Death

M.R. Bangur Hospital: প্রসূতির মৃত্যুতে গাফিলতির অভিযোগ এম আর বাঙুরে

রাজ্যে প্রসূতি ও সদ্যোজাতের মৃত্যু হার কমাতে ইতিমধ্যেই একাধিক পদক্ষেপ করেছে স্বাস্থ্য দফতর। প্রতিটি মৃত্যু অডিট করে দেখার সিদ্ধান্তও হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২২ ০৭:৫০
Share:

প্রতীকী ছবি।

সিজ়ার করে সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরের দিন সকাল থেকেই পেটে তীব্র যন্ত্রণা শুরু হয়েছিল বছর সাতাশের বধূর। পরিজনদের অভিযোগ, টানা কয়েক ঘণ্টা কষ্ট পেলেও কোনও চিকিৎসক তাঁকে তেমন ভাবে দেখেননি। শেষে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ায় নবনীতা জানা নামে ওই তরুণীকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। দু’দিন পরে, শনিবার সকালে তাঁর মৃত্যুর পরে এম আর বাঙুর হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন পরিজনেরা। পুলিশের কাছে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন তাঁরা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে গল্ফগ্রিন থানা। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্তে পুলিশকে সব রকমের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।

Advertisement

রাজ্যে প্রসূতি ও সদ্যোজাতের মৃত্যু হার কমাতে ইতিমধ্যেই একাধিক পদক্ষেপ করেছে স্বাস্থ্য দফতর। প্রতিটি মৃত্যু অডিট করে দেখার সিদ্ধান্তও হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগীর কথায়, ‘‘ওই প্রসূতি সুস্থ ভাবেই সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। কিন্তু আচমকা তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। চিকিৎসকেরা অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি মারা যান। তবে কী কারণে ওই মৃত্যু হল, সেটি অবশ্যই অডিট করে দেখা হবে।’’

বছর চারেক আগে মধ্যমগ্রামের রঞ্জিত দাসের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল নবনীতার। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তিনি পূর্ব পুঁটিয়ারিতে মা-বাবার কাছে এসে ছিলেন। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, প্রথমে বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন নবনীতা। পরে সেখান থেকে তাঁকে এম আর বাঙুরে পাঠানো হয়। নবনীতার জেঠতুতো দাদা সুরজিৎ জানা জানাচ্ছেন, গত ৬ জুলাই দুপুরে আচমকা প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয় নবনীতার। তখন তাঁকে বাঙুর হাসপাতালে এনে ভর্তি করানো হয়। সুরজিৎ বলেন, ‘‘রাত ১০টার সময়ে জানানো হয়, বোনের রক্তচাপ বেশি। ঝুঁকি রয়েছে, তাই তড়িঘড়ি সিজ়ার করতে হবে। রাত আড়াইটের সময়ে আয়াদের থেকে জানতে পারি ছেলে হয়েছে। মা ও সন্তান দু’জনেই ভাল আছে শুনে আমরা কয়েক জন বাড়ি ফিরে আসি।’’

Advertisement

অভিযোগ, ৭ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টা থেকে পেটে তীব্র যন্ত্রণা হতে থাকে নবনীতার। বার বার করে ওয়ার্ডের নার্সদের বলা হলেও কোনও চিকিৎসককে ডাকা হয়নি। সুরজিৎ বলেন, ‘‘বোন বার বার বলছিল, ওর প্রস্রাব হচ্ছে না। পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে। কিন্তু কেউ এসে দেখছিলেন না। দুপুর আড়াইটে পর্যন্ত ছটফট করেছে। তার পরে আচমকাই হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়।’’ তাঁর পরিজনেদের দাবি, তৎক্ষণাৎ তাঁকে সিসিইউয়ে নিয়ে গিয়ে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হলেও ফের তিনি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। ওই প্রসূতির স্বামীরঞ্জিত বলেন, ‘‘টানা দু’দিন হাসপাতাল ভেন্টিলেশন দিয়ে রেখে দিল। কিন্তু ওর ঠিক কী হয়েছে, কী চিকিৎসা হচ্ছে কিছুই বলা হচ্ছিল না। শনিবার সকালে জানানো হল, ও মারা গিয়েছে।’’

পরিজনেরা জানাচ্ছেন, এ দিন সকালে পুলিশকে ডেকে পাঠান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা এসে নবনীতার পরিজনদের সিসিইউয়ে চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে যান। সুরজিৎ বলেন, ‘‘প্রায় পাঁচ ঘণ্টা যখন বোন যন্ত্রণায় ছটফট করল, তখনই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করা হলে আজ এমনটা হত না। কেন তা করা হয়নি, সেই প্রশ্ন করা হলে চিকিৎসক কোনও উত্তর দিতে পারেননি।’’ রোগীর পরিজনেরা বিক্ষোভ দেখালে হাসপাতালে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে সদ্যোজাত শিশুটি আপাতত সুস্থ রয়েছে বলে হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন