্যোপাধ্যায়, অর্ঘ্য সেন, সুমিত্রা সেন— এমন অনেকের সঙ্গে সংগত করার অভিজ্ঞতা আছে এসরাজবাদক অঞ্জন বসুর ঝুলিতে। দক্ষিণ রুচিরঙ্গ-এর উদ্যোগে তিনি এ বার বিখ্যাত শিল্পীদের সঙ্গে সংগত করার অভিজ্ঞতা শোনাবেন এবং তাঁদের গাওয়া বিশেষ কিছু গানের গায়কি এসরাজে বাজিয়ে শোনাবেন ১ ডিসেম্বর, সন্ধে ৬.১৫-য়, গ্যালারি গোল্ড প্রেক্ষাগৃহে। পরিকল্পনা ও পরিচালনায় রজতেন্দ্র মুখোপাধ্যায়।
কল্পনির্ঝর
প্রতি বছরের মতো এ বছরও কল্পনির্ঝর ফাউন্ডেশন ও গ্যেটে ইনস্টিটিউট (ম্যাক্সমুলার ভবন) ‘১৫তম কল্পনির্ঝর আন্তর্জাতিক শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভাল’ আয়োজন করেছে বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিকাল মিউজিয়মে (১৯এ গুরুসদয় দত্ত রোড)। ১-৫ ডিসেম্বর, বিকেল সাড়ে ৫টা। মোট ২৯টি দেশের পঁচানব্বইটি ছবি দেখানো হবে এই উৎসবে। ২ মিনিট সময়ের ছবি যেমন দেখা যাবে, তেমনই ৩০ মিনিটের ছবিও দেখতে পাওয়া যাবে। উদ্বোধন করবেন সমরেশ মজুমদার। সহযোগী কেয়ারিং মাইন্ডস।
শিল্পী
কলকাতার মতো মনোযোগী শ্রোতা নিউ ইয়র্কেও পাইনি’, বলছিলেন সুমিয়ে কানেকো। সুন্দর কিমোনোতে আদ্যন্ত জাপানি, বর্তমান নিবাস নিউ ইয়র্ক। অনুষ্ঠান করে চলেছেন সারা বিশ্ব জুড়ে, কিন্তু এই প্রথম কলকাতায়। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে ওঁর সংগীত শিক্ষার শুরু। সেই সময়েই প্রথম অনুষ্ঠান হয় জাপান রেডিয়োতে। প্রথমে টোকিয়ো ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব আর্টস থেকে এবং ২০০৬-এ বার্কলে কলেজ অব মিউজিক থেকে জ্যাজ সংগীতে শিক্ষালাভ। সংগীত নিয়ে কাজ করেছেন হার্ভার্ড, প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় এবং ওয়েলেসলি কলেজ প্রভৃতিতে। বাজনার সঙ্গেই ওঁর কণ্ঠ, লেখা এবং সুর নির্মাণের দক্ষতা অসাধারণ। দুটি জাপানি ধ্রুপদী বাদ্যযন্ত্র কোতো এবং শামিসেন বাজান তিনি। এক সময় এগুলি জাপান রাজদরবারে বাজানো হত। অনেক পরে সাধারণ মানুষের নাগালে আসে এই সুর ও যন্ত্র। এর মধ্যে চেহারার জন্য কোতো-কে বলা হয় ড্রাগন ইনস্ট্রুমেন্ট। এটি ১৩ থেকে ৮০ তারের পর্যন্ত হয়। আর শামিসেন হল আমাদের একতারার আদি গুরু। মিশর থেকে চিন হয়ে গিয়েছে জাপানে। ‘একতারা সূত্রে শামিসেনের সঙ্গে ভারতের একটা যোগ রয়েছে’, জানালেন তিনি। এর প্লেকট্রাম তৈরি হয় হাতির দাঁতে। সম্প্রতি বিড়লা অ্যাকাডেমির মুক্তমঞ্চে তিনি ওঁর বাজনা শুনিয়ে গেলেন এই শহরকে। কলকাতার জাপান কনস্যুলেটের সহায়তায় ‘ইউফোনিস অব কোতো অ্যান্ড শামিসেন’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানটি হয়ে গেল। এই শহরের রসিক শ্রোতা আর সুস্বাদু খাবারের প্রতি জানালেন ওঁর শ্রদ্ধার কথা। ঘুরে দেখলেন মাদারের বাড়ি আর কালীঘাট।