বাংলায় বলা ‘বারণ’, বিতর্ক কফি হাউসে

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৩৯
Share:

সেই আড্ডাটা..: কলেজ স্ট্রিটের কফি হাউসে। বৃহস্পতিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

‘কলকাতা কফি হাউসে বাংলায় কথা বলা যাবে না। কথা বলতে হবে হিন্দিতে!’ কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসের এক কর্মী এমন নিদান দিয়েছেন বলে এক তরুণীর করা সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টে শোরগোল শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবারই এ নিয়ে কফি হাউসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করেন কয়েক জন। তাতে যোগ দেয় বাংলা ভাষার প্রচার নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনও। কফি হাউস কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ দিনই ওই তরুণীর বিরুদ্ধে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার দ্বারস্থ হয়েছেন।

Advertisement

সোশ্যাল সাইটে পোস্ট করা ওই তরুণীর নাম ইন্দ্রাণী চক্রবর্তী। তাঁর দাবি, বুধবার বিকেলে তাঁরা তিন বন্ধু কফি হাউসে গিয়েছিলেন। মোবাইল ফোনে চার্জ দেওয়া নিয়ে কফি হাউসের এক কর্মীর সঙ্গে তাঁদের বিবাদের শুরু। ইন্দ্রাণী বলেন, ‘‘সপ্তাহে অন্তত এক দিন আমরা কফি হাউসে যাই। আগেও বহু বার মোবাইলে চার্জ দিয়েছি, সমস্যা হয়নি। কিন্তু বুধবার আমাদের বলে দেওয়া হয় চার্জ দেওয়া যাবে না। জানতে চেয়েছিলাম কেন যাবে না। বলা হয়, মালিকের সঙ্গে কথা বলুন। অথচ আমরা জানি, কফি হাউসের মালিক বলে কেউ নেই। একটি সমবায় এই কফি হাউস চালায়।’’ তরুণীর দাবি, ওই ‘মালিকের’ সঙ্গে কথা বলতে গেলেই তিনি বলে দেন, হিন্দিতে কথা বলতে হবে। কারণ, তিনি বাংলা বোঝেন না।

ইন্দ্রাণী সোশ্যাল সাইটে লিখেছেন, ‘ফের হিন্দিতে চার্জ দেওয়ার অনুরোধ জানাতে ওই ব্যক্তি বলেন, হামনে এক বার বোল দিয়া, নেহি হোগা। আব নিকলো রুমসে। ইয়ে তো বঙ্গালি হ্যায়। ইস রুমমে বাংলা নেহি চলেগা।’ ইন্দ্রাণী বলেন, ‘‘এর পর মান্না দে-র প্রসঙ্গ তুলে আমরা বলি, তাঁর গান শুনেই নতুন প্রজন্ম কফি হাউস চিনেছে। তিনিও তো বাঙালিই! ওই মালিক বলেন, মান্না দে কৌন হ্যায়? যে লোকটা আমাদের ওই মালিকের ঘরে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি উত্তরে বলেন, জানি না। অত বকব না। এখানে বাংলা বলা যাবে না, বেরিয়ে বাংলা বলুন।’’

Advertisement

ওই সংগঠনের তরফে দীপাঞ্জন অনন্যা বসু বলেন, ‘‘কফি হাউস বাঙালির চেতনায় একটা বিশেষ জায়গা নিয়ে রয়েছে। সেখানে বাংলায় কথা বলতে কেউ নিষেধ করছেন, এটা ভাবাই যায় না!’’ যদিও কফি হাউস পরিচালন সমিতির সম্পাদক তপন পাহাড়ি বললেন, ‘‘আমাদের কোনও কর্মী এমন বলতে পারেন বলে বিশ্বাস হচ্ছে না। তবু যদি বলেও থাকেন, যে তরুণীকে বলা হয়েছে তিনি কফি হাউসের পরিচালন সমিতিতে অভিযোগ জানাতে পারতেন। তার বদলে সোশ্যাল সাইটে এ ভাবে পোস্ট করায় তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ওই তরুণীর বিরুদ্ধে আমরা আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় অভিযোগ করেছি।’’ তরুণীর পাল্টা দাবি, যে ব্যবহার করা হয়েছে সেটাই সোশ্যাল সাইটে জানানো হয়েছে। এটাই তাঁদের প্রতিবাদ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন