সন্ধ্যায় দমদমে গুলি, মৃত দোকানের কর্মী

পুলিশ জানায়, সন্ধ্যা সওয়া সাতটা থেকে সাড়ে সাতটার মধ্যে ঘটেছে ঘটনাটি। গোরাবাজারে হনুমান মন্দিরের কাছের রাস্তায় প্রতি দিনের মতোই তখন অনেক লোকের আনাগোনা। ব্যস্ত রাস্তার ধারে ডেকরেটর্স ও কেটারিং সংস্থার সেই দোকানে বসেছিলেন কর্মী গণেশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:০২
Share:

এই দোকানের সামনেই গুলি করা হয় গণেশ কুন্ডুকে (ইনসেটে)। শুক্রবার, গোরাবাজারে। নিজস্ব চিত্র

থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে জনবহুল রাস্তায় একটি দোকানের কর্মচারীকে গুলি করে পালাল দুষ্কৃতীরা। শুক্রবার ভরসন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে দমদমের গোরাবাজার এলাকায়। গুলিবিদ্ধ ওই ব্যক্তিকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। মৃতের নাম গণেশ কুন্ডু (৪৮)। ব্যস্ত সময়ে এমন ঘটায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। প্রশ্ন উঠেছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়েও।

Advertisement

পুলিশ জানায়, সন্ধ্যা সওয়া সাতটা থেকে সাড়ে সাতটার মধ্যে ঘটেছে ঘটনাটি। গোরাবাজারে হনুমান মন্দিরের কাছের রাস্তায় প্রতি দিনের মতোই তখন অনেক লোকের আনাগোনা। ব্যস্ত রাস্তার ধারে ডেকরেটর্স ও কেটারিং সংস্থার সেই দোকানে বসেছিলেন কর্মী গণেশ। আচমকা একটি বাইকে করে কয়েক জন এসে দাঁড়ায় দোকানের সামনে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি চালায় দু’জন। গুলি গিয়ে লাগে গণেশের মাথায়। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তিনি। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, লোকজন ছুটে আসার আগেই বাইক নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। পুলিশ জানায়, উল্টো দিকের একটি দোকানের সামনে লাগানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তাদের পোস্ট অফিস রোড দিয়ে পালাতে দেখা গিয়েছে। কারও মাথায় হেলমেট ছিল না। ওই তিন জনের খোঁজ চলছে।

স্থানীয়দের দাবি, এর পরে দোকানের সামনেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন গণেশ। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর শিবজি যাদবের দাবি, ‘‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ওই ব্যক্তি। তার অন্তত পনেরো মিনিট আগে ঘটে গিয়েছে ঘটনাটি। কেউ ওঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাননি। আমি পুলিশকে খবর দিই। পুলিশ এসে হাসপাতালে নিয়ে যায় ওঁকে।’’ এ দিনের ঘটনার পরে আর বি সি রোডে বিভূতি দে ভবনের পিছনের গলিতে সেই দোকানে গিয়ে দেখা গেল, শাটারের গায়ে বিন্দু বিন্দু রক্তের দাগ। রক্তের দাগ দোকানের সামনেও।

Advertisement

কিন্তু এত বড় ঘটনার খবর পেতে পুলিশের এত সময় লাগল কেন? বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশের ভূমিকা নিয়েই। এই অভিযোগ প্রসঙ্গে পুলিশের তরফে অবশ্য কোনও সদুত্তর মেলেনি। দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বরুণ নট্ট বলেন, ‘‘দমদমের পরিস্থিতি আগের তুলনায় শান্ত। সেখানে একটি নিরীহ ছেলেকে কী ভাবে মেরে পালিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা? এটা মানা যায় না। যত দ্রুত সম্ভব দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছি পুলিশের কাছে।’’

ওই দোকানের মালিক প্রণব সাহা জানান, তিনি অসুস্থ থাকায় গত সাত-আট বছর ধরে ব্যবসা দেখাশোনা করতেন গণেশই। এক মাস আগে কয়েক জন কিছু মালপত্র চেয়েছিলেন গণেশের কাছে। গণেশ রাজি না হওয়ায় তাঁকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় তখন। দমদম থানায় অভিযোগও জানানো হয়েছিল। তার জেরেই এই ঘটনা কি না, সে বিষয়ে জানা নেই বলেই দাবি প্রণবের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন