মায়ের মৃত্যুতে বাবাকে দায়ী করলেন ছেলে

এ দিন সকাল ন’টা নাগাদ শাশুড়ির ঘর পরিষ্কার করতে দরজা ঠেলে ঢুকতেই সিলিং ফ্যান থেকে শাড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় আরতিদেবীর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান বৌমা পূজা নস্কর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:১৮
Share:

আরতি নস্কর

বিয়েবাড়িতে স্ত্রী কেন আগে খেতে বসেছেন তা নিয়ে গত পাঁচ দিন ধরে পারিবারিক অশান্তি জিইয়ে রেখেছিলেন স্বামী। শনিবার সকালে কেষ্টপুরের হানাপাড়ায় মা আরতি নস্করের (৪৫) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পর এই পরিণতির জন্য বাবা বরুণ নস্করকে দায়ী করলেন ছেলে অমিত নস্কর। এ দিন বিকেলে বাগুইআটি থানায় মায়ের দেহের পাশে দাঁড়িয়ে অমিত বলেন, ‘‘মা আত্মহত্যা করতে পারে না। বাবা মাকে মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে।’’

Advertisement

পুলিশ জানায়, এ দিন সকাল ন’টা নাগাদ শাশুড়ির ঘর পরিষ্কার করতে দরজা ঠেলে ঢুকতেই সিলিং ফ্যান থেকে শাড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় আরতিদেবীর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান বৌমা পূজা নস্কর। মৃতার স্বামী পেশায় অটোচালক বরুণবাবু তখন বাড়িতে ছিলেন না। সকালে অটো নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। শাশুড়িকে ওই অবস্থায় দেখে পাশের ঘর থেকে অমিতকে ডেকে আনেন তাঁর স্ত্রী।

পরিবার সূত্রে খবর, গত ৫ ফেব্রুয়ারি বারোয়ারিতলায় ভাইয়ের ছেলের বিয়েতে অমিত এবং পূজাকে নিয়ে গিয়েছিলেন আরতিদেবী। পূজা নস্কর বলেন, ‘‘বাবা প্রথমে বলেছিলেন, বিয়েবাড়িতে যাবেন না। পরে একটু দেরিতে সেখানে পৌঁছন। কিন্তু রাতে বাবার জন্য অপেক্ষা না করে মা কেন খেতে বসেছেন এ নিয়ে অশান্তি শুরু হয়।’’ এই সামান্য বিষয় ঘিরে মারধর, কটূক্তি কিছুই বাদ ছিল না বলে পরিবারের সদস্যদের দাবি। শুক্রবার রাত ১২টা নাগাদ আরতিদেবীর সঙ্গে শেষ কথা হয় তাঁর বৌমার। তখনও কোনও অস্বাভাবিকতা দেখতে পাননি বলে দাবি পূজার। এ দিন অমিত বলেন, ‘‘বাবা প্রায়শ মা’কে মারধর করত। গত বছর মেরে হাত ভেঙে দিয়েছিল। বাধা দিতে গেলে আমাকেও মারত।’’

Advertisement

পারিবারিক অশান্তির পিছনে বরুণবাবুর বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্কও একটি বড় কারণ বলে দাবি মৃতার ভাইদের। অমিত বলেন, ‘‘সকালে মায়ের দেহ মাটিতে পড়ে থাকাকালীন তার উপরে দিয়েই বাবা হাঁটাচলা করছিল। বলছিল, নাটক করছে! এক সময় পূজাকে এটিএম কার্ড দিয়ে বলে, আমাকে তো পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে। সৎকারে টাকা লাগলে তোলো।’’ আরতিদেবীর ননদ কমললতা নস্করের প্রশ্ন, ‘‘কেউ তো পুলিশে দেব বলেনি। তা হলে এ কথা বলার মানে কী!’’

থানায় বসে বরুণবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘সকালে যখন বেরোলাম আমার পাশে শুয়েছিল। ঝগড়া চলছিল বলে কথা বলিনি। এমন করবে ভাবতে পারছি না!’’ অভিযুক্তকে আটক করেছে বাগুইআটি থানা। দেহ ময়না-তদন্তের জন্য আর জি কর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন