প্রতীকী ছবি।
পাড়ার মোড়ে জটলা করলেই ছুটে আসছে পুলিশ। সেই নজর এড়াতে তাই কখনও কারখানার টিনের ছাদে, কখনও বা তস্য গলির ভিতরে চলছে জটলা, তাস খেলা।
এমনই ছবি দেখা যাচ্ছে উল্টোডাঙার ডালপট্টিতে। লকডাউনের ফলে ওই এলাকার সমস্ত ডাল মিল বন্ধ রয়েছে। কাজ নেই মিলের শ্রমিকদের। ঘুপচি ঘরে একসঙ্গে সারাদিন অনেকে মিলে থাকা কষ্টকর। রাস্তায় জটলা করলে পুলিশের রোষের মুখে পড়তে হবে। তাই তাস খেলার জন্য কখনও সরু গলি, কখনও বা কারখানারই টিনের চাল বেছে নিচ্ছেন তাঁরা।
উল্টোডাঙার ডালপট্টি এলাকায় ডাল মিল ছাড়াও রয়েছে লেদ কারখানা-সহ আরও নানা ধরনের কারখানা। শ্রমিকেরা জানাচ্ছেন, সেখানে তাঁদের অনেকেরই বাড়িতে পায়ার নীচে ইট দিয়ে খাট উঁচু করা থাকে। অনেকের জন্য খাটের তলার সেই জায়গাটুকুই বরাদ্দ। এত জায়গার অভাব যেখানে, সেখানে সারাদিন বাড়িতে বসে থাকা খুবই সমস্যার। তাই ঘরে না থেকে বাইরে বসে তাস খেলাই বেছে নিচ্ছেন ওই শ্রমিকেরা। ডালপট্টি এলাকায় পুলিশের টহলদারি চলছে মাঝেমধ্যেই। রাস্তায় অনেককে জড়ো হতে দেখলে বা বসে থাকতে দেখলে তাঁরা তুলে দিচ্ছেন। কিন্তু তা-ও চলছে পুলিশের সঙ্গে লুকোচুরি খেলা।
এলাকার কাউন্সিলর অনিন্দ্যকিশোর রাউত জানালেন, ডালপট্টির ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে জ্বর হচ্ছে অনেকেরই। এলাকার বাসিন্দাদের একটা বড় অংশই বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক। তাঁদের অনেকেই যে এখনও করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতন নন, তা স্বীকার করে নিয়েছেন অনিন্দ্যবাবু। তিনি বলেন, ‘‘এলাকার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রচুর মানুষ আসছেন জ্বর নিয়ে। সেটা হয়তো সাধারণ জ্বর। কিন্তু সাবধানে তো থাকতে হবে। জ্বর নিয়ে কেউ যেন জটলার মধ্যে না-যান, দল বেঁধে তাস যাতে না-খেলা হয়, সেই বিষয়ে সর্তক করছি। বারবার আমরা টহল দিচ্ছি পাড়ায়।’’
দাসপাড়া শ্রীবিষ্ণু ডাল মিল অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জয়কিশোর আগরওয়াল বলেন, ‘‘আমরা আমাদের এলাকার শ্রমিকদের মাস্ক দিয়েছি। এই কঠিন সময়ে শ্রমিকদের পাশে আছি।’’