ধর্মতলায় ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে সিভিক ভলান্টিয়ার। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
যান নিয়ন্ত্রণে শহরের বেশির ভাগ রাস্তায় ট্র্যাফিক কনস্টেবলের বদলে দেখা মিলছে সিভিক ভলান্টিয়ারের। আর তা নিয়েই এ বার উদ্বেগ প্রকাশ করল লালবাজার।
শুক্রবার ছিল কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের মাসিক রিভিউ বৈঠক। সেখানে কনস্টেবলদের বদলে বেশি মাত্রায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের যান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ট্র্যাফিক পুলিশের কর্তাদের সর্তক করে দেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (৩) সুপ্রতিম সরকার। সূত্রের খবর, বৈঠকে কলকাতা পুলিশের সব ট্র্যাফিক গার্ডের ওসিদের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণের জন্য কনস্টেবলদের মোতায়েন করতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে অফিসের সময়ে যখন গাড়ির চাপ বেশি থাকে, তখন সিভিক ভলান্টিয়ারদের বদলে ট্র্যাফিক কনস্টেবলদের যান নিয়ন্ত্রণের কাজে নিয়োগ করতে বলা হয়েছে। ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের একাংশ জানিয়েছেন, কলকাতা পুলিশের ২৫টি ট্র্যাফিক গার্ডেই কনস্টেবলের ঘাটতি থাকায় বেশি মাত্রায় সিভিক ভলান্টিয়ারকে যান নিয়ন্ত্রণের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে সব গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার সংযোগস্থলে ট্র্যাফিক কনস্টেবল থাকলেও সিভিক ভলান্টিয়ারেরাই যান নিয়ন্ত্রণ করেন।
২০১৭ সালের হিসেব অনুযায়ী কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের ২১৪১টি কনস্টেবল পদ ফাঁকা রয়েছে। ফলে সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়েই যান নিয়ন্ত্রণের কাজ সামলানো হচ্ছে।
কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা সিভিক ভলান্টিয়ারদের ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ, তাঁরা হেলমেটহীন মোটরবাইক কিংবা আইনভঙ্গকারী গাড়ি ধরার নামে চালকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। পুলিশকর্তাদের দাবি, এমন আচরণ অনেক সময়ই মেনে নেওয়া যায় না। এ নিয়ে অবহিত কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তারাও।
দ্বিতীয় দফায় কলকাতা পুলিশের দায়িত্ব নিয়ে এ দিনের ট্র্যাফিক বিভাগের মাসিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। তিনি ট্র্যাফিক বাহিনীকে রাতে শহরে রাস্তায় বেশি করে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে সাধারণ মানুষ পুলিশকে রাতের রাস্তায় দেখতে পান। বর্তমানে শহরের প্রতিটি ট্র্যাফিক গার্ডের দু’জন অফিসার-সহ একাধিক পুলিশকর্মী যান নিয়ন্ত্রণের কাজে রাতে ডিউটিতে থাকেন। এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘কমিশনার ওসিদের বলেছেন, রাতে অফিসারেরা যেন ট্র্যাফিক গার্ডের বদলে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়গুলিতে থাকেন। এতে কেউ বিপদে পড়লে পুলিশের সাহায্য পাবেন। আবার রাস্তায় ট্র্যাফিক পুলিশ থাকলে বেপরোয়া গাড়ির চালকেরা সতর্ক থাকবেন।’’
লালবাজার সূত্রে খবর, কমিশনার প্রতিটি ট্র্যাফিকের আধিকারিকদের পরিষেবা নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে যানবাহন চলাচলে নতুন ধারা তৈরি হয়। এ জন্য প্রতিটি ট্র্যাফিক গার্ডকে নতুন ভাবনার প্রস্তাব দিতে বলা হয়েছে। পুলিশকর্তারা জানান, যান নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে ট্র্যাফিক সিগন্যালের সময় কম-বেশি করতে গার্ডের ওসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।