স্রেফ নিজেদের কন্ট্রোল রুমে বসে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চালানোই যথেষ্ট নয়। এ বার বিভিন্ন শপিং মলের সিসিটিভি-র পর্দায় চোখ রেখে সেখানকার পরিস্থিতিও সরাসরি খুঁটিয়ে দেখতে চায় লালবাজার। এ জন্য শপিং মল এবং বড় মাল্টিপ্লেক্সগুলির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে লালবাজারের কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে ওই সংযোগ স্থাপনের জন্য থানাগুলিকে উদ্যোগী হতে বলেছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার।
পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার লালবাজারে নিজের দফতরে বসে ৬৯টি থানার অফিসার এবং ডিভিশনাল ডেপুটি কমিশনারদের সঙ্গে টেলি-কনফারেন্স করেন পুলিশ কমিশনার। সেখানেই থানা আধিকারিকদের ওই নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
লালবাজার সূত্রের খবর, এর আগে পুলিশের তরফে শহরের সরকারি-বেসরকারি সব সিসি ক্যামেরাকে এক ছাতার তলায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। যার অঙ্গ হিসেবে একটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে একটি অ্যাপও তৈরি করায় পুলিশ। যাতে রয়েছে কলকাতা পুলিশ এলাকার স্যাটেলাইট ম্যাপ। ওই ম্যাপের সূত্র ধরে কোন এলাকার কোথায় সিসি ক্যামেরা আছে, এক ক্লিকেই তা জানতে পারবেন তদন্তকারীরা। এর পাশাপাশি পুলিশের লাগানো ক্যামেরা ছাড়াও পেট্রোল পাম্প, অফিস, বা ব্যাঙ্কের বেসরকারি সিসি ক্যামেরাগুলি কোথায় আছে, সেগুলি কতটা এলাকা নজর রাখছে, ক্যামেরার হার্ড ডিস্কই বা কোথায় রয়েছে— জানা যাবে সে সবও। কিন্তু এই অ্যাপে সিসিটিভির ছবি দেখার ব্যবস্থা বা সুযোগ ছিল না।
এ বার পুলিশ কমিশনার সেই ঘাটতিটাই ঢাকতে চাইছেন। লালবাজার সূত্রের খবর, কলকাতা শহরে এখন পুলিশের প্রায় ৭০০টি সিসি ক্যামেরা আছে। আরও প্রায় ৫০০টি ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু শপিং মল বা মাল্টিপ্লেক্সে সেই রকম নজরদারি ছিল না। তবে প্রতিটি শপিং মল, মাল্টিপ্লেক্স বা বড় আবাসনগুলি তাদের নিজস্ব সিসি ক্যামেরা দিয়ে নজরদারি চালায়। গাড়ি পার্কিং থেকে শুরু করে সর্বত্র চলে এই নজরদারি। সেই ব্যবস্থাকেই এ বার নিজেদের নেটওর্য়াকের মধ্যে আনার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘রবিবার সাউথ সিটিতে আগুন লেগেছিল। কমিশনার কিছুক্ষণ পরপরই ঘটনাস্থলে থাকা আধিকারিকদের কাছ থেকে অবস্থা জানতে চাইছিলেন। শপিং মল বা মাল্টিপ্লেক্সের সিসিটিভি-র সঙ্গে যদি লালবাজারের যোগাযোগ স্থাপন করা যায়, তা হলে পুরো বিষয়টিই সরাসরি দেখতে পাবেন পুলিশের কর্তারা।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিনের ওই কনফারেন্সে শপিং মলের সিসিটিভি-র সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের বিষয়টির পাশাপাশি সেখানকার অগ্নি-নির্বাপণ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা কী রকম রয়েছে তা খতিয়ে দেখার কথা বলেছেন কমিশনার। এ জন্য শপিং মলগুলি নিয়মিত পরিদর্শনের জন্য তিনি পুলিশ আধিকারিকদের বলেছেন।