কলকাতার কড়চা: তথ্যচিত্রে শারদ অর্ঘ্য

এখানেই এশিয়া তথা ভারতের প্রথম ধ্বনি মুদ্রণের কাজ শুরু হয়। সেই থেকে ধুম লাগল নতুন রেকর্ড প্রকাশের। বিনোদনের এক নতুন তরঙ্গ ক্রমশই ছড়িয়ে পড়তে লাগল বাঙালির জীবনে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৮ ০০:২২
Share:

বাঙালির পুজোর সঙ্গেই গানের সম্পর্ক অন্তরঙ্গ। এক সময় কলকাতায় শব্দগ্রহণ করে রেকর্ড মুদ্রিত হয়ে আসত বিদেশ থেকে। গ্রামোফোন কোম্পানি কলকাতায় শাখা অফিস চালু করে ১৯০১ সালে। শশীমুখীর কণ্ঠে ‘আমি কি সজনী কুসুমেরি...’ শীর্ষকে প্রথম বাংলা গানটি রেকর্ড হয় ১৯০২ সালে। ১৯০৭-এ সেই কোম্পানি চলে আসে ১৩৯ বেলেঘাটা রোডে। এখানেই এশিয়া তথা ভারতের প্রথম ধ্বনি মুদ্রণের কাজ শুরু হয়। সেই থেকে ধুম লাগল নতুন রেকর্ড প্রকাশের। বিনোদনের এক নতুন তরঙ্গ ক্রমশই ছড়িয়ে পড়তে লাগল বাঙালির জীবনে। শারদ উৎসব উপলক্ষে নানাবিধ গানের সঙ্গেই থাকত আগমনী এবং বিজয়ার গান। আর ছিল এই গান নিয়ে প্রকাশিত গানের পুস্তিকা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রকাশিত বাংলা গানের পুস্তিকায় পুজোর গানের ১৭টি রেকর্ডের উল্লেখ পাওয়া যায়। দু’পিঠ ব্যাপী দশ ইঞ্চি ভায়োলেট লেবেল লাগানো তিনটি গ্রামোফোন রেকর্ড। শিল্পীরা ছিলেন মানদাসুন্দরী দাসী, নারায়ণচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, কে মল্লিক। বাকি চোদ্দোটি রেকর্ড ব্ল্যাক লেবেল লাগানো, তাতে শিল্পীরা হলেন কৃষ্ণভামিনী, সরলাবাঈ, চণ্ডীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, শশিভূষণ দে, বেদানা দাসী, অমলা দাশ প্রমুখ। পরবর্তী সময়ে পাইয়োনিয়ার, হিন্দুস্থান, মেগাফোন, সেনোলা ইত্যাদি কোম্পানি এই ধরনের পুস্তিকা প্রকাশ করতে থাকে। এতে থাকত গানের বিবরণ, নামপত্রের প্রতিলিপি এবং গান নিয়ে নানা কথা। প্রণমামি শ্রীদুর্গে, শরৎ বন্দনা, শারদীয় অর্ঘ্য— এ ধরনের নাম হত পুস্তিকাগুলির। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, ১৯৪০-এও পুজোর গানের প্রকাশ থেমে যায়নি। ১৯১৪ থেকে ১৯৪০— এই সময়কার গানের ইতিহাস নিয়ে অরিন্দম সাহা সর্দারের ভাবনা ও রূপায়ণে নির্মিত হয়েছে একটি তথ্যচিত্র ‘শারদ অর্ঘ্য’। দিলীপকুমার রায়, কমলা ঝরিয়ার মতো শিল্পীদের যাত্রা শুরুর কথা, প্রথম বাংলা গজল বা স্বদেশি আন্দোলনের গান, রেকর্ড সংক্রান্ত তথ্য, শিল্পীদের ছবি, গান নিয়ে নানা গল্প, পুস্তিকা প্রচ্ছদ, নামপত্র প্রতিলিপি— ইত্যাকার নানা তথ্য উঠে এসেছে এখানে। বিশেষজ্ঞের মতামত দিয়েছেন সুশান্তকুমার চট্টোপাধ্যায়, স্বপন সোম। পাঠে অনুপ মতিলাল, পার্থসারথি বণিক, সোমা চক্রবর্তী এবং জীবনস্মৃতি-র সাথিরা, আলোকচিত্র গ্রহণে ঋষিতা সাহা সর্দার। সিনেভাস এন্টারটেনমেন্ট এবং ফোকাস-এর পরিবেশনায় এই ছবিটি ১২ অক্টোবর সন্ধে ৬টায় প্রদর্শিত হবে নিউ টাউনের নজরুলতীর্থ প্রেক্ষাগৃহে। সঙ্গের ছবিতে এইচএমভি-র শারদ অর্ঘ্যের প্রচ্ছদ, ১৯৩৬।

Advertisement

পঁচাশি বছরে

Advertisement

অলোকরঞ্জন দাশগুপ্তের (জন্ম ৬ অক্টোবর ১৯৩৩) লেখালিখির সূচনা ১৯৫০-এর দশকে। কলকাতার জাতক অলোকরঞ্জনের কৈশোরের কিছুটা কাটে সাঁওতাল পরগনার রিখিয়ায়। শান্তিনিকেতনে আবাসিক স্কুলজীবন যেমন তাঁর সৃজনশীলতাকে লালন করেছিল, কলেজজীবনে সেন্ট জ়েভিয়ার্স ও প্রেসিডেন্সির পরিশীলন তাঁকে দিয়েছিল নন্দনতাত্ত্বিক পরিসর। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অলোকরঞ্জন যোগ দেন যাদবপুরের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগে (১৯৫৭)। ১৯৭১ সালে তিনি জার্মানি পাড়ি দেন। তখন থেকে হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা তথা গবেষণারত কবির সময় কলকাতা ও জার্মানির মধ্যে দ্বিধাবিভক্ত। যৌবনবাউল (১৯৫৯) থেকে শুকতারার আলোয় পড়ি বিপর্যয়ের চিঠি (২০১৮) পর্যন্ত তাঁর মৌলিক কবিতা-বইয়ের সংখ্যা চুয়াল্লিশ। রবীন্দ্রচর্চা, জার্মান থেকে বাংলায় অনুবাদে তিনি অনলস ভাবে ব্যাপৃত। ৬ অক্টোবর তিনি পঁচাশি পূর্ণ করলেন। এই উপলক্ষে ‘মরুপথিক’ পত্রিকার (সম্পা: নীলাব্জ দাস) সূচনা সংখ্যাটি প্রকাশিত হল।

আলোকচিত্রী

ও হে ছোকরা, অত দূর থেকে ছবি হয় না কি? ছবি বিশ্বাসের ছবি তুলতে গিয়ে প্রথম দিনেই মোক্ষম শিক্ষাটি হয়ে গেল। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ছবিতে ক্লোজ়আপ অপরিহার্য! ছবি তোলার নেশা ছিল ছোট থেকেই। ফুটপাতে কুড়িয়ে পাওয়া ক্যামেরায় ফিল্মের রোল ভরে শুরু হয়েছিল হাত পাকানো। তার পর বিবেক দংশনে আবার সে ক্যামেরা রেখে আসেন রাস্তাতেই। একটু বড় হয়ে ছবি পাঠাতে শুরু করলেন বসুমতী, আনন্দবাজারে। ছাপা হল। ধর্মতলার স্টুডিয়োয় আলাপ আলোকচিত্রী তরুণ বসুর সঙ্গে। তিনিই টেনে আনলেন সিনেমার স্থিরচিত্র তোলার কাজে। তার পর সেখানেই থিতু। পাঁচ দশকের কেরিয়ারে তপন সিংহের সঙ্গে ছিলেন দীর্ঘ দিন। উত্তমকুমারের প্রিয় আলোকচিত্রী। ছবি তুলেছেন সত্যজিৎ রায়ের একাধিক শুটিংয়েও। অশীতিপর এই আলোকচিত্রী সুকুমার রায় চলে গেলেন সম্প্রতি। ছবি: সঞ্জিৎ চৌধুরী

নিসর্গচিত্র

নিসর্গ সৌমেন খামরুইয়ের প্রিয় বিষয়। কিন্তু তার মধ্যে তিনি খুঁজতে থাকেন অবকাশের জ্যামিতি। টেম্পেরায় ধরতে চান চার পাশের চেনা পৃথিবীর অচেনা কবিতাকে। রাজ্য চারুকলা পর্ষদের বইপত্র প্রকাশ আর নানা কাজের ফাঁকেও চালিয়ে যান ছবি আঁকার চর্চা। গবেষণা করেছেন ১৮৫০ থেকে ১৯৫০ পর্বে বাংলার নিসর্গচিত্র নিয়েই। টেম্পেরার মতো একটি জটিল মাধ্যমে কাজ করতে অন্য রকম আনন্দ পান সৌমেন, জানালেন তাঁর পঞ্চম একক প্রদর্শনীতে। রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের কাছে সোসাইটি অব কন্টেম্পোরারি আর্টিস্টস গ্যালারিতে টেম্পেরায় তাঁর নিসর্গের কাজ নিয়ে শুরু হয়েছে নবতম প্রদর্শনীটি। চলবে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত, ৩-৮টা।

সৌম্যেন্দ্রনাথ

স্বাধীন চিন্তা আর যে যুক্তিবাদের সন্ধান করেছিলেন সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর, তার সমর্থন পেয়েছিলেন রামমোহন রায় দ্বারকানাথ ঠাকুর আর বিদ্যাসাগরের থেকে। লিখেছিলেন ‘‘যুক্তিবাদের পথ ধরে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার ও প্রচলিত ব্যবস্থার বিশ্লেষণ করে অশান্তির ও নিষ্পেষণের মূল কারণটি বের করতে হবে তবেই মানুষ পরিত্রাণ পাবে।’’ সারা জীবন সংস্কার ভেঙে এক মতবাদ থেকে পৌঁছেছেন নতুন মতবাদে, এক কর্মকাণ্ড থেকে অন্য কর্মকাণ্ডে। ঠাকুর পরিবারের শিল্প-সাহিত্য-রুচি-সৌন্দর্যকে ভর করেই তাঁর গাঁধীজির আন্দোলন বা কমিউনিস্ট আন্দোলনে শামিল হওয়া, কিংবা ফ্যাসিজ়মের বিরুদ্ধে লড়াই। তাঁর ১১৮তম জন্মদিন এবং তাঁর হাতে গড়ে ওঠা ‘বৈতানিক’-এর ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ‘পরম্পরা’ প্রকাশ করছে মলয় রক্ষিত ও অমিত দাশ সম্পাদিত সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড। পরম্পরা-র সঙ্গে যৌথ আয়োজনে বৈতানিক-এ (৪ এলগিন রোড) গ্রন্থপ্রকাশ ৮ অক্টোবর সন্ধে সাড়ে ৫টায়। থাকবেন শঙ্খ ঘোষ চিন্ময় গুহ প্রমুখ।

এ ভাবেও

কলেজে ছাত্রছাত্রী পড়িয়ে দিন কেটে যেত তাঁর। পরনে ধুতিপাঞ্জাবি-চপ্পল, কাঁধে ঝোলা। নিরীহ শান্তিপ্রিয়, আবার বিশ্ব নিয়ে অপার কৌতূহলীও, সত্যজিতের গল্পের বঙ্কুবাবুর মতো। হঠাৎ মাথায় পোকা নড়ল, ওই পোশাকেই ঝোলায় চিঁড়ে মুড়ি খই চানাচুর বেঁধে শঙ্করনারায়ণ চৌধুরী বেরিয়ে পড়লেন পৃথিবী ঘুরতে। সালটা ১৯৮৯, বয়স তখন পঞ্চাশ। সেই শুরু, ঘুরে বেড়ানো চলতেই থাকল... সাতাশ বছর পর দেখলেন ত্রিশটি সফরে বেড়ানো হয়ে গিয়েছে ১২৫টি দেশ— তাহিতি থেকে তানজ়ানিয়া, বার্মুডা থেকে বুরকিনা ফাসো, ভানুয়াটু থেকে ভেনেজ়ুয়েলা, পানামা থেকে প্যালেস্তাইন। সন্ত্রাসবাদ বা পিরানহা মাছ, কিছুই তাঁকে থামাতে পারেনি। এই বহুবর্ণ আশ্চর্য ভ্রমণের কথাই বলবেন তিনি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল-এর নতুন লাইব্রেরি ভবনের সভাকক্ষে, ১০ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৫টায়: ‘এ ভাবেও ঘুরে আসা যায়’। সভামুখ্য অমরেন্দ্র চক্রবর্তী।

নগর-দর্শন

পাঞ্জাবি-কুর্তায় তিনি তখন পুরোদস্তুর বাঙালি। কলকাতার জাপানি কনসাল মাসায়ুকি তাগাকে দেখলে কে বলবে তিনি জাপানি! কলকাতা রিভার পুলিশ জেটিতে গঙ্গাবক্ষের ভেসেলে দাঁড়িয়ে তিনি হাতে তুলে নিলেন ঢাকের কাঠি, বোলও তুললেন (সঙ্গের ছবি)। এ ভাবেই সম্প্রতি গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণ শুরু হল আইসিসিআর এবং ফ্রিড-এর উদ্যোগে। শহরের ঐতিহ্য বিদেশিদের কাছে তুলে ধরতেই এই উদ্যোগ। এ দিনের প্রাকপুজো ভ্রমণে ছিলেন কলকাতার আমেরিকা, জাপান, চিন, ফ্রান্স, জার্মানি এবং ইতালির দূতাবাসের প্রতিনিধিরা। চা-মিষ্টি সহযোগে দুর্দান্ত আড্ডার মধ্য দিয়েই লঞ্চ পৌঁছয় বাগবাজার ঘাটে। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে কুমোরটুলি। সবাই কুমোরটুলির শিল্পীদের শেষ মুহূর্তের রূপটানের কাজ দেখে বিস্মিত! শেষে লোহিয়া মাতৃ সেবাসদনে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এক অধ্যায়

তাঁকে অনুপম কণ্ঠস্বরের অধিকারী বলেছিলেন হেমাঙ্গ বিশ্বাস, অকাতরে প্রশংসা বিলানো যাঁর স্বভাববিরুদ্ধ ছিল। ১৯৪০ দশকের মাঝামাঝি হেমাঙ্গ বিশ্বাসের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা সুরমা ভ্যালি কালচারাল স্কোয়াডের সদস্য ছিলেন মায়া গুপ্ত (দাস), অন্যরা হলেন নির্মলেন্দু চৌধুরী, খালেদ চৌধুরী, শান্তা সেন, গোপাল নন্দী, হেনা দত্ত, সন্ধ্যা দাস, পানু পাল। গণনাট্যের পূর্বসূরি এই স্কোয়াডের গান, নাটক, ছায়ানাটক, পোস্টার সিলেট-সহ সারা অসমে এক অভূতপূর্ব সাড়া জাগিয়েছিল। ১৯২৩ সালে সিলেটে মামা রায়বাহাদুর সতীশচন্দ্র দত্তের বাড়িতে জন্মেছিলেন মায়া। সেখানেই কমিউনিস্ট ভাবধারায় দীক্ষিত হন। ১৯৪৮-এ আর এক কমিউনিস্ট নেত্রী অঞ্জলি দাসের (লাহিড়ী) বাড়িতে চিত্তরঞ্জন দাসের সঙ্গে তাঁর পরিণয়। স্বাধীনতা-পরবর্তী অস্থিরতার মধ্যেই দুই সন্তানকে নিয়ে এ দেশে আসেন। চাকরিসূত্রে ঘুরেছেন সারা পশ্চিমবঙ্গ। বলতেন আর একবার জীবন পেলে শুধু গান করব, সংসার নয়। চলে গেলেন ১৯ সেপ্টেম্বর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মল্লিকপুরের বাড়িতে। তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে শেষ হয়ে গেল অসম তথা ভারতের সাংস্কৃতিক ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

সুবর্ণজয়ন্তী

ছিলেন ইনকিলাব, হয়ে গেলেন অমিতাভ। আবার তিনি ভক্তদের কাছে বিগ বি বা শাহেনশাহ নামেও সমধিক পরিচিত। ১৯৬৯ সালে ‘সাত হিন্দুস্তানি’ (সঙ্গে তারই পোস্টার)ছবি দিয়ে অ্যাংরি ইয়ং ম্যানের বলিউডি সিনেমায় আত্মপ্রকাশ। ইলাহাবাদের এক হিন্দু-শিখ পরিবারে অমিতাভ বচ্চনের জন্ম (১১ অক্টোবর ১৯৪২)। বাবা হরিবংশ রাই বচ্চন ছিলেন প্রখ্যাত হিন্দি কবি। মা তেজি বচ্চন ছিলেন অভিনয়ে উৎসাহী। দিল্লি বি‌শ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক, অভিনেতা হওয়ার জন্য কলকাতায় জাহাজ কোম্পানির চাকরি ছেড়ে মুম্বইতে সংগ্রাম শুরু করেন। ফুটবলপাগল অমিতাভ কলকাতায় থাকাকালীন মোহনবাগানের অন্ধ সমর্থক হয়ে যান। খেলা দেখতেন সবুজ গ্যালারিতে বসে। কৌশিক ইভেন্টস-এর নিবেদনে এ বার তাঁরই ৭৭তম জন্মদিনে অভিনয়জীবনের পঞ্চাশ বছর উপলক্ষে তাঁর অভিনীত ৫০টি চলচ্চিত্রের পোস্টারে সাজানো ‘ফ্যান্টাস্টিক ৫০’ শীর্ষক একটি ক্যালেন্ডার প্রকাশ পাচ্ছে। পরিকল্পক ও সংগ্রাহক সুদীপ্ত চন্দ।

সব সেরা মুকুল

‘‘মানবমুকুলদিগকে ফুটাইবার পক্ষে সাহায্য করাই মুকুলের উদ্দেশ্য।’’ সম্পাদক শিবনাথ শাস্ত্রী লিখেছিলেন ‘মুকুল’ পত্রিকার দ্বিতীয় সংখ্যায় (শ্রাবণ ১৩০২)। উনিশ শতকের শেষ দশকে ব্রাহ্মমহিলাদের উদ্যোগে স্থাপিত হয় নীতিবিদ্যালয়, পরে সেখান থেকেই ‘মুকুল’-এর প্রকাশ। ১৩০২ থেকে ১৩০৭ বঙ্গাব্দ শিবনাথ শাস্ত্রী ‘মুকুল’ সম্পাদনা করেন। বহু গুণী লেখকের সমাবেশে সচিত্র পত্রিকাটি অন্য মাত্রা অর্জন করে। তাঁর প্রয়াণ-শতবর্ষে তাঁরই সম্পাদিত ‘মুকুল’-এর নির্বাচিত রচনা নিয়ে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ থেকে অসিতাভ দাশের সম্পাদনায় প্রকাশিত হচ্ছে সব সেরা মুকুল। ১৩ অক্টোবর সন্ধে ৬টায় সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের উপাসনা গৃহে এটি প্রকাশ করবেন পবিত্র সরকার, সভাপতি প্রসাদরঞ্জন রায়।

ফেলে আসা দিন

দুলদুল ডাকনামটা হারিয়েই গিয়েছে কবে। ন’কাকার বড় মেয়ে অপর্ণা ওঁর নাম রেখেছিলেন সন্ধ্যা। ঢাকুরিয়ার ব্যানার্জিপাড়ায় ১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের জন্ম। রেডিয়োতে গল্পদাদুর আসরে প্রথম গান মাত্র বারো বছরে। ‘গীতশ্রী’ পরীক্ষায় প্রথম হন ১৯৪৬ সালে। ‘‘পণ্ডিত জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের বাড়িতে ১৯৫০ সালের ডিসেম্বর মাসে উস্তাদ বড়ে গোলাম আলি খাঁ আমার হাতে গান্ডা (নাড়া) বেঁধে দিলেন এবং সে দিন থেকেই শিখিয়েছিলেন।’’ বলছিলেন তিনি, ‘‘আমি ওঁকে বাবা বলতাম।’’ ‘অভিমান’ ছবিতে গানের সূত্রে গীতিকার শ্যামল গুপ্তের সঙ্গে আলাপ, পরে বিবাহ। তিনি বলেন, ‘‘ওয়েস্টার্ন ক্লাসিক্যাল শেখার খুব ইচ্ছে ছিল, কিন্তু শরীর দিল না!’’ সকালে চা খেয়ে প্রাণায়াম-ব্যায়াম, স্নান সেরে ঠাকুরঘর। ফিরে জলখাবার। তার পর খবরের কাগজ আর রাজ্য সঙ্গীত আকাদেমির ফাইল দেখা— এই হল শিল্পীর এখনকার নিত্য কাজের তালিকা। এরই মাঝে এখনও রেওয়াজ করেন। রয়েছে বই পড়া, সময় পেলে টিভি দেখা। পুজো এলেই অনেক স্মৃতি ভিড় করে আসে। ‘‘এখন কি পুজোর গান বলে কিছু আছে?’’ এখনও কিন্তু প্রবল ইচ্ছে মনে আর রয়েছে অসীম স্বপ্ন। ‘‘আমি স্বপ্ন দেখি একটা সুন্দর ভারতবর্ষের, যেখানে মেয়েরা স্বাধীন ভাবে নির্ভয়ে ঘুরতে পারে।’’ সেই স্বপ্নের মতোই ‘‘আমার জন্মদিন অনাড়ম্বর ভাবেই কেটে যায়। তবে অনেকেই ফুল, উপহার নিয়ে আসেন, এই ভালবাসা ও শুভেচ্ছা আমার জীবনের পাথেয়।’’ শিল্পী আনমনা হয়ে যান, ‘‘ফেলে আসা দিনগুলি এ ভাবেই ছুঁয়ে যায়। অনেকটা আমার গানের মতোই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন