অসুস্থ ভোটকর্মী, শুশ্রূষা ও ওষুধে বাঁচালেন জওয়ানেরা

রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত গিরিশ পার্কের ফ্রেন্ডস ইউনাইটেড ক্লাবের বুথে। অসুস্থ হয়ে পড়া ওই অফিসারের নাম সুভাষচন্দ্র মজুমদার। বাড়ি গড়িয়ায়। তিনি ৫৮ নম্বর বুথের দায়িত্বে ছিলেন।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৯ ০১:৫৮
Share:

অ্যাম্বুল্যান্সে অসুস্থ ওই প্রিসাইডিং অফিসার। রবিবার, গিরিশ পার্কে। নিজস্ব চিত্র

শহরে শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন করানোর দায়িত্ব তাঁদের হাতে। ছয় দফা পার করে সপ্তম দফার ভোট করাতে এখন তাঁরা কলকাতায়। প্রয়োজনে দুষ্কৃতীদের লাঠিপেটা করেন। তেমন হলে গুলি ছুড়তেও পিছপা হন না তাঁরা। সপ্তম দফায় সেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের মানবিক মুখ দেখল শহরবাসী। ভোট চলাকালীন হঠাৎ অসুস্থ এবং অচৈতন্য হয়ে পড়েছিলেন এক প্রিসাইডিং অফিসার। যা দেখে বুথের বাইরে থাকা সিআরপিএফের জওয়ানেরা ছুটে আসেন। শুশ্রূষার পাশাপাশি নিজেদের সঙ্গে থাকা জীবনদায়ী ওষুধ দেন অসুস্থ ওই অফিসারকে। তাতে কিছুটা সুস্থ বোধ করার পরেই অ্যাম্বুল্যান্সে করে অসুস্থ ওই ভোটকর্মীকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।

Advertisement

রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত গিরিশ পার্কের ফ্রেন্ডস ইউনাইটেড ক্লাবের বুথে। অসুস্থ হয়ে পড়া ওই অফিসারের নাম সুভাষচন্দ্র মজুমদার। বাড়ি গড়িয়ায়। তিনি ৫৮ নম্বর বুথের দায়িত্বে ছিলেন। পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে হাসপাতালে চলে আসেন তাঁর পরিবারের লোকজন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে অসুস্থ ওই প্রিসাইডিং অফিসারের চিকিৎসা চলছে। সিআরপিএফের জওয়ানেরা অবশ্য সুভাষবাবুর চিকিৎসা করা কিংবা তাঁকে প্রাণে বাঁচানোর কৃতিত্ব নিতে নারাজ। ওই বুথে থাকা সিআরপিএফের জওয়ান কে পি সিংহ জানান, এটি তাঁদের কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করার মতো অসুস্থ ব্যক্তির শুশ্রূষা করাটাও দায়িত্ব পালন বলেই মনে করেন তিনি। হাসপাতাল থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই ব্যক্তি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এখন অবস্থা স্থিতিশীল।

প্রিসাইডিং অফিসার অসুস্থ হয়ে পড়ায় কিছু ক্ষণের জন্য ব্যাহত হয় ওই বুথের ভোটগ্রহণ। পরে অবশ্য রিজার্ভ অফিসার দায়িত্ব নিলে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বুথের বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছে কলকাতা পুলিশের অ্যাম্বুল্যান্স। বুথ চত্বরে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। তখন প্রাথমিক শুশ্রূষার পরে কিছুটা স্থিতিশীল সুভাষবাবুকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় চলছে। অ্যাম্বুল্যান্সের দায়িত্বে থাকা কর্মীরা অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। যাওয়ার আগে সুভাষবাবু জানান, তাঁর শরীর আগে থেকেই কিছুটা খারাপ ছিল।

Advertisement

গিরিশ পার্কের বাসিন্দা দুই ভাই, প্রবীর দত্ত ও দীপক দত্ত বেলা ১২টা নাগাদ সপরিবার ওই বুথে ভোট দিতে এসেছিলেন। এ দিন বুথের বাইরে দাঁড়িয়ে তাঁরা বলেন,‘‘ভোট দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। হঠাৎ ওই অফিসার অসুস্থ হয়ে পড়েন। বুথের অন্য কর্মীরা তাঁর মাথায় জল ঢেলে, হাওয়া দিয়ে শুশ্রূষার চেষ্টা করছিলেন। যা দেখে জওয়ানেরা এগিয়ে আসেন। তাঁদের কাছে থাকা জীবনদায়ী ওষুধ দেন সুভাষবাবুকে। তাতেই কিছুটা কাজ হয়।’’

এ দিন দুপুরে আরও এক জন প্রিসাইডিং অফিসার অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতা উত্তর কেন্দ্রের হরিয়ানা পাবলিক স্কুলে। রাজেন্দ্রকুমার মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তি অসুস্থ বোধ করায় তাঁকেও নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ফের তিনি বুথে ফিরে আসেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন