বাস-মিনিবাস ইউনিয়নগুলিকে হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর।
রাস্তায় বেসরকারি বাস-মিনিবাস না নামালে, আইন অনুযায়ী ব্যাবস্থা নেবে রাজ্য সরকার। বুধবারের মধ্যে পরিষেবা স্বাভাবিক না হলে সমস্ত বাস তুলে নেওয় হবে। প্রয়োজনে পরিবহণ দফতরই চালক ঠিক করে গাড়ি চালাবে। মঙ্গলবার নবান্ন থেকে বাস-মিনিবাস ইউনিয়নগুলিকে হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, “যাত্রী স্বার্থে সরকারকে কখনও কখনও কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়। ১ জুলাই থেকে আগামী তিন মাস অনুদান দেওয়ার কথা জানিয়ে ছিলাম। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতি বদলাচ্ছে না। এক-দু’দিন সময় দিলাম। তার মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে, সব বাস তুলে নেওয়া হবে। সরকারই চালক দিয়ে গাড়ি চালাবে। মাইনে দেবে। যে ভাবে নির্বাচনের সময় তুলে নেওয়া হয়।”
যত আসন, তত যাত্রী— করোনা পরিস্থিতিতে তেমন ভাবেই বাস চালাতে বলেছিল সরকার। সেই সময়েই বাস ভাড়া বাড়ানো নিয়ে মালিক পক্ষের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়। কিন্তু জট কাটেনি। এর উপর সম্প্রতি ডিজেলের লাগাতার মূল্যবৃদ্ধিতে ভাড়া বাড়ানো ছাড়া অন্য কোনও পথ নেই বলে দাবি করেছিলেন বাস মালিকদের একাংশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, কলকাতার ৬ হাজার বাস-মালিকদের ১ জুলাই থেকে তিন মাস ১৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। কিন্তু সরকারের সেই সিদ্ধান্তকে বিভাজনের তকমা দিয়ে সোমবার থেকে বাস-মিনিবাস তুলে নেন বাসমালিকদের একাংশ। বিষয়টিকে যে ভাল চোখে দেখেনি রাজ্য সরকার তা, এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে স্পষ্ট। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মানুষের অসুবিধা হলে, কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সরকার দায়ী থাকবে না। তার জন্য ইউনিয়ন দায়ী থাকবে। পরিবহণে শিল্পে যাঁরা যুক্ত শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠকে তাঁরা ছিলেন। কথাও দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু এর পরেও অন্য রকম বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে। ডিজেলের দাম বেড়েছে। এটা সত্যি। কেউ সমর্থন করছে না। অনেক দিন ধরেই বাড়ছে। কিন্তু দাম কমলে তো বাস ভাড়া কমে না। এটাও তো মানতে হবে।”
আরও পড়ুন: করোনা-টিকা আবিষ্কারে এক ধাপ এগল ভারতীয় সংস্থা
এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী কার্যত হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, “বিপর্যয় আইনে বাস নিয়ে নেওয়া হবে। এখনও অনুরোধ করছি। অহঙ্কারের লড়াই বন্ধ করুন। এখন দর কষাকষি বন্ধ করুন। ইচ্ছে না থাকলেও, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ১ জুলাই আমরা দেখব কী হচ্ছে, তার পর ৩ জুলাই থেকে কী ভাবে, কী করা হবে, তা দেখে নেওয়া হবে।”
আরও পড়ুন: প্রধান থেকে প্রধানমন্ত্রী— কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, করোনা বিধি নিয়ে কড়া বার্তা মোদীর
এ দিনও ফের মেট্রো চালানোর পক্ষেও সওয়াল করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এ দিন জানান, মেট্রো নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে চিঠি লেখা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘মেট্রো রেল বন্ধ থাকায় মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। সরকার বাস নামিয়েছে। আমি চাই, সীমিত সংখ্যক মেট্রো চালানো হোক। যাঁরা জরুরি কাজে বেরোচ্ছেন তাঁদের জন্য অন্তত চলুক।’’