প্রতীকী ছবি।
শুধু ভোটের দিনই নয়, তার দু’দিন আগে থেকেই কলকাতা পুলিশ এবং বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলির ২০০ মিটারের মধ্যে থাকা সমস্ত ক্লাব বন্ধ রাখতে হবে। সোমবার নির্বাচন কমিশন কলকাতা ও বিধাননগর পুলিশকে এই নির্দেশ দিয়েছে। এ দিন উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈনের সঙ্গে বৈঠক হয় কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজেশ কুমার-সহ শীর্ষ কর্তাদের। সেই বৈঠকে ওই নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের বাইরে ‘অবৈধ’ জমায়েত রুখতে পুলিশকে টানা মাইকে প্রচার করতে হবে। সূত্রের খবর, সতর্ক করার পরেও বুথের বাইরে জমায়েত দেখা গেলে পুলিশকে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, এ দিনের বৈঠকে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়েও আলোচনা হয়েছে। খবর পাওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই যাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী বুথে পৌঁছতে পারে, সেই ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের মতো আগামী রবিবার সপ্তম দফার লোকসভা নির্বাচনও শান্তিপূর্ণ রাখতে বদ্ধপরিকর নির্বাচন কমিশন। তাই এমন নির্দেশ।
ভোটের দিন এমনিতেই কোনও বুথের ১০০ মিটারের মধ্যে দোকান কিংবা ক্লাব খোলা রাখা যায় না। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এ দিনের বৈঠকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ভোটের দু’দিন আগে থেকেই ওই ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে কোনও রাজনৈতিক দলের সমর্থকেরা ওই ক্লাবগুলিকে ব্যবহার করে সুবিধা নিতে না পারেন। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, গত চার বছর ধরে রাজ্য সরকার সাহায্যের নামে ক্লাবগুলিকে মোটা অঙ্কের টাকা অনুদান দিয়েছে। যা নিয়ে বারবারই অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। মনে করা হচ্ছে, এই কারণেই ক্লাব বন্ধ রেখে রাশ টানতে চেয়েছে কমিশন।
পুলিশ সূত্রের খবর, স্থানীয় ক্লাবকে ব্যবহার করা রাজনৈতিক দলগুলির কাছে নতুন কিছু নয়। ২০১৬ সালে দ্বিতীয় দফার ভোটের দিন কালীঘাট থানা এলাকার একটি ক্লাবে বেআইনি জমায়েতের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল নির্বাচন কমিশনের সদর দফতরে। স্থানীয় থানার ভূমিকায় খুশি না হয়ে নির্বাচন কমিশন সরাসরি তৎকালীন পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছিল ভোট চলাকালীন ওই ক্লাব বন্ধ করে ব্যবস্থা নিতে। পরে কলকাতা পুলিশের দু’জন ডিসি ঘটনাস্থলে পৌঁছে ক্লাবটি বন্ধ করে দেন।
লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ছ’দফায় বারবারই অভিযোগ উঠেছে বুথের বাইরে বেআইনি জমায়েত নিয়ে। ওই সমস্ত জমায়েত থেকে ভোটারদের বাধা দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। কলকাতায় যাতে তা না হয়, তার জন্য ভোটের ছ’দিন আগেই পুলিশকে সতর্ক করে বেআইনি জমায়েত রুখতে নির্দেশ দিল কমিশন। বুথের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে থাকলেও বাইরের গোটা এলাকার দায়িত্ব কলকাতা পুলিশের হাতে ন্যস্ত। তাই ভোটারেরা যাতে কোনও ভাবে বাধা না পান, তা নিশ্চিত করতে হবে পুলিশকেই। শান্তিপূর্ণ ভোট করাতে পুলিশের তরফে বুথের বাইরে পিকেট, সেক্টর মোবাইল, আরটি মোবাইল ছাড়াও মোটরবাইকে নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ষষ্ঠ দফার ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, গোলমালের জায়গায় দীর্ঘ সময় ধরে দেখা যায়নি বাহিনীকে। কলকাতার ভোটে তার পুনরাবৃত্তি চায় না কমিশন। তাই বাহিনীর ‘রিঅ্যাকশন টাইম’ করা হয়েছে পাঁচ মিনিট।