বুড়ো-আঙুল: এ ভাবেই চলছে মদের দোকান। ছবি: সুদীপ ঘোষ
এক দিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, অন্য দিকে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত— এই দুইয়ের জাঁতাকলে পড়ে ভুগছেন মদের দোকানি ও পানশালার মালিকেরা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার বারাসত এলাকায় দেখা গিয়েছে, জাতীয় সড়কের পাশে খোলা রয়েছে বেশ কিছু মদের দোকান এবং পানশালা। তবে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা আবগারি দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, হঠাৎ এমন নির্দেশ পেয়ে দোকান সরাতে সমস্যা হচ্ছে। তবে দিন দশেকের মধ্যেই সব বন্ধ হয়ে যাবে।
গত মাসে সুপ্রিম কোর্ট এক নির্দেশ জারি করে জানায়, সারা দেশে জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কের ৫০০ মিটারের মধ্যে কোনও মদের দোকান বা পানশালা রাখা যাবে না। ওই নির্দেশের ফলে ক্ষতির মুখে পড়ে এ রাজ্যের প্রচুর মদের দোকান ও পানশালা। সেগুলির কথা ভেবে রাজ্যের বেশ কিছু সড়কের চরিত্র পাল্টে ফেলে সরকার।
ওই সড়কগুলি যে যে পুরসভা বা প়ঞ্চায়েতের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে, তাদের হাতেই সড়কগুলির ভার হস্তান্তর করা হয়। ফলে রক্ষা পায় বেশ কয়েকটি দোকান।
আবগারি দফতর সূত্রের খবর, এর পরেও বাঁচানো যায়নি উত্তর ২৪ পরগনা, বিশেষত বারাসত মহকুমার মদের দোকান ও পানশালাগুলিকে। কারণ, বারাসত দিয়ে গিয়েছে দু’টি জাতীয় সড়ক— ৩৪ এবং ৩৫। বেশিরভাগ মদের দোকান ও পানশালা ওই দুই জাতীয় সড়কের ধারে।
জেলা আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় মদের দোকান ও পানশালার সংখ্যা ১০৫। এর মধ্যে শুধু বারাসত মহকুমাতেই রয়েছে ৪০টি। যার মধ্যে ৩৫টি আবার দুই জাতীয় সড়কের দু’ধারে।
মূলত এত সংখ্যক ক্ষতিগ্রস্ত দোকানি ও কর্মীদের বাঁচাতে এবং কালোবাজারি রুখতে আবগারি দফতর থেকে ওই সব দোকান ও পানশালাগুলিকে ১ মে-র মধ্যে সরে যেতে মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই সময় পেরিয়ে গেলেও এ দিন দেখা গিয়েছে, বেশ কিছু দোকান ও পানশালা খোলা। বারাসতের ডাকবাংলো মোড়ের কাছে এক দোকানির বক্তব্য, আবগারি দফতরের নির্দেশেই তারা দোকান খোলা রেখেছেন।
পাশাপাশি দেখা গিয়েছে উল্টো ছবিও। বারাসতে যে ৩৫টি দোকান ও পানশালা ক্ষতির মুখে পড়েছিল, তার মধ্যে মধ্যমগ্রাম, দত্তপুকুরের বেশ কিছু দোকান সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যাঁরা এখনও খোলা রেখেছেন, তাঁদের ব্যাপারে আবগারি দফতরের বক্তব্য, কেউ কেউ অন্যত্র দোকান করার জায়গা এখনও পাননি। এই সব সমস্যার জন্যই আরও দিন দশেক সময় দেওয়া হচ্ছে।