kolkata police

খাস কলকাতায় পুলিশের হাত থেকে দুষ্কৃতী ছিনতাই, পার্কসার্কাসে খণ্ডযুদ্ধ

পুলিশ সূত্রে খবর, শেখ শাহনাওয়াজ ওরফে ছাট্টান কাল্লু নামে ওই দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে তিলজলা, তপসিয়া, কড়েয়া, বেনিয়াপুকুর থানায় একাধিক অপরাধমূলক কাজকর্মের অভিযোগ রয়েছে। খুন, অপহরণের মতো ঘটনাতেও তার নাম জড়িয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৯ ১৫:০৬
Share:

পুলিশ কাল্লুকে গ্রেফতার করতে এলে বাধা দেয় তার সঙ্গীরা। —নিজস্ব চিত্র।

কুখ্যাত এক দুষ্কৃতীকে ধরতে ধরতে গিয়ে আক্রান্ত হল পুলিশ। শুধু তাই নয়, ওই দুষ্কৃতীকে ধরে যখন গাড়িতে তোলা হচ্ছে তখন পুলিশি হেফাজত থেকে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে পালাল তার সঙ্গীরা! খাস কলকাতার বুকে এমন ঘটনা ঘটায় তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন লালবাজারের কর্তারা।

Advertisement

সোমবার রাতের পার্কসার্কাস এলাকার ওই ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের খণ্ডযুদ্ধও বাধে বলে অভিযোগ। তাতে বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন বলেও তপসিয়া থানা সূত্রে খবর। তবে দুষ্কৃতী ধরতে গিয়ে যে এমন অভিজ্ঞতা হবে, তা আদৌ আঁচ করতে পারেননি তপসিয়া থানার সাব-ইনস্পেক্টর সপ্তর্ষি ঘোষ।

বেনিয়াপুকুর এবং তপসিয়া থানা এলাকায় কাজ করা প্রায় সব পুলিশ অফিসারশেখ শাহনওয়াজ ওরফে ছাট্টান কাল্লুকে বেশ ভাল করেই চেনেন। তিলজলা রোডের বাসিন্দা ছাট্টান শাসকদলের একটি গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ। ওই এলাকায়বেশ সক্রিয়ওসে। বেনিয়াপুকুরেরআড্ডিবাগান বস্তিতে সম্প্রতিবেশ কয়েকটি গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনায় ছাট্টানের নাম উঠে আসে। আর সে কারণেই সোমবার রাতে ছাট্টানের ডেরাতে তার খোঁজে গিয়েছিল পুলিশ। বেআইনি অস্ত্র রাখার একটিমামলাতেও তাকে খুঁজছিল পুলিশ।

Advertisement

আরও পড়ুন: ফরাসি দূতাবাসের গাড়ি বিক্রির নামে প্রতারণা

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, গতকাল রাতে সাব-ইনস্পেকটর সপ্তর্ষিবাবুর সঙ্গে দু’জন কনস্টেবলছিলেন। বেনিয়াপুকুর থানা এলাকার মধ্যেই পড়ে আড্ডিবাগান। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,স্থানীয় থানাকে না জানিয়েই আড্ডিবাগানে ছাট্টানের খোঁজে গিয়েছিলেন সপ্তর্ষীবাবুরা। ওই বস্তিতে তৃণমূলের একটিকার্যালয়েইছাট্টানের সঙ্গে তখনবসেছিল তারই কয়েকজন সঙ্গী।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, থানার গাড়ি একটু দূরে রেখেই ওই এলাকার এক যুবককে দিয়ে ছাট্টানকে ডেকে পাঠান তপসিয়া থানার ওই আধিকারিক। ডাক পেয়ে একাই বাইরে বেরিয়ে আসে ছাট্টান। স্থানীয়রা অনেকেই রাত ১০টা নাগাদ ছাট্টানকে ওই অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে বলতে গলির মুখে এগিয়ে যেতে দেখেছেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, তখনও ছাট্টান বুঝতে পারেনি যে তাকে থানায় তুলে নিয়ে যাওয়া হবে।পুলিশকর্মীরা তাকে গাড়িতে উঠতে বলতেই সে তাদের ধাক্কা মেরে পালানোর চেষ্টা করে। পিছন পিছন তাড়া করে পুলিশও। ছাট্টানের চিৎকার শুনে ততক্ষণে বাইরে বেরিয়ে আসে তার সঙ্গী লাফা ফিরোজ, মুস্তাক, বাবলু, গুড্ডু, রিয়াজ, টাক্কা পাপ্পু, রাজুরা। তাদের সঙ্গেই অন্তত ২০-২৫ জন যুবকওই ঘিঞ্জি গলির মধ্যে পুলিশকর্মীদের ঘিরে ধরে। তাদের অনেকেরই নাম পুলিশের খাতায় দাগী অপরাধী হিসাবেরয়েছে।পুলিশের সঙ্গে ওই যুবকদের ধাক্কাধাক্কি-ধস্তাধস্তির মধ্যেই চম্পট দেয় ছাট্টান।

আরও পড়ুন: স্বচ্ছতা চাই, পুর দরপত্র বদলে গেল ‘মেনু কার্ডে’!

খবর পেয়ে বেনিয়াপুকুর এবং তপসিয়া থেকে অতিরিক্ত বাহিনী আসে। পুলিশ সূত্রে খবর, তাদের সঙ্গেও স্থানীয় ওই যুবকদের খণ্ডযুদ্ধ হয়। অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটও ছোড়ে। কয়েক জন পুলিশকর্মী আঘাত পান। ঘণ্টাখানেক পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেও, ততক্ষণে ছাট্টানের দলবল গা ঢাকা দিয়েছে।

রাতেই বিভিন্ন জায়গায় কয়েক দফা তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। কিন্তু হদিশ মেলেনি ছাট্টান ও তার সঙ্গীদের। রাতেই বেনিয়াপুকুর থানায় ছাট্টান এবং তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে নতুন মামলা দায়ের করে পুলিশ।আহত পুলিশকর্মীদের চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা করানো হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

(কলকাতা শহরের রোজকার ঘটনার বাছাই করাবাংলা খবরপড়তে চোখ রাখুন আমাদেরকলকাতাবিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন