ভোগান্তি: দমদম মেট্রো স্টেশনে টিকিট কাটার দীর্ঘ লাইন। —নিজস্ব চিত্র।
মাঝেমাঝেই দীর্ঘ লাইন দীর্ঘতর হতে থাকে মেট্রোর কাউন্টারে। টিকিট কাটতে এত সময় দিতে গিয়ে বিরক্ত হন অধিকাংশ যাত্রীই। অনেকেরই বক্তব্য, এর জেরে ব্যস্ত সময়ে হয়রানি হচ্ছে। মঙ্গলবারও দমদমের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে টিকিট কাটার জন্য দীর্ঘক্ষণ লাইন দিতে হয় যাত্রীদের। পরে এক সময়ে লাইন এতটাই দীর্ঘ হয় যে দমদমে নামা সাধারণ ট্রেনের যাত্রীদের স্টেশনে যাওয়া-আসা করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
এত বড় লাইন কেন? অনেকেই বলছেন, টোকেনের অভাব। ফলে ব্যবহার হওয়া টোকেন ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত অনেক সময়েই নতুন টিকিট দেওয়া যাচ্ছে না।
কিন্তু টোকেনের এত অভাব কেন? কর্মীদের একাংশের ব্যাখ্যা, মেট্রোয় যাত্রী সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। খরচ বেশি হওয়ায় সেই হারে নতুন টোকেন কেনা হচ্ছে না। ফলে দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা। এখন মেট্রোর হাতে যত টোকেন রয়েছে, সেগুলি বিভিন্ন স্টেশনের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সারা দিন ধরে আদানপ্রদান করা হয়। ফলে আচমকা কোথাও যাত্রীর ভিড় বেড়ে গেলে সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
যদিও মেট্রো কতৃর্পক্ষের অভিযোগ, অনেক যাত্রী ট্রেন থেকে নামার পরে টোকেন জমা দিচ্ছেন না। তাতেই আরও কমে যাচ্ছে টোকেনের সংখ্যা। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, মেট্রো থেকে নেমে প্ল্যাটফর্মের বাইরে বেরোতে গেলেই ওই টোকেন স্মার্ট গেটে ফেলতে হয়। নইলে গেট খোলারই কথা নয়। তা হলে কী ভাবে টোকেনে না জমা দিয়েই গেটের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছেন যাত্রীরা?
মেট্রো কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, অনেক সময়ে স্মার্ট গেট ঠিক মতো কাজ করে না। অনেক সময়ে মেট্রো আটকে যায় যান্ত্রিক ত্রুটি বা অন্য গোলমালের জেরে। তখন গোলযোগের মধ্যে অত যাত্রীকে স্মার্ট গেট দিয়ে একে একে বার করতে সমস্যা হয়। দিনের ব্যস্ত সময়েও মাঝেমধ্যে খুলে দিতে হয় গেট। তখন যাত্রীদের কেউ কেউ টোকেন নিয়েই বেরিয়ে যান। প্রশ্ন উঠেছে, টোকেন নিয়ে যাত্রীরা কী করবেন? মেট্রোকর্তারা বলছেন, এই টোকেন পরের দিন ব্যবহার করা যায় না। টোকেনটি কোনও কাজে লাগে না।
মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি রবিবার টোকেনের সংখ্যা মিলিয়ে দেখা হয়। কেউ কেউ বলছেন, ভোর থেকে রাত পর্যন্ত টোকেন আনা-নেওয়ার সময়ে একটু দেরি হলেই বিপত্তি বাধতে পারে। যেমনটা হয়েছিল এ দিনই দমদম স্টেশনে। কম পড়ে গিয়েছিল টোকেন। যার জেরে ব্যস্ত সময়ে সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। যদিও মেট্রো কতৃর্পক্ষ জানিয়েছেন, টোকেন নিয়ে যাত্রী দুর্ভোগের কোনও তথ্য তাঁদের কাছে নেই। তা হলে কেন দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে সময় নষ্ট করতে হল যাত্রীদের? সে বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানাতে পারেননি।