কলকাতায় আমিন শরিফ
বিবাহিত পুরুষদের উপরে নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিশাখাপত্তনম থেকে এনফিল্ড বুলেট নিয়ে ভারত ভ্রমণে বেরিয়েছেন তিনি।
৩০ বছরের আমিন শরিফ চান, এ বার পুরুষরাও মুখ খুলুন। তাঁর কথায়, ‘‘মর্দ কো ভি দর্দ হোতা হ্যায়।’’
এমন বিষয় নিয়ে প্রচারে কেন বেরোলেন? অকপটে জানালেন, ম্যানেজমেন্টের ছাত্র বহুজাতিক সংস্থায় চাকরি করতেন। ২০১৩ সালে বিয়ে। ৯ মাস আগে তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে সংসার ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন স্ত্রী। আমিনের দাবি, মুখ বুজে বহু লাঞ্ছনা সহ্য করতে করতে অবসাদ গ্রাস করতে শুরু করে তাঁকে।
কিছু পুরুষ সহকর্মীকে নিজের কথা বলতে গিয়ে অবাক হয়ে দেখেন, অনেকেই একই সমস্যার শিকার! সামাজিক লজ্জার ভয়ে বেশির ভাগই চুপ করে থাকেন। ইন্টারনেট ঘেঁটে আমিন দেখেন, ২০১৪-এ যদি শুধু বৈবাহিক কারণে সারা দেশে ৪৪১১ জন মহিলা আত্মহত্যা করে থাকেন, তা হলে ওই একই কারণে আত্মাহুতি দিয়েছেন ২৩৬২ জন পুরুষও।
তখনই আমিন ঠিক করেন, বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়বেন। চাকরি ছেড়ে ২৪ জানুয়ারি নিজের শহর থেকে বেরিয়ে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা, গুজরাত থেকে অসম ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। প্রতিটি শহরেই রয়েছে বাইকার্স ক্লাব। যোগাযোগ করছেন তাঁদের সঙ্গে। কথা বলছেন মানুষের সঙ্গেও।
কেমন সাড়া পাচ্ছেন? আমিনের কথায়, ‘‘কেউ হাসছেন। কেউ বিভ্রান্ত। কেউ করমর্দন করছেন। আর ৮০ শতাংশ লোক বুকে জড়িয়ে ধরছেন।’’ বহু মহিলার কাছ থেকে শুধু যে সমর্থন পেয়েছেন তা নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁরা আমিনের হয়ে প্রচারও করছেন। তবে কলকাতায় যে পীড়িত পুরুষ পতি পরিষদ রয়েছে, সে কথা জানা ছিল না আমিনের। শুক্রবার শহর ছাড়ার সময়ে আফশোস করে যান তা নিয়ে।
কলকাতার সেই পরিষদের প্রধান রাধিকানাথ মল্লিক অবশ্য জানিয়েছেন, আইনি পরামর্শ নিতে নির্যাতিত পুরুষদের ভিড় বাড়ছে তাঁদের কাছেও। কিন্তু তাঁরা কতটা আইনি সুবিধা পান, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে রাধিকাবাবুরই। তাঁর মন্তব্য, ‘‘স্বামী পেটানোর জন্য স্ত্রী-র জেল হয়েছে, এমন উদাহরণ শুনতে পান কি?’’